কাঠগড়ায় কাঁদলেন তুরিন, দেখালেন নির্যাতনের চিহ্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১৬:৪৯

আদালতে তোলার সময় তুরিন আফরোজ। ছবি: সাম্প্রতিক দেশকাল
আদালতে জেরার সময় কাঠগড়ায় কেঁদেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ। এ সময় পুলিশ হেফাজতে তার ওপর নির্যাতন হওয়ার চিহ্ন আদালতকে দেখানো হয়।
বুধবার সকাল ১০টার দিকে তুরিন আফরোজকে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কাঠগড়ায় তোলা হয়। এ সময় তার মাথায় হেলমেট ও শরীরে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরানো ছিল। কাঠগড়ায় ওঠানোর পর তিনি পেছনে দাঁড়িয়ে কাঁদছিলেন।
এ সময় তাকে সান্ত্বনা দেন সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, পুলিশের সাবেক আইজিপি শহিদুল হক ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা তানভীর হাসান সৈকত।
আদালতে তুরিনের আইনজীবী বিচারকের উদ্দেশ্যে বলেন, তাকে নির্যাতন করা হয়েছে। তিনি কিছু কথা বলবেন।
পরে বিচারকের অনুমতি নিয়ে তুরিন বলেন, “আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। ন্যায়বিচার চাই। কোনোকালে আমার রাজনৈতিক পদ-পদবি ছিল না। আমি শুধু পেশাগত দায়িত্ব পালন করেছি।”
শারীরিকভাবে অসুস্থ এবং হাঁটতে পারছেন না বলে আদালতকে জানান তিনি।
পরে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, “যা বলছে সত্য না। মিথ্যা কথা বলে এ ঘটনা অন্যদিকে ঘোরানোর চেষ্টা করছে। আদালতে প্যানিক সৃষ্টি করছে “
পিপির কথার জবাবে পুলিশ হেফাজতে থাকার সময় নিজের পায়ে নির্যাতন হওয়ার চিহ্ন বিচারককে দেখান তুরিন।
শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুবুর রহমানের আদালত তাকে উত্তরা পশ্চিম থানার সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলায় গ্রেপ্তার দেখায়।
এরপরে পুলিশ প্রহরায় তুরিনকে হাজতখানায় নেওয়া হয়।
গত ৭ এপ্রিল রাতে উত্তরার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে তুরিন আফরোজকে গ্রেপ্তার করা হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আব্দুল জব্বার নামের এক শিক্ষার্থীকে হত্যাচেষ্টা মামলায় ৮ এপ্রিল তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
রিমান্ড শেষে ১২ এপ্রিল তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, আইনের শিক্ষক তুরিন একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সদস্য। তিনি প্রসিকিউটর হিসেবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াতে ইসলামির আমির গোলাম আযমের বিরুদ্ধে মামলাসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মামলা পরিচালনায় ছিলেন।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর উত্তরায় তুরিনের বাড়িতেও হামলা হয়। তার প্রায় আট মাস পর মামলার আসামি হিসেবে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।