সুন্দরবনের বনজ সম্পদ রক্ষা ও দস্যু দমনে বিশেষ অভিযান শুরু করেছে বাগেরহাট জেলা পুলিশ।
শুক্রবার (৩ জুলাই) দুপুরে জেলার পশুরনদী সংলগ্ন মোংলা বন্দরের ওয়াটার জেটি এলাকায় এ অভিযানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন পুলিশ সুপার পঙ্কজ চন্দ্র রায়।
এসময় সহকারি পুলিশ সুপার আসিফ ইকবাল, মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: ইকবাল বাহার চৌধুরী, ওসি (তদন্ত) তুহিন মন্ডলসহ পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
মোংলা থানার ২০ সদস্যের একটি দল দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে সুন্দরবন ও বঙ্গোপসাগরসহ উপকূলীয় এলাকায় অভিযান পরিচালনা করবে। সুন্দরবন কেন্দ্রীক অপরাধ দমনে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানিয়েছেন পুলিশ সুপার পঙ্কজচন্দ্র রায়।
বাগেরহাট পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায় বলেন, সুন্দরবন আমাদের সম্পদ। দক্ষিনপশ্চিমাঞ্চলের মানুষের মায়ের মতো। কিন্তু কিছু অসাধু ব্যক্তি অতিলোভের কারণে সুন্দরবনের অভ্যন্ত বিষ প্রয়োগ করে মাছ ধরছে। এর ফলে শুধু মৎস্য সম্পদ ধ্বংস হচ্ছে না, বিষ প্রর্য়োগকৃত মাছ খেয়ে অন্যান্য প্রাণীও মারা যাচ্ছে, নদীর পানি নষ্ট হচ্ছে।
তিনি বলেন, সব মিলিয়ে সুন্দরবনের জীব বৈচিত্র হুমকীর মুখে পড়ছে। এর সাথে রয়েছে দস্যু ও চোরা শিকারীদের উৎপাত। দস্যুরা বৈধ জেলেদের উপর অত্যাচার করে। চোরা শিকারীরা সুন্দরবনের বাঘ, হরিণসহ বিভিন্ন বিলুপ্ত প্রায় প্রাণী পাচার করে। কেউ কেউ আবার কর্তণ নিষিদ্ধ গাছও কাটা শুরু করেছে।
তিনি আরো বলেন, এসব কারণে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র ও সৌন্দর্য ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। তাই দেশ ও মানুষের স্বার্থে সুন্দরবনকে বাঁচাতে বনকেন্দ্রীক সকল অপরাধ দমনে বিশেষ অভিযান চালানো হবে। আমাদের যা সক্ষমতা আছে, আমরা তা নিয়ে শুরু করছি।
প্রয়োজনে আধুনিক ও দ্রুতগামী নৌযানের ব্যবস্থা করা হবে। সুন্দরবনকে অপরাধী মুক্ত করতে বাগেরহাট জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে বলেও জানান তিনি।
পুলিশ সুপার পঙ্কজচন্দ্র রায় বলেন, বিশ্ব ঐতিহ্য “ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইট” হিসেবে স্বীকৃত আমাদের এই সুন্দরবন। বাংলাদেশে এই বনের আয়তন ৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার। এখানে বাঘ, বানর, চিত্রা ও মায়া হরিণ, বন বিড়াল, লোনা পানির কুমির, বন্য শুকর ও উদবিড়ালসহ ৩৭৫ প্রজাতির প্রাণী রয়েছে। এছাড়া সুন্দরবনের অভ্যন্তরে থাকা নদী খালে রয়েছে অসংখ্য প্রজাতীর মাছ ও বিলুপ্ত প্রায় ইরাবতি ডলফিন।