পার্বত্য চট্টগ্রামে উন্নয়ন ঘটাতে চাই: সুপ্রদীপ চাকমা

এম ডি হোসাইন
প্রকাশ: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:১১

উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা। ছবি: সাম্প্রতিক দেশকাল
পররাষ্ট্র ক্যাডারের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, সাবেক রাষ্ট্রদূত ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান সুপ্রদীপ চাকমা পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সম্প্রতি পার্বত্য অঞ্চলের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে সাম্প্রতিক দেশকালের পক্ষে কথা হয় এম ডি হোসাইনের।
ট্যুরিস্টদের সেবার দিকে আরো বেশি মনোনিবেশ করার প্রতি ইঙ্গিত দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের উদ্যোক্তাদের এখন প্রয়োজন ট্যুরিস্টদের সেবার দিকে আরো বেশি মনোনিবেশ করা। উদ্যোক্তাদের সহযোগিতায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি করে দেশের অর্থনীতির চাকাকে আরো গতিশীল করতে হবে।
তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নিজেদের ভাগ্য উন্নয়নে পরনির্ভরশীলতা ছেড়ে উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে হবে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ভাবনার বিষয়ে সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটাতে চাই। অন্তর্বর্তী সরকার দেশের উন্নয়ন চায়। মানুষের মনে শান্তি অব্যাহত রাখতে চায়। আগে নিজেকে জানতে হবে, নিজের দোষত্রুটি সম্পর্কে জেনে অন্যায় কাজগুলো বাদ দিয়ে সত্যের সন্ধানে নিজেকে সত্যপথে নিয়োজিত করতে হবে।
তিনি বলেন, এ দেশ গড়ার প্রত্যয় সবার। কে-কার বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেন, কে-কাকে দোষারোপ করলেন, কারো কান কথায় গুজবে পেছনে না ছুটে সঠিক পথে আপনাদের থাকতে হবে।
চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, বাঙালিসহ পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসীদের সরকারের সাহায্য-সহযোগিতা পাওয়ার বিষয়ে সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, সরকারের আর্থিক অনুদান ও অন্যান্য সহযোগিতা হলো একটি চলমান প্রক্রিয়া। চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, বাঙালিসহ যারা পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসী- সরকারের সাহায্য-সহযোগিতা পাওয়ার অধিকার তাদের সবারই আছে। তিনি বলেন, পর্যায়ক্রমে সবাইকে সরকারি অনুদান ও অন্যান্য সহযোগিতা দেওয়া হবে। তিনি বলেছেন, ‘আমরা সবাই একসঙ্গে মিলেমিশে বসবাস করতে চাই। কে মারমা, কে ত্রিপুরা, কে বম জাতি, তার বিভেদ না করে, সবাই মানুষ- এটাকে ধারণ করে সম্প্রীতি বজায় রেখে সহাবস্থানের মাধ্যমে বসবাস করতে হবে। আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো সাধারণ জনগণের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করা।
পার্বত্য অঞ্চলের নারীদের আত্মকর্মসংস্থানের বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের নারীদের আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেব। আমাদের এই সরকার দেশের সার্বিক উন্নয়ন চায়। আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটাতে চাই। আমরা কৃষিক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটাব।’
এই অঞ্চলের শিক্ষাসহ বিভিন্ন উন্নয়ন নিয়ে সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, ‘আমাদের সবাইকে বন্ধুত্বপূর্ণ, শান্তিপূর্ণ ও সহযোগিতামূলকভাবে সব ধরনের সমস্যার সমাধানে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আমরা পার্বত্য অঞ্চলে কোয়ালিটি এডুকেশন, লাইভলিহুড ডেভেলপমেন্ট, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পরিবেশ সহায়ক ও সুরক্ষামূলক বৃক্ষ ও বনায়ন অর্থাৎ ব্যালেন্স এনভায়রনমেন্ট এবং হারমোনিয়াস এপ্রোচ গড়ে তুলতে চাই।’
সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়ন অতীতে কাজের কোনো ধারাবাহিকতা ছিল না। অন্তর্বর্তী সরকার আসার সঙ্গে সঙ্গে ধারাবাহিকতা তৈরি হয়েছে।
তিনি বলেন, সম্প্রতি তিন পার্বত্য জেলায় নারী উন্নয়নসহ অর্থনৈতিক উন্নয়নে আর্থিক ও খাদ্যশস্য বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। বরাদ্দ দেওয়াই শেষ না, পর্যায়ক্রমে সরকারের পক্ষ থেকে আরো বরাদ্দ প্রদান করা হবে। সরকারি বরাদ্দ থেকে কেউ বঞ্চিত হবেন না।