Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

মহামারির মধ্যেই ২৫ হাজার পাটকল শ্রমিক বেকার

Icon

লোকমান তাজ

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২০, ১৫:৫৪

মহামারির মধ্যেই ২৫ হাজার পাটকল শ্রমিক বেকার

বাংলাদেশে পাট উৎপাদনের ইতিহাস ৩০০ বছরের। স্বাধীনতার পরের বছর ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশন (বিজেএমসি) প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। প্রতিষ্ঠাকালে বিজেএমসির আওতায় ৭০টিরও বেশি পাটকল ছিলো। কিন্তু ধারাবাহিক লোকসানের কারণে মিলসংখ্যা কমতে কমতে ২৫-এ গিয়ে ঠেকে।  প্রতিষ্ঠার ৪৮ বছরের মধ্যে ৪৪ বছরই লোকসানে ছিলো বিজেএমসি। বর্তমানে সংস্থাটির পুঞ্জীভূত লোকসানের পরিমাণ ১০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। যদিও বেসরকারি খাতের অনেক পাটকল ঠিকই মুনাফা করতে পারছে। 

একসময় গর্ব করে পাটকে বলা হতো ‘সোনালি আঁশ’। সময়ের বিবর্তনে গুরুত্ব হারাল পাট। ফলে লোকসানে লোকসানে ক্লান্ত হয়ে অবশেষে দেশের সকল রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। অব্যাহত লোকসানের কথা তুলে ধরে ২৫টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধ করে প্রায় পঁচিশ হাজার স্থায়ী শ্রমিককে গোল্ডেন হ্যান্ডশেক কর্মসূচির মাধ্যমে অবসরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে। 

সরকার বলেছে, অনেক আগের সিদ্ধান্ত এখন বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। গোল্ডেন হ্যান্ডশেক দিয়ে অবসরে পাঠানোর সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শ্রমিকরা এক হয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল রক্ষা শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদ গঠন করে আন্দোলনেও নামে।

পাটকল বন্ধের বিষয়ে শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান গণমাধ্যমকে বলেন, পাটকলগুলো বছরের পর বছর ধরে লোকসানে থাকায় এখন এগুলো বন্ধ করা ছাড়া সরকারের বিকল্প নেই। এখন শ্রমিকরা তাদের পাওনা ঠিকমত পাচ্ছেন কিনা- সেটা নিশ্চিত করা উচিত। রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো লোকসান দিতে দিতে এমন জায়গায় এসে পৌঁছায়ছে যে, এখন এটা সামনে নাকি পিছনের দিকে যাবে, এটা বোঝার মতো শক্তি আমরা হারায় ফেলছি।

তিনি বলেন, এখন আর আগে-পরের বিষয় নয়। এখন গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের যে কথা বলা হয়েছে,  একজন শ্রমিক ১২ লক্ষ ৪৬ হাজার টাকা পাবে। আর সর্বোচ্চ ৫৪ লাখ টাকাও পাবে। একসাথেই তা দেয়া হবে। সুতরাং এখন আর তখন বড় বিষয় নয়, শ্রমিকরা যাতে না ঠকে, সেটাই হচ্ছে বড় কথা।

করোনাভাইরাস দুর্যোগের মাঝে সরকার কেন রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের শ্রমিকদের অবসরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে-শ্রমিকরা এই প্রশ্ন তুলেছেন। শ্রমিক নেতাদের বক্তব্য হচ্ছে, বিগত বিএনপি সরকারের সময়ে খুলনার খালিসপুরে রাষ্ট্রায়ত্ত পাঁচটি পাটকল বন্ধ করা হয়েছিল। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সেগুলোও চালু করে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো লাভজনক করার জন্য সংস্কার কার্যক্রমও নেয়া হয়েছিল। তারা মনে করেন, সেই কার্যক্রমও গাফিলতি এবং অবহেলার ফাঁদে পড়েছিল।

রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল রক্ষা শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক শাহানা শারমিন বলেন, সরকারের অব্যবস্থাপনা এবং আধুনিকায়ন না করার কারণে পাটকলগুলো লোকসানেই থাকছে। কিন্তু দায়ভার শ্রমিকদের ওপর চাপিয়ে তাদেরকেই বিদায় করা হচ্ছে বলে তারা মনে করেন।


শাহানা শারমিন বলেন, ২০১৬ সালেও রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোর খরচ এবং লাভ সমান সমান ছিলো। লোকসান ছিলো না। ২০১৬ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত যা করা হচ্ছে, তা হচ্ছে, পাট কেনা হচ্ছে না সময়মতো। তারপর যে পণ্য তৈরি হচ্ছে, তা সরকারের করপোরেশনের খামখেয়ালির কারণে বাজার পাচ্ছে না। পাটের মৌসুমেও একটা দাম ঠিক করে দেয়া হয়। ফলে ভাল পাট পাওয়া যায় না। খামখেয়ালি এবং অব্যবস্থাপনার কারণে তিন বছর ধরে লোকসান হচ্ছে। এর কারণ কিন্তু খতিয়ে দেখা হয় না।

খুলনা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম এবং ঢাকা-এই চারটি বিভাগে ২৫টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে প্রায় পঁচিশ হাজার শ্রমিক রয়েছেন। গত দুই বছর ধরে তাদের বেতন ভাতাও আদায় করতে হয় আন্দোলন করে। এখন তাদের অবসর নেয়ার প্রশ্ন এসেছে। তারা এই করোনাভাইরাসের দুর্যোগের মাঝে চাকরি থেকে বিদায় নেয়ার বিষয়টি মানতে পারছেন না।

তবে পাটকলের লোকসানের ক্ষেত্রে ব্যর্থতা এবং অব্যবস্থাপনার অভিযোগ মানতে রাজি নন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী। রাষ্ট্রায়ত্ব সব পাটকল বেসরকারি অংশীদারিত্বে ছেড়ে দেয়ার চিন্তা সরকারের নীতির বড় ধরণের পরিবর্তন। মন্ত্রী বলেন, শত শত কোটি টাকার লোকসানের কারণে এই সিদ্ধান্ত অনেক আগেই নেয়া হয়েছে। এর সাথে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিকে মিলিয়ে দেখা ঠিক হবে না। এত লোকসান। এরপরে ব্যয়ের ক্ষেত্রে তাদের বেতনই ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত দাঁড়িয়ে যায়। আর অন্য সমস্যা তো আছেই।

পাটের তৈরি পণ্য সেভাবে বাজার পায়নি- এনিয়েও শ্রমিকদের মাঝে হতাশা রয়েছে। বিভিন্ন সময় বেতন ভাতার দাবিতে পাটকল শ্রমিকদের আন্দোলনের সমালোচনা করে পাট মন্ত্রী বলেছেন, প্রতি তিন মাস পর পরই এরা আন্দোলন করে রাস্তায় নেমে সরকারের কাছ থেকে টাকাগুলো নিয়ে যায়। আমাদের ব্যাংকে দেনা আছে। বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ সব বিল বাকি আছে।। ২০১৪ সালে প্রায় নয় হাজার শ্রমিক অবসরে গেছেন, তাদের পাওনা দেয়া হয়নি। সেই টাকা ভাঙিয়ে এখন কল চালানো হচ্ছে। এখন ২৫ হাজার শ্রমিককে গোল্ডেন হ্যান্ডশেক-এর আওতায় সব পাওনা দিতে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন হবে। এছাড়া ব্যাংকের বকেয়া, বিদ্যুৎ ও গ্যাস বিলের জন্য প্রায় ১৪০০ কোটি টাকা দেনা রয়েছে।


মন্ত্রী আরো বলেন, এই টাকাগুলো এখন শোধ করতে হবে এবং যত তাড়াতাড়ি এটা মুক্ত করতে পারবো তত তাড়াতাড়ি বেসরকারি অংশীদারিত্বে দিয়ে নতুন করে শুরুর চেষ্টা করা যাবে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এই কাজ দ্রুত ছয় মাসের মধ্যে করতে পারবো কিনা-আমি বলেছি পারবো। আমরা এক বছর আগে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখন বাস্তবায়ন করছি। কিন্তু তা করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে গেছে।

শ্রমিক নেতারা বলেন, করোনাভাইরাস দুর্যোগে সরকারের অর্থনৈতিক সংকটের কারণে সরকার তড়িঘড়ি করে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে কিনা-এই প্রশ্ন তাদের মধ্যে রয়েছে।

এদিকে পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেছেন, আগামী ৩ দিনের মধ্যেই পাটকল শ্রমিকদের পাওনা টাকার পরিমাণ জানা যাবে। চলতি সপ্তাহের মধ্যেই জুন মাসের বেতন দেয়া হবে বলেও জানান তিনি। শুক্রবার (৩ জুলাই) সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পাটমন্ত্রী। তিনি বলেন, পুরোনো টেকনোলজি দিয়ে কাজ হচ্ছে না। অব্যাহত লোকসান হওয়ায় পিপিপিতে যাচ্ছে সরকার।

পাটমন্ত্রী আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী তাদের পুনর্বাসন করতে হবে বলেছেন। তিনি দায়িত্ব নিয়েছেন, একজন শ্রমিককেও অবহেলা করা হবে না। ২০১৫ সালের মজুরি কমিশনসহ সব ধরনের সুবিধা নিশ্চিত করা হবে শ্রমিকদের। এছাড়া শ্রমিকদের পুরো টাকা যেন খরচ না হয়ে যায় সে জন্যই তাদের অর্ধেক টাকা সঞ্চয়পত্র হিসেবে রাখা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

এর আগে বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকদের শতভাগ পাওনা পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকার বিজেএমসি পরিচালিত রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোর আধুনিকায়ন এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একে আরো সক্ষম করে গড়ে তুলতে উৎপাদন বন্ধ করে শ্রমিকদের এককালীন পাওনা পরিশোধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এজন্য বাংলাদেশ জুট মিলস কর্পোরেশন’র (বিজেএমসি) ২৫টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে শ্রমিকদের প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার পাওনা পরিশোধ করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) সকালে গণভবনে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলসমূহ নিয়ে অনুষ্ঠিত এক গুরুত্বপূর্ণ সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, অর্থ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে (পিএমও) সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

মুখ্য সচিব বলেন, সরকারি খাতের পাটকলগুলোর সংস্কার ও আধুনিকায়নের লক্ষ্যে শ্রমিকদের সমুদয় পাওনা বুঝিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বর্তমানে দেশে যে পাট ও পাট জাত পণ্য উৎপাদিত হয় তার শতকরা ৯৫ শতাংশই বেসরকারি পাটকলে উৎপাদিত হয়। সরকারি খাতটি অত্যন্ত স্কুইজড (সংকুচিত) হয়ে গেছে। যা প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছিল না। এগুলোকে আবার প্রতিযোগিতায় কিভাবে আনা যায় এবং কিভাবে শক্তিশালী করা যায় সে বিবেচনায় এখন পাটকলগুলো বন্ধ করার ঘোষণা করা হয়েছে।

একইসঙ্গে এসব পাটকল বন্ধ থাকলে যে পরিমাণ ক্ষতি হয় চালু থাকলে তার চেয়ে বেশি পরিমাণ ক্ষতি হয়, উল্লেখ করে তিনি বলেন, কাজেই এসব পাটকলের সঙ্গে জড়িত শ্রমিক ভাইদের জীবন-জীবিকার নিশ্চয়তার জন্য সরকার তাঁদেরকে ২০১৫ সালের জাতীয় মজুরি কাঠামো অনুযায়ী সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ড.কায়কাউস বলেন, প্রধানমন্ত্রী এই নির্দেশনাও দিয়েছেন যে-পাটকলগুলো বন্ধ আছে সেগুলো কিভাবে চালু করা যায়, যাতে সেগুলো বর্তমান এবং আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে পারে। এ সংক্রান্ত একটি কর্মপন্থা প্রস্তুত করে অতি দ্রুত তাঁর নিকট নিয়ে আসার জন্যও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

মুখ্য সচিব ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো গত ৪৮ বছরের মধ্যে শুধু চার বছর লাভের মুখ দেখেছে এবং ৪৪ বছর ধরে অব্যাহতভাবে মোট ১০ হাজার ৬৭৪ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে। লোকসান হলে কর্মচারিদের বেতন-ভাতার জন্য সরকারের অর্থের উপর নির্ভর করতে হতো বলে প্রতি মাসেই শ্রমিক কর্মচারিদের এ সংক্রান্ত সমস্যা চলছিল। পাটকল শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের লক্ষ্যে আগামী তিন দিনের মধ্যে তাঁদের তালিকা প্রস্তুত করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

ড. কায়কাউস বলেন, ২০১৫ সালের সর্বশেষ মজুরি কাঠামো অনুযায়ী পাটকল সমূহের ২৫ হাজার শ্রমিককে তাদের অবসরকালীন সুবিধাসহ পাওনা পরিশোধ বাবদ সরকারের ৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে। পাটখাতের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ নজর রয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রীর দর্শন হচ্ছে পাটকল শ্রমিকদের বাঁচানো।

এরই প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী ইতোপূর্বে পাটের জন্মরহস্য উন্মোচনের জন্য গবেষণা খাতে অর্থায়ন করেছিলেন এবং পাটের বহুমুখী ব্যবহারের উপর বিশেষ নজর দেন বলেও উল্লেখ করেন ড. কায়কাউস।



শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের ধরন সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব বলেন, পাওনা বুঝিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে যেসব শ্রমিক অনধিক দুই লক্ষ টাকা প্রাপ্য তাদেরকে পুরো টাকা এককালীন নগদ পরিশোধ করা হবে। পাওনা টাকার মধ্যে ৫০ শতাংশ এককালীন নগদ এবং অবশিষ্ট ৫০ শতাংশ শ্রমিকদের ভবিষ্যৎ জীবন-জীবিকা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তিন মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয় পত্র আকারে পরিশোধ করা হবে।

সঞ্চয় পত্রের মাধ্যমে প্রাপ্ত আর্থিক সুবিধার বর্ণনা দিয়ে ড. কায়কাউস বলেন, ১১ শতাংশ সুদে প্রত্যেক শ্রমিক প্রতি তিন মাসে সর্বনিম্ন ১৯ হাজার ৩২০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ৭৪ হাজার ৫২০ টাকা পর্যন্ত পাবেন। এছাড়া এ পর্যন্ত অবসরে যাওয়া ৮ হাজার ৯৫৬ জন পাটকল শ্রমিকের অবসর ভাতা পরিশোধ করতে সরকারের ১ হাজার ২০ কোটি টাকা খরচ হবে। পাটকল শ্রমিকদের পাওনা টাকা সরাসরি তাঁদের ব্যাংক হিসাবে’ পাঠানো হবে এবং কোন পাটকল অথবা অন্য কোন মধ্যস্বত্বভোগীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকবে না।

ব্রিফিংয়ে উপস্থিত বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া জানান, অবসর ভোগীদের টাকা আগামী সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই নিজ নিজ ব্যাংক একাউন্টে চলে যাবে। সাংবাদিকদের এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে মুখ্য সচিব বলেন, এখানে কাউকে চাকরিচ্যুত করা হচ্ছে না এবং পরবর্তীতে এ কারখানাগুলো পুনরায় চালু হলে নিয়োগের ক্ষেত্রে বর্তমান শ্রমিকদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে।

কিন্তু করোনাভাইরাস দুর্যোগের প্রেক্ষাপটে যখন বেসরকারি খাতে অনেকে চাকরি হারাচ্ছেন, তখন সরকার এমন পদক্ষেপ কেন নিয়েছে, পাটকল শ্রমিকরা সেই প্রশ্ন তুলেছেন। আর এর ফলে সরকারি খাত থেকেও করোনাভাইরাসের মহামারির মধ্যেই ২৫ হাজার পাটকল শ্রমিক চাকরি হারিয়ে বেকার হচ্ছেন।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫