করোনা চিকিৎসায় ভেন্টিলেটর কাজে লাগে না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২০, ১৯:২৯

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। ফাইল ছবি
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, দেশের হাসপাতালগুলোতে মোট ১৪ হাজার বেড শুধু করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তার মধ্যে ৪০ শতাংশ বেড এখনো খালি রয়েছে।
করোনা চিকিৎসায় ভেন্টিলেটর কাজে লাগে না উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, দেশে ৪০০ ডেন্টিলেটর আছে। কাজে লাগে মাত্র ৫০টি। সাড়ে ৩০০ পড়ে থাকে। অর্থাৎ ভেন্টিলেটর কাজে লাগছে না। প্রয়োজন নেই। এছাড়া দেখা গেছে, যারাই ভেন্টিলেশনে গেছেন, তারাই মারা গেছেন।
আজ মঙ্গলবার (৩০ জুন) জাতীয় সংসদে বাজেট অধিবেশনের সমাপনী সেশনে অংশ নিয়ে এ কথা বলেন তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এমন নয় যে দেশের কোনো হাসপাতালে রোগীরা চিকিৎসা পাচ্ছেন না। আজ পর্যন্ত ৬০ শতাংশ বেড পূর্ণ হয়েছে এবং এখনো ৪০ শতাংশ বেড খালি রয়েছে। করোনা রোগীদের জন্য আমরা ১৪ হাজার বেড নির্দিষ্ট করে দিয়েছি। মানুষ যদি সচেতন হয়, মাস্ক পরে, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখে, তাহলে সংক্রমণ কমে যাবে।
তিনি বলেন, আমাদের শুরুতে একটি টেস্ট ল্যাব ছিল। দেড় মাসে আমরা ৬৮টি ল্যাব করেছি। কোটি কোটি মানুষকে তো আর টেস্ট করতে পারব না। কভিড-১৯ রোগীদের জন্য উচ্চ-প্রবাহের অক্সিজেন লাইন প্রয়োজন। সরকার এক হাজার উচ্চ-প্রবাহের অক্সিজেন সিস্টেম ও ১০ হাজার নতুন অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নিয়েছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের হোটেল ও খাদ্য ব্যয় সংক্রান্ত অনিয়মের অভিযোগ সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, অভিযোগগুলো সঠিক নয়, কারণ ৫০টি হোটেলে প্রায় ৩ হাজার ৭০০ লোক একমাস অবস্থান করেছেন। তাদের জন্য ৫০০ টাকা খাদ্য ব্যয় হিসাবে দেয়া হয়েছিল। দিনে তিনবার খাবারের জন্য- সকাল দুপুর ও রাতের খাবারের জন্য। আর প্রতিটি রুমের ভাড়া প্রতিদিনের ভাড়া ছিল এক হাজার ১০০ টাকা। সংসদে যে হিসাবে দিয়ে অভিযোগ করা হয়েছে, এটা সঠিক না।
জাহিদ মালেক বলেন, ডাক্তার-নার্সরা প্রথমে আক্রান্ত হয়েছেন, কারণ তারা ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) কীভাবে পরতে হয় জানতেন না। আমরা তাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি। পেশেন্ট গাইড, লিফলেট, ব্যানার করেছি। প্রতিদিন প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। মানুষকে করোনা সম্পর্কে সচেতন করেছি। এখন পিপিই’র মান সম্পর্কে কোনো অভিযোগ নেই। সরকার ইতোমধ্যে বিভিন্ন হাসপাতালে ৩০ লাখ পিপিই পাঠিয়েছে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, এখন প্রতিটি বেসরকারি হাসপাতালে (করোনায় আক্রান্তদের) চিকিৎসা করা হচ্ছে, যদিও তাদের সার্ভিস চার্জ কিছুটা বেশি। তবে সরকার বেসরকারি মেডিকেল হাসপাতালের সার্ভিস চার্জ ঠিক করে দেবে।
এদিকে করোনা মহামারি মোকাবিলায় অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম-দুর্নীতি ও সমন্বয়হীনতার অভিযোগ তুলে সংসদে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের অপসারণ দাবি করেছেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টি (জাপা) ও বিএনপির সংসদ সদস্যরা। তাকে এই মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে সাবেক কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী করার দাবিও উঠেছে।