Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

লিবিয়ায় হত্যাকাণ্ডের ১১ জন মাদারীপুরের

Icon

মাদারীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ৩০ মে ২০২০, ১৭:৫৮

লিবিয়ায় হত্যাকাণ্ডের ১১ জন মাদারীপুরের

ছবি: মাদারীপুর প্রতিনিধি

লিবিয়ায় গুলি করে ২৬ বাংলাদেশিকে হত্যার ঘটনায় মাদারীপুরের ১১ যুবকের নিহত ও ৩ যুবকের গুরুতর আহত হওয়ার খবর গ্রামের বাড়িতে আসার পর থেকে পরিবারগুলোতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

নিহতদের পরিবারগুলো সরকারের কাছে সন্তানের লাশ ও আহতরা সন্তানকে ফিরিয়ে আনার দাবি করেছে। পাশাপাশি দালালদের শাস্তিও দাবি করছে।

মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার আমগ্রাম ইউনিয়নের নরারকান্দি গ্রামের বাসিন্দা তরিত মোল্লা তার ছোট ছেলে আয়নাল মোল্লকে (২২) পরিবারের ভাগ্য ফিরিয়ে আনার জন্য জমি-জমা, সোনা গহনা সব বিক্রি করে ইতালি যাওয়ার জন্য জুলহাস সরদার নামের এক দালালের হাতে তুলে দেয় চার মাস আগে। কিন্তু দালালরা লিবিয়া নিয়ে আয়নালকে জিম্মি করে কয়েক দফায় সর্বমোট ১২ লাখ টাকা নেয়। কিন্তু ছেলেকে ইতালিতে পৌঁছে দিতে পারেনি।

আয়নালের বাবা তরিত মোল্লা বলেন, আমি এখন সর্বশান্ত হয়ে গেছি। জমি জমা, ঘরে সোনা গহনা যা ছিলো সব বিক্রি করে ছেলেকে জুলহাস দালালের মাধ্যমে বিদেশ পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু এখন আমার ছেলেও গেছে, সবই গেছে। আমরা এখন কী করবো।

শুধু তার বাবাই নয়, একই ভাবে বিলাপ করে কাঁদছে আয়নালের মা সেলিনা বেগম, বড় বোন ও বড় ভাই।

একই অবস্থা রাজৈর উপজেলার ইশিবপুরের আসাদুলের। পরিবারের ভাগ্যর চাকা ঘুরাতে পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রি করে ছোট ভাই আসাদুলকে ইতালি পাঠায় বড় ভাই শাহাদাত হোসেন। কিন্তু ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে গিয়ে পুরো পরিবারই এখন অন্ধকারে ডুবে গেছে। আসাদুলকে জিম্মি করে দফায় দফায় আমির দালালের মাধ্যমে ১০ লাখ টাকা পাঠিয়ে পরিবারটি এখন সর্বশান্ত।


নিহত আসাদুলের বড় ভাই শাহাদাত হোসেন বলেন, জমি জমা বলতে যা ছিল সব বিক্রি করেছি। এখন আর কিছু নাই। ভাইও নাই। আমির দাললাকে ১০ লাখ টাকা দিয়েছি। আরো কয়েক দফা খরচের জন্য কয়েক লাখ দেনা করে দিয়েছি। তবুও কিছুই হলো না। এখন কী করবো, কিছুই বুঝতে পারছি না। সব স্বপ্নই শেষ।

এদিকে ইশিবপুর ইউনিয়নের হুজুরিয়া গ্রামের নারায়ন দত্ত ও তার পরিবারের সদস্যরা বলেন, তারা খবর পাচ্ছেন তার ছেলে বাপ্পি দত্তর গায়ে গুলি লেগেছে, সে এখনো জীবিত। তাকেও সরকার দ্রুত যেন ফিরিয়ে এনে দেয়।

রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শওকত জাহান বলেন, শুক্রবার লিবিয়ায় স্বজনদের নিহতের খবর শুনে রাজৈর উপজেলার হোসেনপুরে জুলহাস সরদারের বাড়িতে হামলা চালাতে যায় স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ জুলহাসের করোনার উপসর্গের বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশ হেফাজতে সদর হাসপাতালের আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

শুধু আয়নাল ও আসাদুলই নয়। রাজৈর ও মাদারীপুর সদর উপজেলায় এখন পর্যন্ত ১১ জন নিহত এবং ৩ জন গুরুতর আহত খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। স্বজন ও স্থানীয়দের দাবি, নিহত ও আহতদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনা হোক এবং দালালের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হোক।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫