
সুনামগঞ্জের ছাতকে হু হু করে বেড়েই চলছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। শুক্রবার পর্যন্ত সুনামগঞ্জ জেলার মধ্যে সর্বাধিক করোনা রোগী সনাক্ত হয়েছে এ উপজেলায়। জেলায় এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যে তিনজন রোগী মারা গেছেন, তাদের বাড়িও ছাতকে।
ফলে এ উপজেলাকে জেলার মধ্যে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা বা রেড জোন বিবেচনা করে লকডাউন ঘোষণা করে ব্যবসা-বাণিজ্য ও যান চলাচলে বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান শুরু হয়েছে। থানা পুলিশও দিন-রাত মাঠে কাজ করছেন।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ গেলাম কবির।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ছাতক উপজেলায় উদ্বেগজনক হারে করোনা রোগী শনাক্ত হচ্ছে। যা মোটেও ভালো লক্ষণ নয়। এ কারণে উপজেলাকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের পরে ফার্মেসী ছাড়া সকল দোকান-পাঠ বন্ধ এবং মাস্ক ব্যবহার করাকে বাধ্যতামূলক করতে শহর এলাকাসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জরিমানা করা হচ্ছে।
কৈতক ২০ শয্যা হাসপাতালের আরএমও ডা. মোজাহারুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রাপ্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দুজন চিকিৎসকসহ মোট ১১৮জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৮জন। আর একজন মুক্তিযোদ্ধাসহ মৃত্যুবরণ করেছেন ৩ জন।
বৃহস্পতিবার রাতে শাবিপ্রবির পিসিআর ল্যাবে নমুনা পরীক্ষায় আরো ৫জনের করোনা পজিটিভ সনাক্ত হয়। এর আগেরদিন বুধবার একই ল্যাবে করোনা সনাক্ত হয় এক ইউপি চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রীসহ ১৯ জনের।
উপজেলায় সচেতন মহল জানান, করোনা ভয়ঙ্কর সংক্রমণ বৃদ্ধির পর এ উপজেলার সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করেই স্বাভাবিক জীবনযাত্রা অব্যাহত রেখেছেন। প্রতিদিনই নতুন রোগী শনাক্ত হলেও জনসাধারণের মধ্যে তেমন কোনো সচেতনতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। স্বাস্থ্যবিধি না মেনে অবাধে চলাচল করার কারণেই এখানে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন হু হু করে বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মনে করছে অভিজ্ঞ মহল। উদ্ভূত এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মাঠে নেমেছেন
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ গেলাম কবির, সুনামগঞ্জ জেলা সদর ও ছাতক উপজেলায় সবচেয়ে বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। মাস্ক ব্যবহার করাকে বাধ্যতামূলক করতে ইতিমধ্যেই পৌর শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বেশ কয়েকজনকে জরিমানাও করা হয়েছে। ফার্মেসী ছাড়া নির্ধারিত সময়ের পরে সকল ধরণের দোকান-পাঠ বন্ধ রাখতে বলা হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।
এছাড়া হাইওয়ে ব্যতীত সকল প্রকার যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। জরুরি যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রেও শর্তাবলী দেয়া হয়েছে উপজেলা প্রশাসন থেকে। জরুরি চলাচলের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ছোট যানবাহনগুলোতে নিয়মিত স্প্রে করতে হবে জীবাণুনাশক। ৫জ নের পরিবর্তে যাত্রী বহন করতে হবে ৩ জন। প্রত্যেকের মুখে বাধ্যতামূলক থাকতে হবে মাস্ক।