Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

যমুনায় পানি বৃদ্ধি, তলিয়ে গেছে পাকা ধান

Icon

জামালপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২০, ১৮:৩২

যমুনায় পানি বৃদ্ধি, তলিয়ে গেছে পাকা ধান

ছবি: জামালপুর প্রতিনিধি

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ, ইসলামপুর, মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ ও সরিষাবাড়ী উপজেলায় আগাম বন্যা দেখা দিয়েছে। কয়েকদিনে উজানের পাহাড়ী ঢুলে যমুনা নদীর পানি বাড়তে থাকায় বেশকিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে চলতি মওসুমের পাকা ধান, পাট, কাউন, সবজিসহ বিভিন্ন ফসল তলিয়ে গেছে।

দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরাবাদ, চিকাজানী, চুকাইবাড়ি ইউনিয়ন, ইসলামপুর উপজেলার কুলকান্দি, বেলগাছা, চিনাডুলি, নোয়ারপাড়া, সাপধরি ইউনিয়ন, মেলান্দহ উপজেলার শ্যামপুর, ঘোষেরপাড়া, ঝাউগড়া ইউনিয়ন, মাদারগঞ্জ উপজেলার গাবেরগ্রাম, বনচিথুলিয়া, চাঁদপুর, চর চাঁদপুর গ্রাম, বালিজুড়ি ইউনিয়নের তারতাপাড়া, শুভগাছা, চর শুভগাছা, মির্জাপুর, নাদাগারি, নাংলা এলাকা, সরিষাবাড়ী উপজেলার ভাটারা, পোগলদিঘা ও পিংনা ইউনিয়নের চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলগুলোর ফসলে পানি উঠেছে।

এদিকে অনেক স্থানের কৃষক শ্রমিক সঙ্কটে ধান কাটতে না পারায় পানিতে নষ্ট হচ্ছে পাকা ধান। এতে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন অনেক কৃষক।

ইসলামপুরের চিনাডুলি এলাকার কৃষক আনোয়ার হোসেন, আসলাম উদ্দিন, রহিম উদ্দিনসহ অনেকেই জানান, আগাম বন্যার পানিতে তাদের ক্ষেতের ধান তলিয়ে গেছে। শ্রমিক মিলছে না ফসল কেটে ঘরে তোলার মতো। এতে ক্ষেতের ধান ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে।

ইসলামপুরের চিকাজানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মমতাজ উদ্দিন জানান, নদীতে পানি আসায় এবার আগাম বন্যায় ক্ষতির মুখোমুখি হচ্ছেন কৃষকরা। যেভাবে যমুনার পানি বাড়ছে তাতে অব্যাহত থাকলে কৃষকদের বড় ধরনের সমস্যায় পড়তে হতে পারে।

এদিকে মেলান্দহ উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়নের ১০/১২টি গ্রামের ৬-৭টি নিম্নাঞ্চলের বোরো ধান বৃষ্টির পানির নিচে পড়ে আছে। মাস্টার বিল, বালুরচর মালিবাড়ি বিল, সাজুর বিল, হাকিমের বিল, বারেকের বিল, বাউলেরপাড়ার ডোবা এবং টুপকারচরের পশ্চিম পাড়ের ডোবার ফসল নষ্ট হচ্ছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ভাটিতে ব্রহ্মপুত্র নদের ৪নং চর, নবা খাল ও দশআনি নদীর একমাত্র সংযোগমুখে বসতবাড়ি, কয়েকটি অপরিকল্পিত পুকুরের পাড় নির্মাণের কারণে পানি প্রবাহের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। এ কারণে বৃষ্টির পানি জলাশয়গুলোতে আটকে ফসল তলিয়ে গেছে।

এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য বজলুল হক বকুলসহ কয়েকজন কৃষক জানান, পাল্টাপাল্টি করে পুকুর বসতবাড়ি করায় পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। ইতিপূর্বে পানি প্রবাহ চলমান ছিলো। এই বছরই এমন সমস্যা দেখা দিয়েছে। এই জলাশয়গুলো থেকে পানি প্রবাহের ব্যবস্থা না করলে অল্প বৃষ্টিতেই ফসল নষ্ট হতে থাকবে।

জানা গেছে, কৃষক ইসব আলীর ২০ বিঘা, সাদ উদ্দিনের ৫ বিঘা, হারুনুর রশিদের ২ একর জমি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে।

কৃষক হারুনুর রশিদ জানান, কিছু ধান কাটতে পারলেও বেশিরভাগ ধান নষ্ট হতে চলছে। তাই ক্ষেত ছেড়ে দিয়েছে। গরিব-দুঃখীরা ধান কুড়িয়ে নিয়ে গেছে।

শ্যামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাতুজ্জামান সুরুজ মিলিটারি জানান, ৬-৭টি জলাশয় মেলান্দহ-ইসলামপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত। প্রশাসনিকভাবে পানি প্রবাহের উদ্যোগ নেয়ার উপর গুরুত্ব দিলে নিচু জমির ফসলগুলো রক্ষা পাবে।


এ ব্যাপারে মেলান্দহের উপজেলা নির্বাহী অফিসার তামিম আল ইয়ামীন জানান, কৃষকের সমস্যার দ্রুত সমাধানে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল জানান, সরকারি প্রণোদনা ছাড়াও আনুসাঙ্গিক সহায়তা দিতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা করা হচ্ছে।

এদিকে জেলার সার্বিক পরিস্থিতির ব্যাপারে জামালপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আমিনুল ইসলাম জানান, যমুনার পানি ইতিমধ্যে কমতে শুরু করেছে। এ বন্যায় কৃষকের তেমন ক্ষতি হয়নি।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫