প্রতীকী ছবি।
করোনার মধ্যেও গত জুন মাসে দেশে ১০১ জন নারী ও কন্যাশিশু ধর্ষণের ঘটনাসহ মোট ৩০৮ জন নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এমনই একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের লিগ্যাল এইড উপ-পরিষদ।
উপপরিষদে সংরক্ষিত ১৪টি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে লিখিত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। করোনাকালে নারী নির্যাতনের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মনে করছে মহিলা পরিষদ।
গতকাল বুধবার (১জুলাই) পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. মালেকা বানু স্বাক্ষরিত উক্ত প্রতিবেদনে দেখা যায় ধর্ষণের শিকার ১০১ জনের মধ্যে ৬৯ জন ধর্ষণ ও ২৫ জন গণধর্ষণের শিকার হয়েছে। এসময় ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ৭ জনকে। এছাড়া ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে ১৫ জনকে।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, উক্ত একমাসে শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছে ৩ জন। যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে ৬ জন। একই সময় এসিডদগ্ধের শিকার হয়েছে ১ জন। অগ্নিদগ্ধের শিকার হয়েছে ৪ জন, তন্মধ্য অগ্নিদগ্ধের কারণে মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের।
গত এক মাসে অপহরণের শিকার হয়েছে মোট ১৪ জন। এসময়ে পতিতালয়ে বিক্রি করা হয় ১জনকে। একই সময় বিভিন্ন কারণে ৬২ জন নারী ও কন্যাশিশুকে হত্যা করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৫ জনকে যৌতুকের কারণে হত্যা করা হয়েছে বলে জানা যায় প্রতিবেদন থেকে।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, এসময় গৃহপরিচারিকা হত্যা করা হয়েছে ২ জন এবং ১ জন গৃহপরিচারিকার আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়। গত মাসে যৌতুকের কারণে নির্যাতন করা হয়েছে ৭ জন নারীকে। একই সময় শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে ১৯ জন নারী ও কন্যাশিশু এবং উত্ত্যক্ত করা হয় ৫ জনকে।
১৭ জন নারী আত্মহত্যা করেছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত এক মাসে বিভিন্ন নির্যাতনের কারণে ১৭ জন নারী আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে। ৩৪ জন নারী ও কন্যা শিশুর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। এসময় ফতোয়ার শিকার হয়েছে ১ জন। বাল্যবিবাহ হয়েছে ১ জন কন্যা শিশুর। এছাড়া নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছে ২ জন নারী ও শিশু।
নারী ও কন্যা শিশুর প্রতি সহিংসতার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। সেই সাথে ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণসহ দ্রুত গ্রেফতার এবং সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানায়।