-28-5ef96498177d1.jpg)
মুজিবপাগল তোরাব আলী (৪০)। নারায়নগঞ্জের একটি বেসরকারি কোম্পানিতে কর্মরত আছেন। লকডাউনে বাড়িতে এসে বানিয়েছেন ১৮ ফিট দৈর্ঘ্যের নৌকাসদৃশ্য বিশাল ঘুড়ি। জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার মাটিয়াজানি ও ফুলদহ গ্রামের আকাশে ঘুড়িটি উড়ছে।
আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধুকে ভালোবেসে বানানো তাঁর ঘুড়িটিকে স্থানীয়রা মুজিবপাগল তোরাব আলীর ‘নৌকাঘুড়ি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সরিষাবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে করোনার প্রভাবে লকডাউনের জন্য গ্রামের শিশু ও যুবকরা বাড়িতে সময় কাটানোর ফাঁকে ঘুড়ি উৎসবে মেতে উঠেছে। এটা দেখে উপজেলার মহাদান ইউনিয়নের মাটিয়াজানি গ্রামের মৃত কাশেম কবিরাজের ছেলে তোরাব আলী ঘুড়ি নিয়ে ভিন্নকিছু ভাবতে থাকেন। সে ভাবনা থেকে নিজ উদ্যোগে নৌকাসদৃশ্য ঘুড়ি বানানোর পরিকল্পনা করেন। টানা ১০ দিন পরিশ্রম করে শনিবার বিকেলে ঘুড়িটি বানানো শেষ করেন।
ঘুড়িটি বানাতে বাঁশ-বেত, রঙিন পলিথিন, সুই-সুতা ও ঘামের ব্যবহার করা হয়েছে। নৌকায় ছই, বৈঠা ও পাল সংযুক্ত করা হয়েছে। ১৮ ফিট দৈর্ঘ্যরে এ ঘুড়িটি বানানো শুরু করলে গ্রামের উৎসাহী কিছু যুবক তার এ কাজে যুক্ত হন। শনিবার ও রবিবার বিকেলে উপজেলার মহাদান ইউনিয়নের মাটিয়াজানি ও ভাটারা ইউনিয়নের ফুলদহ গ্রামের আকাশে এটি উড়ানো হয়। এ সময় গ্রামের মানুষ ঘুড়িটি একনজর দেখার জন্য ভিড় জমায়।
ঘুড়িটির প্রস্তুতকারী আওয়ামী লীগ কর্মী তোরাব আলী জানান, দলে তাঁর কোনো পদ-পদবী না থাকলেও আওয়ামী লীগ, বঙ্গবন্ধু, তাঁর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মনেপ্রাণে ভালোবাসেন। জীবনের শুরু থেকেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ তাঁকে অনুপ্রাণিত করে। তাই গ্রামের যুবসমাজের আনন্দের মধ্যেও মুজিব-আদর্শ ছড়িয়ে দিতে তিনি ‘নৌকাঘুড়ি’ বানানোর পরিকল্পনা করেন।
তাঁর এ উদ্যোগ বেশ সাড়া জাগিয়েছে। আকাশে ওড়ানোর পর কয়েক গ্রামের মানুষ ঘুড়িটি দেখতে ভিড় জমাচ্ছে। আগামী ৩ জুলাই সরিষাবাড়ী ঘুড়ি উৎসবে এটি ওড়ানো হবে বলে তোরাব আলী জানান।
বারইপটল গ্রামের ছাত্রলীগ কর্মী সোলায়মান প্রামাণিক জানান, নৌকাঘুড়ি’ বানানোর কথা শুনে আমরা উদ্বুদ্ধ হই। তাঁর এ কাজে কয়েকজন ছাত্র-যুবক সহযোগিতা করি। এই মহতি উদ্যোগটি নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করছে।
উপজেলা যুবলীগের সভাপতি একেএম আশরাফুল ইসলাম বলেন, নৌকা আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার প্রতীক। এ প্রতীক যুবসমাজকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে জীবন ধারণ করতে শেখায়। তোরাব আলীর ‘নৌকাঘুড়ি’ দেখতে মানুষের ভিড়ই তার প্রমাণ।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম বিদ্যুৎ জানান, বাঙালির প্রাচীন ঐতিহ্য ঘুড়ি উৎসব হারাতে বসেছিল। লকডাউনে বসে থাকা যুবকদের মধ্যে নতুনভাবে এটি ফিরে এসেছে। উৎসবকে ‘বঙ্গবন্ধুপ্রীতি’তে পরিণত করতে ‘নৌকাঘুড়ি’ বানানোর কথা শুনে কয়েকজনকে যুবককে সহযোগিতার জন্য উদ্বুদ্ধ করি।