
ছবি: লালমনিরহাট প্রতিনিধি
লালমনিরহাটে তিস্তা নদীর ভাঙন দিন দিন তীব্র আকার ধারণ করছে। প্রতিদিনই নদীগর্ভে বিলীন যাচ্ছে আবাদী জমি ও বসতভিটা। নির্ঘুম রাত কাটছে তিস্তা পাড়ের মানুষের।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার চরগোকুন্ডা, রাজপুর, খুনিয়াগাছ, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা, গোবর্ধন, চন্ডিমারী, বালাপাড়াসহ ১৫টি গ্রামে তিস্তা নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে।
ইতোমধ্যে সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের চর গোকুন্ডা গ্রামের শতাধিক পরিবারের বসতভিটা, কয়েকশ বিঘা আবাদি জমি, বেশ কয়েকটি বাঁশঝাড়, ফলের বাগান ও স্থাপনা নদী গর্ভে চলে গেছে।
ভাঙন ভয়ে আতংকিত হয়ে অনেক পরিবারের লোকজন তাদের ঘর-বাড়ি সরিয়ে ফেলছেন। কেটে ফেলছেন বসতভিটায় লাগানো গাছপালা। কোনভাবেই ঠেকানো যাচ্ছেনা নদী ভাঙন। ভাঙন কবলিত লোকজন তাদের সহায় সম্বল হারিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
প্রিয় বসতভিটা নদী গর্ভে চলে যাওয়ায় কাঁদতে কাঁদতে অনেকে হয়েছেন বাকরুদ্ধ। ভাঙনের শিকার পরিবারের লোকজনের মধ্যে দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট।
ভাঙনকবলিত এলাকার বাসিন্দা শাহিন মিয়া, হযরত আলী, সোহরাব হোসেন জানান, অতিবৃষ্টির ফলে তিস্তা নদীতে ভাঙন বেড়েছে। অব্যাহত ভাঙনে গত এক সপ্তাহে শতাধিক বিঘা ফসলী জমি, বাঁশ ঝাড় নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। অনেকে বেশ কয়েকবার বাড়িঘর সরিয়ে নিয়েছেন।
এতে তারা আর্থিক ক্ষতির কবলে পড়েছেন। অতর্কিত ভাঙ্গনের কারণে এসব গ্রামের লোকজন কাটাচ্ছেন নির্ঘুম রাত। অর্থাভাবে অনেকের দিন কাটছে অর্ধাহারে- অনাহারে। নদীতে বাঁধ দেয়া না হলে অতি দ্রুত চর গোকুন্ডা গ্রামটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নদী ভাঙনে মানুষজন সর্বস্বান্ত হয়ে গেছে। একদিকে করোনা পরিস্থিতির কারণে তিস্তা চরের খেটে খাওয়া মানুষগুলো হয়েছেন কর্মহীন, অপরদিকে নদী ভাঙনে বাড়ি ঘর অন্যত্রে সরিয়ে এখন হয়েছেন নিঃস্ব। অনেকের দিন কাটছে অনাহারে, অর্ধাহারে।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোড উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী আব্দুল কাদের জানান, জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন রোধের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। বিশেষজ্ঞ দল ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিস্তা পাড়ের মানুষ অবিলম্বে ভাঙনের কবল থেকে ফসলি জমি, ঘরবাড়ীসহ সকল স্থাপনা রক্ষায় জরুরি ভিত্তি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।