Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

সুন্দরবনের পাশে শিল্পে ‘না’, পুরনোগুলো নিয়ে সিদ্ধান্ত আসছে

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ মে ২০২৫, ২০:০৭

সুন্দরবনের পাশে শিল্পে ‘না’, পুরনোগুলো নিয়ে সিদ্ধান্ত আসছে

পাখির চোখে সুন্দরবন। ছবি: শাসছুল হক রিপন।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের আশপাশে শিল্প স্থাপনের হিড়িকের মধ্যে সরকার সেখানে নতুন শিল্প স্থাপনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এরই মধ্যে যেসব কারখানা স্থাপিত হয়েছে, সেগুলোর বিষয়েও যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে সরকার।

সোমবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, সুন্দরবনের চারপাশে ১০ কিলোমিটার এলাকায় নতুন কোনো শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়তে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, “বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০)-এর ধারা ৫ এর ক্ষমতাবলে সুন্দরবন সংরক্ষিত বনের চারপাশে ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ঘোষিত প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ)-এর মধ্যে নতুন কোনো শিল্পপ্রতিষ্ঠান বা প্রকল্প নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।”

গত ২১ এপ্রিল সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত জাতীয় পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন কমিটির নির্বাহী কমিটির ১৬তম সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

তবে ইসিএ ঘোষণার আওতায় ওই এলাকায় প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণ, পরিবেশগত মান উন্নয়ন, দূষণ নিয়ন্ত্রণ ও প্রশমন এবং টেকসই ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে পরিকল্পিত ও পরিবেশবান্ধব কার্যক্রম গ্রহণ করা যাবে।

সুন্দরবনকেন্দ্রিক ইসিএ এলাকায় পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় এ সিদ্ধান্তকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করা হয় প্রজ্ঞাপনে।

প্রতিষ্ঠিত কারখানাগুলোর ভবিষ্যৎ কী?

গত দেড় দশকে সুন্দরবনের আশপাশে নানা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে শিল্প কারখানা স্থাপন নিয়ে বিতর্ক ও সমালোচনা ছিল।

২০১৭ সালের ১২ জুলাই দৈনিক প্রথম আলোতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে পরিবেশ অধিদপ্তরের খুলনা কার্যালয়ের বরাতে জানানো হয়, সুন্দরবনের চারপাশের ১০ কিলোমিটার ইসিএ এলাকায় ১৮৬টি শিল্প ও প্রকল্পকে পরিবেশের প্রাথমিক (অবস্থানগত) ও চূড়ান্ত ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।

এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলার মোট ৯টি উপজেলায় রয়েছে ১৪০টি। এছাড়া মোংলা রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকায় (ইপিজেড) ২১টি, মোংলা বন্দর শিল্প অঞ্চলে ২০টি এবং বন্দরসংলগ্ন এলাকায় ৫টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান রয়েছে।

গত দেড় দশকে সুন্দরবনে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকায় শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠার পাশাপাশি বনের মধ্যেও হয়েছে স্থাপনা।

পরিবেশ অধিদপ্তরের এক সমীক্ষা থেকে জানা গেছে, ইসিএ এলাকায় ছাড়পত্রপ্রাপ্ত ১৮৬টি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের বাইরে আরও ১৬টি প্রতিষ্ঠান বর্তমানে ছাড়পত্র পেতে আবেদন করেছে।

আট বছর পর শিল্প প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কত, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো পরিসংখ্যান দেশকাল নিউজ ডটকম জানতে পারেনি।

এই প্রতিষ্ঠাগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত কী হবে—এই প্রশ্নে বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা দেশকাল নিউজ ডটকমকে বলেন, “একটা কমিটি হয়েছে, ওইগুলো নিয়ে। এরই মধ্যে স্থাপন করা প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

দীপঙ্করের পরামর্শে মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব সাবরিনা রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, “আমরা যাচাই-বাছাই করব সেগুলোর পরিবেশগত প্রভাব কী। সে জন্য একটি নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষক দল গঠন করা হবে, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা থাকবেন।”

এই কমিটি কারখানাগুলোর পরিবেশগত প্রভাব নির্ণয় করে তার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত দেবে বলে জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, “কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে আদালতের নিষেধাজ্ঞা আছে। সেগুলোর বিষয়েও কী করা যায়, তাও ভেবে দেখা হবে।”

এই বিশেষজ্ঞ কমিটি কবে গঠন হবে—এই প্রশ্নে সাবরিনা বলেন, “খুব শিগগির, এই মাসের মধ্যেই করে ফেলব। হয়ত ২০ তারিখের মধ্যে হয়ে যাবে।”

বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাদের বেছে নেওয়া হবে—এই প্রশ্নে তিনি বলেন, “কাদের নেব, সেটা নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে এই কমিটি পুরোপুরি নিরপেক্ষ হবে। এখানে পরিবেশ অধিদপ্তরের লোকও থাকবে না।”


 



Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫