Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের এখনই সময়

Icon

মাহমুদ সালেহীন খান

প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২০, ১৫:২৩

জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের এখনই সময়

করোনাভাইরাসে ভয়ংকর ছোবলে পৃথিবীর মানুষেরা যখন আতংকিত, ঘরবন্দি তখন প্রকৃতি যেন তার উল্টো হিসাবে নিয়ে ব্যস্ত রয়েছে। সে বিন্দুমাত্র উদ্বিগ্ন নয়। নীরব, নির্জন, কোলাহল মুক্ত পরিবেশে মায়াময় প্রকৃতি নিজের সৌন্দর্য যেন একের পর এক তুলে ধরছে।

আমাদের দেশে গত আড়াই মাসের বেশি সময় ধরে বন্ধ রাখা হয়েছিলো অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কল কারখানা। শিল্প কারখানা, ইটের ভাটা। গণপরিবহন বন্ধ ছিলো, যানবাহন চলাচল সীমিত রাখা হয়ে ছিলো। কমেছে মানুষের আনাগোনা। তাতেই যেন প্রাণ ফিরে পেতে শুরু করেছে প্রকৃতি। কক্সবাজারের সমুদ্রের পানি ছিলো স্বচ্ছ নীল। খেলা করেছে ডলফিন। যা সত্যিই বিরল আমাদের দেশে।

বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় নতুন নতুন ফুল ফুটেছে। বায়ু দূষণ কম হয়েছে। প্রকৃতির ওপর আমরা যে অবিচার করে আসছি এতো দিন ধরে, তা কমে যাওয়ায় প্রকৃতি যেন নিজেকে মেলে ধরেছে।

ঠিক এরকম একটি সময় আজ ৫ জুন বিশ্ব জুড়ে পালিত হচ্ছে বিশ্ব পরিবেশ দিবস। ১৯৭৪ সাল থেকে জাতিসংঘের মানবিক পরিবেশ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচির (ইউএনইপি) উদ্যোগে প্রতি বছর ৫ জুন ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। এবারের দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে টাইম ফর নেচার। অর্থাৎ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের এখনই সময়।

পরিবেশবিদরা বলছেন,জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ না করাতে আমাদের পরিবেশের ভারসাম্যই শুধু নষ্ট হচ্ছিলো না,আমাদের জীবনকেও হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছিলাম। ঠিক এই মুহূর্তে করোনা বিশ্ব জুড়েই জীববৈচিত্র্য রক্ষা করছে। বিশ্ব পরিবেশ দিবসে ঢাকার বাতাসে যেমন কমেছে সিসার বিষ, তেমনি শব্দের দূষণও কমেছে। আমরা নির্মল পানি এবং বাতাস পাব। যা মানুষের সুস্থতার বড় অনুষঙ্গ হতে পারে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সভাপতি আবুনাসের খান বলেন, লকডাউনের কারণে যানবাহন কম, ইট ভাটা বন্ধ, কনস্ট্রাকশন কাজ বন্ধ থাকায় বায়ু দূষণের মাত্রা অনেক কমে গিয়ে ছিলো। এক সময় যেখানে মাত্রার দিক থেকে প্রথম স্থানে ছিলাম এখন তা বেশিরভাগ দিনই ১০০ এর নিচে থাকে। গত দুই দিনের বৃষ্টিতে সেটি আরো কমে গেছে। এখন আমরা স্বাস্থ্যকর অবস্থায় আছি। যা আমাদের পরিবেশের জন্য খুবই ভাল খবর।
 
তিনি আশংকা করে বলেছেন, তবে এখন আবার সব খুলতে শুরু করেছে। ফলে কী কী কারণে দূষণ হয় তা আরো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সরকারের উচিত এখন এসব বিষয়ে আরো কঠোর হওয়া। তাহলে আমরা সব সময় স্বাস্থ্যকর বায়ু পেতে পারি।

স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. কামরুজ্জামন মজুমদার বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে সবাই ঘরে থাকায় শব্দ দূষণ অনেক কমেছে। তবে আবার সব খুলতে শুরু করায় বাড়তে শুরু করেছে। এখনই সময় এই বিষয়ে সরকারের উদ্যোগ নেয়ার। প্রথম থেকে কঠোর হওয়া গেলে নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে বলে তিনি মনে করেন।

তিনি আরো বলেন, পৃথিবীতে শুধু আমরা মানুষেরাই বসবাস করি না। নানা রকম জীব জন্তু,, গাছপালা, পানির অস্তিত্ব রয়েছে। এদের প্রতি আমরা খুব অবিচার করেছি এতো দিন। যার কারণে ঘনঘন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে হচ্ছে আমাদের। এসব বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেতে আমাদের এখন সচেতন হতে হবে। আরো যত্নবান থাকতে হবে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫