Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

সোনালী ব্যাংকের অর্থ আত্মসাৎ, ছেলেকে নির্দোষ দাবি মায়ের

Icon

বাগেরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২০, ১৭:১৭

সোনালী ব্যাংকের অর্থ আত্মসাৎ, ছেলেকে নির্দোষ দাবি মায়ের

সোনালী ব্যাংক বাগেরহাট শাখার অর্থ আত্মসাৎ মামলায় কারাগারে থাকা শেখ মাহাফুজুর রহমান বাবুকে নির্দোষ দাবি করেছেন তার মা মর্জিনা বেগম। সঠিক তদন্ত পূর্বক প্রকৃত দোষিদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তিনি।

বুধবার (৩ জুন) দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এসব দাবি করেন মুক্তিযোদ্ধা শেখ আনিছুর রহমানের স্ত্রী মর্জিনা বেগম।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, কারাগারে থাকা আমার সন্তান শেখ মাহাফুজুর রহমান বাবু সোনালী ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের সাথে জড়িত নয়। সে কোনভাবে এ ধরণের কাজ করতে পারে না। পরিস্থিতির স্বীকার হয়ে বিনা দোষে আমার সন্তান জেল খাটছে।

মর্জিনা বেগম আরো বলেন, শেখ মাহাফুজুর রহমান বাবু ২০১২ সালের ১ আগস্ট থেকে তারিখ হতে সোনালী ব্যাংকের বাগেরহাট শাখায় সিনিয়র অফিসার হিসেবে যোগদান করেন। এক বছর বুনিয়াদী প্রশিক্ষণ শেষে ২০১৩ সালে তার চাকুরি পার্মানেন্ট হয়। ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে তার চাকুরি জীবনের ৩ বছর পূর্তিতে তাকে সোনালী ব্যাংকের বাগেরহাট আঞ্চলিক কার্যালয়ে বদলী করা হয়। একই বছর ২৫ আগস্ট প্রধান কার্যালয় থেকে বাগেরহাট শাখায় অডিট দল আসে।

এ সময় তড়িঘড়ি করে তাকে আবার বাগেরহাট বদলী করা হয়। অডিট কর্মকর্তাদের চাহিদা অনুযায়ী সকল কাগজপত্র সরবরাহ করে মাহফুজ। কিন্তু ৩ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে আমাদের এক নিকট আত্মীয়ের অসুস্থতার খবর পেয়ে অফিসকে অবহিত করে ঢাকার উদ্দেশে গমন করে। ঢাকা যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুত্বর আহত হয়। পরবর্তীতে হাসপাতালে ভর্তি হয়। ই-মেইলের মাধ্যমে করে সোনালী ব্যাংকে ছুটির দরখাস্ত পাঠানো হয়।

পরের দিন ৪ সেপ্টেম্বর আমরা পত্রিকা দেখে জানতে পারি মাহফুজ সোনালী ব্যাংকের ৩ কোটি ৪৪ লক্ষ টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে। দুপুর ১২ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টার মধ্যে কিভাবে এত টাকা নিয়ে পালিয়ে গেলো আমরা বুঝতে পারলাম না। কারণ এর আগে ২০১২ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৪৪ বার এ জি এম অফিস, ১৪ বার জি এম অফিস, ৫ বার প্রধান কার্যালয়ে অডিট ও ৩ বার বাংলাদেশ ব্যাংকের অডিট দল অডিট করে। এসব অডিটে মাহফুজের বিরুদ্ধে কোন আপত্তি আসে নাই।

পরে ব্যাংক কর্মচারি জাহাঙ্গীর হোসেন খলিফা ও প্রাক্তন ম্যানেজার মুজিবর রহমান আমাকে সোনালী ব্যাংক রিজিওনাল অফিস বাগেরহাটে নিয়ে আসে। রিজিওনাল অফিসের এ জি এম আশুতোষ মন্ডল ও জি এম নেপাল চন্দ্র বলেন, ব্যাংকের যে সমস্যা হয়েছে তাতে আমরা সবাই কিছু টাকা জমা দিব, আপনিও কিছু টাকা জমা দেন। আমি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা তারা আমার ছেলেকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে ও জিডি না করতে নিষেধ করে। তারা আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক সাদা কাগজে আমার সাক্ষর নিয়ে রাখে।

পরে আমার ছেলে ব্যাংকে যোগদানের জন্য বারবার যাওয়া সত্ত্বেও তাকে যোগদানের সুযোগ দেয় নাই তৎকালীন এ জি এম আশুতোষ মন্ডল। আমি অফিসে গিয়ে আমার ছেলেকে যোগদানের কথা বলি। তখন এ জি এম আশুতোষ মন্ডল বলেন যে ঝামেলা মিটে যাচ্ছে আপনি এত চাপাচাপি কেন করছেন।

মাহাফুজকে যদি যোগদান করতে দেই তাহলে ৩জন ব্যবস্থাপককে গ্রেফতার করতে হয়। ১ অক্টোবর এ জি এম আশুতোষ মন্ডল বাদী হয়ে মাহাফুজসহ ৩৩ জনকে আসামি করে বাগেরহাট থানায় একটি মামলা দায়ের করে। পরে একই বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন মাহফুজসহ ১৫জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করে। পরবর্তীতে জমি বিক্রয়, আমার স্বামীর মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ও আত্মীয় স্বজনের নিকট থেকে ধার দেনা করে এ জি এম আশুতোষ মন্ডলের মিথ্যা ও ষড়যন্ত্র মূলক মামলা থেকে বাঁচতে আমি বিভিন্ন ৩৬ লক্ষ ৮১ হাজার টাকা জমা দিতে বাধ্য হয়েছি।

জীবনের ভয়ে দীর্ঘদিন পালিয়ে থাকার পরে ২০১৯ সালের ১০ মার্চ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন আমার ছেলে মাহফুজুর রহমান। দুদকের মামলায় আমার ছেলে এখনো জেলে রয়েছে। জেলে থেকে আমার সন্তান অসুস্থ হয়ে পড়েছে। আর মামলার অন্য ১৪ আসামি দিব্বি বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। নবির আলম খান পলাতক রয়েছেন। যদি অর্থ আত্মসাৎ হয়ে থাকে তাহলে বাগেরহাট শাখার তৎকালিন ব্যবস্থাপক মাহাতাব উদ্দিন, মুজিবর রহমান ও এজি এম আশুতোষ মন্ডল করেছেন। আমার সন্তান মাহফুজুরি রহমান শুধু ষড়যন্ত্রের স্বীকার। আমি সঠিক তদন্ত পূর্বক আমার সন্তানের মুক্তির দাবি করছি।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫