
যশোরের চৌগাছায় নিখোঁজ হওয়ার তিনদিন পরে বিপুল হোসেন (৪০) নামের এক গরু ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (৫ জুন) সকালে বেড়গোবিন্দপুর বাওড়ের পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। বিপুল উপজেলার স্বরুপদাহ ইউনিয়নের বড় কাকুড়িয়া গ্রামের মৃত সামছুল হকের ছেলে।
পরকীয়া প্রেমের জের ধরে প্রেমিকার ছেলে সবুজ হোসেন ও মেয়ের জামাই রফিকুল ইসলাম উঠিয়ে নিয়ে হত্যা করেছে বলে পরিবারের অভিযোগ। আর পরকীয়া প্রেমিকা ফুলবানু (৩৫) একই গ্রামের মালেশিয়া প্রবাসী আবু সামার স্ত্রী।
ইউপি সদস্য শিমুল হোসেন ও নিহতের ভাই লিটন জানান, বিপুল কৃষিকাজের পাশাপাশি গরু কিনা বেচার কাজ করত। আবু সামার স্ত্রীর ফুলবানুর সাথে বিপুলের দীর্ঘদিন ধরেই পরকীয়ার সম্পর্ক ছিলো। বুধবার বেলা ১০টার দিকে নিহতের বাড়ি থেকে গরু কিনার কথা বলে মোটরসাইকেলে করে তুলে নিয়ে যায় ফুলবানুর জামাই একই গ্রামের রিজাউল ইসলামের ছেলে রফিকুল ইসলাম।
এর পরে বিপুলের খোঁজ না পেয়ে রফিকুলের নিকট বিপুলের পরিবারের লোকজন জানতে চাইলে বলে গরু কিনতে বাজারে গেছে, হয়ত চৌগাছায় আছে।
বিপুলকে না পেয়ে বৃহস্পতিবার সকালে ইউপি সদস্য শিমুল হোসেনকে সাথে নিয়ে চৌগাছা থানায় গিয়ে নিহতের ভাই লিটন বাদী হয়ে পরকীয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে রফিকুলের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ করেন। এবং বিষয়টি থানায় ডায়েরি করার জন্য অনুরোদও করেন।
সে সময়ে থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত চৌগাছা থানার ওসি (তদন্ত) এসএম এনামুল হক তখনই কারো বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ না দিয়ে আরো খুঁজাখুঁজি করার জন্য তাদের পরামর্শ দেন। একইসাথে বৃহস্পতিবার দুপুরেই ওসি (তদন্ত) এসএম এনামুল হক ওই গ্রামে গিয়ে তদন্ত করে আসেন। তবে তদন্ত করে আসলেও অদৃশ্য কারণে থানায় জিডি এন্ট্রি করেননি তিনি।
শুক্রবার ভোররাতে একটি অজ্ঞাত মোবাইল নম্বর থেকে নিহতের শ্বশুর আমজাদ হোসেনের মোবাইলে কল দিয়ে বলা হয় তোমার জামাইয়ের লাশ বেড়গোবিন্দপুর বাওড়ের পাশে রাস্তায় বস্তাবন্দি পড়ে রয়েছে। শুক্রবার খুব সকালেই পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে বস্তাবন্দি লাশ দেখতে পেয়ে চৌগাছা থানা পুলিশকে সংবাদ দেয়। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করে।
চৌগাছা থানার ওসি (তদন্ত) এসএম এনামুল হক লাশ উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন। নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে আমি নিজেই তাৎক্ষণিকভাবে গ্রামে গিয়ে খোঁজ খবর নিয়েছি।
তবে ইউপি সদস্য শিমুল হোসেন বলেন, পরকীয়ার ঘটনা বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে রফিকুলের নাম উল্লেখ করে চৌগাছা থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়। সে সময় আমরা ৪/৫জন থানায় উপস্থিত ছিলাম।
চৌগাছা থানার ওসি রিফাত খান রাজীব লাশ উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, কিভাবে হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে ময়নাতদন্তের পর বলা যাবে। এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন।