Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

পানিতে কেঁচো দুর্গন্ধ পোকা, ওয়াসার দাবি পানি দূষিত নয়

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১৪:০১

পানিতে কেঁচো দুর্গন্ধ পোকা, ওয়াসার দাবি পানি দূষিত নয়

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা ওয়াসার সরবরাহ করা পানিতে উৎকট দুর্গন্ধ, ময়লা এবং ছোট ছোট পোকা পাওয়া যাচ্ছে। পানির রংও পালটে গেছে। প্রায় দুই মাস রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এ অবস্থা চললেও একরকম নির্বিকার দায়িত্বপ্রাপ্তরা। তাদের দাবি-ওয়াসার পানি দূষিত নয়। ময়লা, দুর্গন্ধ বা পোকা নিজ নিজ বাসার রিজার্ভারের কারণে হচ্ছে।

জানা গেছে, ঢাকা ওয়াসার সরবরাহ করা পানিতে বিভিন্ন ময়লা-আবর্জনা, উৎকট দুর্গন্ধ এবং পোকা পাওয়ায় অধিকাংশ নগরবাসী ঢাকা ওয়াসার পানি পান করা ছেড়ে দিয়েছেন। বাসাবাড়ির ধোয়ামোছা, রান্না এবং গোসলের কাজ সারছেন। বিশেষ করে মহানগরীর খিলগাঁও, বনশ্রী, কল্যাণপুর, শেওড়াপাড়া, মহাখালী, বাড্ডা, বাংলামোটর, তেজগাঁও, মালিবাগ, মগবাজার, মুগদা, যাত্রাবাড়ী, বাসাবো, জুরাইন এবং পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকার পানি পান করতে পারছেন না গ্রাহকরা।

ঢাকা ওয়াসা এসব অভিযোগের দায় নিচ্ছে না। সম্প্রতি ঢাকা ওয়াসা এক বিজ্ঞপ্তিতে আনুষ্ঠানিকভাবে দাবি করছে, গ্রাহকদের বাসাবাড়িতে ভূগর্ভস্থ ও ছাদে পানি সংরক্ষণের যে ট্যাংক আছে, সেখানেই সমস্যাটি হচ্ছে। এসব পরিষ্কার করলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে; তবে অনেক গ্রাহক ওয়াসার কথামতো পানির ট্যাংক পরিষ্কার করেও কোনো ফল পাননি বলে অভিযোগ করছেন। 

ঢাকা ওয়াসার এক প্রকৌশলী জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীর কল্যাণপুর, মগবাজার, মধুবাগ, আরকে মিশন রোড থেকে পানির অর্ধশত অভিযোগ পাওয়া যায়। প্রতিটি জায়গায় ওয়াসার লোক পাঠিয়ে চেক করে জানতে পারি সরবরাহ লাইনের পানিতে কোনো সমস্যা পাওয়া যায়নি। তাছাড়া পরিশোধিত পানিতে ক্লোরিন মিক্স করে সরবরাহ করা হয়। ফলে পানি বা লাইনে কোনো পোকা থাকলেও তা মারা যাওয়ার কথা। 

ঢাকা ওয়াসার ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টগুলোর পানি নিয়মিত পরীক্ষা করা হয়। কোথাও পানিতে সমস্যা পাওয়া যায়নি। ঢাকায় বর্তমানে প্রতিদিন ২৮৫ থেকে ২৯০ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। এর মধ্যে কয়েকটি স্থান থেকে অভিযোগ মিলেছে-এসবের অধিকাংশই বাড়িতে তাদের নিজস্ব ওয়াটার রিজার্ভার পরিষ্কার না করবার ফল। 

নাগরিক অধিকারকর্মী এবং পূর্ব জুরাইনের বাসিন্দা মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, ঢাকা জুরাইন এলাকায় নতুন পাইপলাইন করেছে। কিন্তু তাতেও পানির সমস্যা সমাধান হয়নি। গ্রীষ্মের সময় মানুষের পানির চাহিদা বেশি। অথচ দিনের বেশির ভাগ সময়ই পানি পাওয়া যায় না। দিনে ২ ঘণ্টার মতো লাইনে পানি পাওয়া যায়। সেই পানিও পানের অযোগ্য। পানিতে উৎকট দুর্গন্ধ, পয়ঃবর্জ্য এবং পোকামাকড়ও পাওয়া যাচ্ছে। এসব তথ্য কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও নির্বিকার রয়েছেন তারা।

যাত্রাবাড়ী এলাকার আরেক বাসিন্দা গণমাধ্যমে জানান, ঢাকা ওয়াসার সরবরাহ করা পানি খুবই নিম্নমানের। পানিতে উৎকট দুর্গন্ধ, ময়লা ও পোকামাকড় পাওয়া যাচ্ছে। এজন্য বাইরে থেকে পানি কিনে খাচ্ছেন তারা। তবে গোসল এবং অন্যান্য প্রয়োজনে ঢাকা ওয়াসার পানি ব্যবহার করলেও শরীরে চুলকানিসহ নানাবিধ সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এ বিষয়ে ঢাকা ওয়াসার কার্যকর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি।

পানিতে দুর্গন্ধ ও পোকামাকড় থাকায় এরই মধ্যে উদ্বেগ জানিয়েছেন এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। বলেছেন, ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ওয়াসার পানিতে কেঁচো বা এই ধরনের পোকামাকড় এবং ভয়াবহ ই-কোলাই ভাইরাস পাওয়ার পরও ওয়াসা নির্বিকার বিষয়টা খুবিই উদ্বেগজনক। প্রতিবছর পানি নিয়ে একই পরিস্থিতি বিরাজ করলেও এর কোনো সমাধান নেই। বছরের পর বছর কোনো সরকারই বিশুদ্ধ খাবার পানির নিশ্চয়তা তৈরি করতে পারেনি। ওয়াসার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে যেসব দুর্নীতিবাজ কেঁচো বা পোকামাকড় বসে আছে, তাদের অপসারণ ব্যতীত নগরবাসীকে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা সম্ভব নয়।




Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫