Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

ঈদে যানজট ঠেকাতে ১৪৯ ঝুঁকিপূর্ণ স্পটে থাকবে কড়া তদারকি

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ মে ২০২৫, ১৫:৪৪

ঈদে যানজট ঠেকাতে ১৪৯ ঝুঁকিপূর্ণ স্পটে থাকবে কড়া তদারকি

মহাসড়কে যানজট। ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষে দেশের সড়ক ও মহাসড়কে যানজট ঠেকাতে ১৪৯টি ঝুঁকিপূর্ণ স্পট চিহ্নিত করেছে হাইওয়ে ও জেলা পুলিশ। এসব স্থান ঘিরে নেয়া হয়েছে নানা প্রস্তুতি।

সোমবার দুপুরে বিদ্যুৎ ভবনের বিজয় হলে এক সমন্বয় সভায় যানজট নিরসনের এসব পরিকল্পনা ঘোষণা করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

সভায় জানানো হয়, ঈদযাত্রার ভিড়ে যে যে মহাসড়কে যানজট হয়, তার মধ্যে রয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কে ৪৯টি, ঢাকা-উত্তরবঙ্গ রুটে ৫৪টি, ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে ৬টি, ঢাকা-সিলেট সড়কে ৪২টি এবং ঢাকা-পাটুরিয়া-আরিচা রুটে ৮টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থান।

এই জায়গাগুলোর যানজট কমাতে চালকদের বিকল্প সড়ক ব্যবহারে উৎসাহিত করা হবে। একই সঙ্গে স্থানীয় সরকার ও পুলিশ বিভাগকে বলা হয়েছে—সড়কের পাশে থাকা অস্থায়ী দোকানগুলো সরিয়ে নিতে। জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে নসিমন, করিমন, ইজিবাইকসহ থ্রি-হুইলার চলাচল বন্ধ করতে হবে।

সায়েদাবাদ, মহাখালী, গাবতলী ও ফুলবাড়িয়া টার্মিনালসহ ঢাকার বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ডে শৃঙ্খলা বজায় রাখার নির্দেশনা এসেছে। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরকে বলা হয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কগুলোতে যেন ঈদের সাত দিন আগে সব ধরনের মেরামত ও খোঁড়াখুঁড়ির কাজ শেষ হয়। এই নির্দেশনা ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনকেও দেয়া হয়েছে।

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) আওতায় থাকা কর্ণফুলী, মেঘনা, গোমতী, পায়রা, রূপসা (খান জাহান আলী), চরসিন্দুর, শহীদ ময়েজউদ্দিন, আত্রাই, লালন শাহ সেতু এবং ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের টোল প্লাজাগুলো সার্বক্ষণিক চালু রাখতে হবে।

একইভাবে পদ্মা সেতু, যমুনা সেতু ও কর্ণফুলী টানেলেও ইটিসি বুথ চালুর কথা বলা হয়েছে। সম্ভব হলে ঈদের আগে ও পরে অগ্রিম টোল টিকিট বিক্রির ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি, পশুবাহী গাড়ির জন্য আলাদা লেনের ব্যবস্থা করতেও বলা হয়েছে।

সভায় সিদ্ধান্ত হয়, এমআরটি, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ওয়াসা, ডেসকো, ডেসা, ডিপিডিসি, তিতাস এবং টেলিফোন সংযোগের সব ধরনের খোঁড়াখুঁড়ির কাজ ঈদের এক সপ্তাহ আগে বন্ধ থাকবে। টিটিপাড়া আন্ডারপাসের সড়ক ২০ মে থেকে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। মেট্রোরেল এমআরটি-১ এর ইউটিলিটি স্থানান্তরের কাজও ঈদের সাত দিন আগে শেষ করতে হবে।

ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে আইসিডির লরি রাতের বেলায় ডিপোর ভেতরে রাখতে হবে। নারায়ণগঞ্জের জ্বালানি ডিপোগুলো রাতেও খোলা থাকবে, যাতে ট্যাংক-লরি ঈদের ছুটিতে চলাচল করতে পারে।

এবার গাবতলী বাস টার্মিনালে একটি নতুন প্রবেশপথ চালু হবে। মহাখালী থেকে বাসের সংখ্যা কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আবদুল্লাহপুর থেকে ধউর-আশুলিয়া সড়ক একমুখী করে দেওয়া হবে। বিআরটি লেন দিয়ে শুধু ঢাকার বাইরে যাওয়া যাবে। লেভেল ক্রসিংয়ের সিগন্যাল সময় কমানো, বিমানবন্দর ফুট ওভার ব্রিজ মেরামত এবং যাত্রাবাড়ী, ধোলাইপাড়, গাবতলীতে নতুন ফুট ওভার ব্রিজ নির্মাণের পরিকল্পনাও নেয়া হয়েছে।

রাজধানীর খোলা জায়গা থেকে আন্তঃজেলা বাস চালুর পরিকল্পনাও আছে। টঙ্গীর ইজতেমা মাঠ, ৩০০ ফুট সড়ক, মাদানী অ্যাভিনিউ এবং উত্তরা সেক্টর-১৬ এর বৌ বাজার থেকে দূরপাল্লার বাস ছাড়বে। ঈদের আগের তিন দিন ও পরের তিন দিন কাভার্ডভ্যান চলবে না। তবে গরুবাহী গাড়ি, নিত্যপণ্য, পচনশীল দ্রব্য, গার্মেন্টস, ওষুধ, সার ও জ্বালানিবাহী গাড়ি এই নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে।

সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলো ঈদের আগের সাত দিন, ঈদের দিন এবং ঈদের পরের পাঁচ দিন ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে। যাত্রীদের নির্বিঘ্ন যাত্রার জন্য মোবাইল কোর্ট পরিচালনার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দুর্ঘটনায় পড়া গাড়ি দ্রুত সরাতে রেকার প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে।

অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে কড়া বার্তা দেয়া হয়েছে পরিবহন মালিকদের। ঢাকা শহরের বড় বড় বাসস্ট্যান্ডে বিআরটিএ, পুলিশ, সিটি করপোরেশন এবং মালিক-শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধি নিয়ে মনিটরিং ও ভিজিলেন্স টিম গঠন করা হবে।

ফিটনেসবিহীন, ত্রুটিপূর্ণ ও পুরনো গাড়ি চলাচল ঠেকাতে ঈদের ১০ দিন আগে থেকেই ওয়ার্কশপে মোবাইল কোর্ট অভিযান চলবে। ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী ও মালামাল তোলা যাবে না—এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

সভায় বিআরটিসির বিশেষ বাস সার্ভিস ঢাকার বিভিন্ন ডিপো থেকে চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গাবতলী ও কল্যাণপুর থেকে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে, আর মতিঝিল ও ফুলবাড়িয়া থেকে বাস যাবে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে।

সমন্বয় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টার সহকারী শেখ মঈনুদ্দিন, সেতু সচিব আবদুর রউফ, রেলপথ সচিব ফাহিমুল হক এবং সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এহছানুল হক। এ ছাড়া সভায় আরও অংশ নেন তথ্য ও সম্প্রচার, নৌপরিবহন, স্বরাষ্ট্র, স্থানীয় সরকার, বিদ্যুৎ-জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা।





Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫