Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

অন্তহীন অনিয়মের অভিযোগ রিজেন্ট হাসপাতালের বিরুদ্ধে

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২০, ১৮:০২

অন্তহীন অনিয়মের অভিযোগ রিজেন্ট হাসপাতালের বিরুদ্ধে

করোনার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে আসা এবং বাড়িতে থাকা রোগীদের করোনার নমুনা সংগ্রহ করে ভুয়া রিপোর্ট প্রদান করত রিজেন্ট হাসপাতাল। এছাড়াও সরকার থেকে বিনামূল্যে কভিড-১৯ টেস্ট করার অনুমতি নিয়ে রিপোর্টপ্রতি সাড়ে তিন থেকে চার হাজার টাকার করে আদায় করত। এভাবে জনগণের সাথে প্রতারণা করে মোট তিন কোটি টাকার হাতিয়েছে রিজেন্ট হাসপাতাল। 

জানা গেছে, ৬ হাজার নমুনা সংগ্রহ করে তা ল্যাবরেটরিতে না নিয়ে বালতিতে রাখা হয়। পরবর্তীতে বাইরে ফেলে দেয়া হয়। পরে ১০ থেকে ২০ ভাগ রোগীর রিপোর্ট পরীক্ষা ছাড়াই পজিটিভ ও বাকিগুলো নেগেটিভ বলে চালিয়ে দেয়। অথচ এই ৬ হাজার মানুষের প্রত্যেকের কাছ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা করে নেয়া হয়। এতে অনেক রোগী পড়েন মহাবিপদে। কেউ কেউ মারাও গেছেন। রোগীর কাছ থেকে টাকা আদায় করে পরে সেটিকে বিনা মূল্যে করা হয়েছে দেখিয়ে সরকারের কাছে প্রায় দেড় কোটি টাকার বিলও জমা দিয়েছে রিজেন্ট কর্তৃপক্ষ। এছাড়া তারা করোনা রোগীদের সেবায় নিয়োজিত ডাক্তার, নার্সসহ স্বাস্থ্যসেবাকর্মীদের নিম্নমানের হোটেলে রাখত ও খুবই মানহীন খাবার সরবরাহ করত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

টেস্ট না করেই করোনা পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট দেয়াসহ নানা অভিযোগে সিলগালা করে দেয়া হয়েছে ঢাকার উত্তরায় রিজেন্ট গ্রুপের প্রধান কার্যালয় এবং উত্তরা রিজেন্ট হাসপাতাল ও মিরপুর রিজেন্ট হাসপাতাল। মঙ্গলবার বিকাল ৪টার দিকে রিজেন্ট গ্রুপের প্রধান কার্যালয়ে অভিযান চালায় র‍্যাব। সেখানে বিপুল স্যাম্পল পাওয়া গেছে। যেগুলো বালতিতে ছিলো। এছাড়া অনুমোদনহীন টেস্ট কিট ও বেশ কিছু ভুয়া রিপোর্ট পাওয়া গেছে বলে জানান র‍্যাব সদর দফতরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম। 

অভিযান শেষে তিনি বলেন, রিজেন্ট হাসপাতাল ও প্রধান কার্যালয় সিলগালা করে দিয়েছি। হেড অফিসে বসেই মিথ্যা রিপোর্ট তৈরি করত তারা। হেড অফিসে পাঁচ-সাত দিনের স্যাম্পল এক সঙ্গে করে ফেলে দিত। ভুয়া রিপোর্টও পেয়েছি। অনুমোদনহীন র্যাপিড কিট পাওয়া গেছে। তিনি আরো জানান, রিজেন্ট হাসপাতালে চিকিত্সাধীন রোগীদের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। আমরা ওদের গ্রুপ কার্যালয়টিও সিলগালা করে দিয়েছি যেখানে হাসপাতালের প্রধান কার্যালয়সহ আরো কয়েকটি অফিস ছিলো তাদের। তবে এর মালিক মোহাম্মদ সাহেদকে এখনো আটক করা যায়নি। তিনি পলাতক রয়েছেন। হাসপাতালটিতে গতকাল দুপুর পর্যন্ত ১৪ জন কভিড-১৯ রোগী চিকিত্সাধীন ছিলেন।

র‍্যাব কর্মকর্তারা বলেন, করোনা মহামারির এই সময়ে এত বড় দুঃসাহস তাদের হলো কীভাবে? এই লুটপাটের সঙ্গে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের এক শ্রেণির কর্মকর্তা জড়িত। তাদের লাইসেন্সের মেয়াদ ২০১৪ সালে উত্তীর্ণ হওয়ার পরও হাসপাতালটি কভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল হলো কীভাবে? সূত্র জানায়, সরকার থেকে বিনা মূল্যে কভিড-১৯ টেস্ট করার অনুমতি নিয়ে রিপোর্টপ্রতি সাড়ে ৩ হাজার টাকা করে আদায় করত রিজেন্ট হাসপাতাল। এভাবে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে তারা। অভিযোগ রয়েছে, এক শ্রেণির আদম ব্যাপারী বিদেশগামীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা না করে রিজেন্ট হাসপাতাল থেকে রিপোর্ট নিয়ে নিত।

এর আগে সোমবার রাতে মোহাম্মদ সাহেদের মালিকানাধীন হাসপাতাল থেকে অননুমোদিত র‍্যাপিড টেস্টিং কিট ও একটি গাড়ি জব্দ করে র‍্যাব। এ প্রসঙ্গে র‍্যাব সদর দফতরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম বলেন, ঐ গাড়িতে ফ্ল্যাগস্ট্যান্ড ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্টিকার লাগানো ছিলো। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকজনের চোখে ধুলো দিতেই গাড়িটি ব্যবহার করা হতো। সোমবারের অভিযানে রিজেন্টের আট কর্মকর্তাকে আটক করা হয়। তিনি বলেন, উল্লিখিত অনিয়মের সঙ্গে হাসপাতালটির চেয়ারম্যানই জড়িত এবং তিনি নিজেই এসব ডিল করেছেন।

জানা গেছে, রিজেন্ট হাসপাতালের বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। একটি প্রতারণা ও অন্যটি মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে। প্রতারণা মামলার তদন্ত করবে দুদক। মানি লন্ডারিং মামলার তদন্ত করবে সিআইডি। মামলায় রিজেন্ট হাসপাতাল ও গ্রুপের মালিক ও এমডিসহ ১৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর আগে জেকেজি নামক একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ওঠার পর আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সেটি বন্ধ করে দিয়েছিল।

সূত্র জানায়, উত্তরার ৫০ শয্যার রিজেন্ট হাসপাতালটিকে স্বাস্থ্য অধিদফতর অনুমোদন দিয়েছিল ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে। পরে ২০১৭ সালে মিরপুরে হাসপাতালটির আরেকটি শাখা খুলে তার অনুমোদন নেয়া হয়। যদিও এসব হাসপাতালের লাইসেন্সের মেয়াদ ২০১৪ উত্তীর্ণ হওয়ার পর আর নবায়ন করা হয়নি।

হাসপাতালের আইসিইউতে গিয়ে দেখা গেছে যেটা আছে সেটাকে নরমাল ওয়ার্ডও বলা যায় না। সেখানে পুরোনো কাঁথা-বালিশ থেকে আরম্ভ করে সব আছে। এর যে ডায়াগনসিস ল্যাব সেখানে কোনো মেশিন নেই। ফ্রিজের মধ্যে এক অংশে রি-এজেন্ট আর অন্য অংশে মাছ পাওয়া গেছে। এর যে ডিসপেনসারি সেখানে সব সার্জিক্যাল আইটেম পাঁচ-ছয় বছর আগের, মেয়াদোত্তীর্ণ। হাসপাতালটির মালিকের গাড়ির রেজিস্ট্রেশনও নেই।

জানা গেছে, হাসপাতালটির মালিক মোহাম্মদ সাহেদ বিএনপির সময় বিএনপি, আওয়ামী লীগের সময় আওয়ামী লীগ হয়ে যান। হাওয়া ভবনে তার যাতায়াত ছিলো। বিএনপি সরকারের আমলে মীর কাসেম আলী ও গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। খাম্বা মামুনের সঙ্গে সে ২ বছর জেলও খেটেছে। ২০১১ সালে ধানমন্ডির ১৫ নম্বর রোডে এমএলএম কো. বিডিএস ক্লিক ওয়ানের ব্যবসা করে সাধারণ মানুষের ৫০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ৩২টি মামলা রয়েছে। অন্যদিকে নিজেকে কর্নেল (অব.) পরিচয় দিয়ে মার্কেন্টাইল কোঅপারেটিভ ব্যাংক বিমানবন্দর শাখা থেকে ৩ কোটি টাকা লোন নেয়া নিয়েও তার বিরুদ্ধে আদালতে দুটি মামলা চলছে। বিভিন্ন টিভির টকশোতে মোহাম্মদ সাহেদকে দেখা যেত। তার প্রতিষ্ঠান রিজেন্ট কে সি এস লি. এর নামে ইউসিবি ব্যাংক উত্তরা শাখাসহ বিভিন্ন ব্যংকে শত শত কোটি টাকা রয়েছে বলে জানা গেছে।

করোনা রোগীদের চিকিত্সা দিতে রিজেন্টসহ তিনটি হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি করে স্বাস্থ্য বিভাগ। চুক্তির আওতায় সরকার সেখানে ডাক্তার, নার্সসহ কিছু জনবলও নিয়োগ দেয়। হাসপাতালটির করোনা রোগীদের বিনা মূল্যে চিকিত্সা দেয়ার কথা ও পরে সরকারের সেই টাকা পরিশোধ করার কথা ছিলো।

এর আগে করোনাভাইরাস পরীক্ষা না করেই ভুয়া রিপোর্ট দেয়ায় এবং মেয়াদ পূর্তির পরও লাইসেন্স নবায়ন না করায় রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর শাখা বন্ধের নির্দেশ দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অনিয়মের অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় মেডিক্যাল প্র্যাক্টিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ল্যাবরেটরি রেগুলেশন অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী ঐ হাসপাতালের কার্যক্রম অবিলম্বে বন্ধের নির্দেশ দেয়া হলো।

এদিকে গ্রেফতার সাতজনের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার (৮ জুলাই) তাদের সাতজনকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। উত্তরা পশ্চিম থানায় তাদের বিরুদ্ধে করা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওই থানার পরিদর্শক আলমগীর গাজী। শুনানি শেষ ঢাকা মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াসির আহসান চৌধুরী প্রত্যেকের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

তারা হলেন- রিজেন্ট হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আহসান হাবীব (১), হেলথ টেকনিশিয়ান আহসান হাবীব (২), হেলথ টেকনোলজিস্ট হাতিম আলী, রিজেন্ট গ্রুপের প্রকল্প প্রশাসক মো. রাকিবুল ইসলাম, রিজেন্ট গ্রুপের মানবসম্পদ কর্মকর্তা অমিত বণিক, রিজেন্ট গ্রুপের গাড়িচালক আবদুস সালাম ও হাসপাতালের কর্মী আবদুর রশিদ খান জুয়েল। অন্যদিকে রিজেন্ট হাসপাতালের অভ্যর্থনাকারী কামরুল ইসলাম নামে এক আসামি শিশু হওয়ায় তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াসির আহসান চৌধুরী তাকে গাজীপুরের কিশোর সংশোধীতে পাঠানোর আদেশ দেন।

এদিকে রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদকে খুঁজছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। র‌্যাব ছাড়াও অন্যান্য বাহিনী সতর্ক থাকায় তিনি দেশ ছেড়ে পালাতে পারবেন না। শিগগিরই তাকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লে. কর্নেল সারওয়ার-বিন-কাশেম।

তিনি বলেন, দুই রাত ধরেই তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। বিভিন্ন জায়গায় আমরা খোঁজ করছি। বলে রাখতে চাই, সে অবশ্যই ধরাছোঁয়ার বাইরে নয়। কারণ কেউ ধরাছোঁয়ার বাইরে নয়। যারাই আইনের ঊর্ধ্বে যাওয়ার চেষ্টা করবে অবশ্যই তাকে আমরা আইনের আওতায় আনতে সক্ষম। তার বিষয়ে অন্যান্য সংস্থাও সতর্ক। বুধবার দুপুরে (৮ জুলাই) র‌্যাব সদর দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান তিনি।

লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক বলেন, রিজেন্টের প্রতারণায় ১৭ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও ৯ জনকে আসামি করে নিয়মিত মামলা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান সাহেদ পলাতক। অভিযানের পরই সে গাঢাকা দিয়েছেন। গতকাল রাতেও আমরা বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়েছি। সাহেদের মোবাইল নম্বর বন্ধ। প্রথম দিন দেখেছিলাম ফেসবুকে অ্যাক্টিভ ছিলেন, কিন্তু এখন তিনি সবকিছু থেকেই নিষ্ক্রিয়। তবে আশা করছি  দ্রুত তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে সক্ষম হবো।

এক প্রশ্নের জবাবে অচিরেই প্রতারক সাহেদকে গ্রেফতারের সুখবর দিতে পারবেন আশা প্রকাশ করে র‌্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, তিনি অবশ্যই ধরাছোঁয়ার বাইরে নন। কারণ কেউ ধরাছোঁয়ার বাইরে নন। অভিযানের বিষয়ে তিনি বলেন, করোনাকে ঘিরে আমরা নানা অপতৎপরতা দেখেছি। শুরু থেকেই ভুয়া হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ব্যবহৃত গ্লাভস-মাস্ক বিক্রির বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছি। বিভিন্ন ভুক্তভোগীর মাধ্যমে জানতে পারি, কিছু হাসপাতাল করোনা টেস্টকে ঘিরে নৈরাজ্য শুরু করেছে। ব্যক্তি পর্যায় থেকেই অনুসন্ধানের কাজ শুরু করেছিলাম।

রিজেন্ট হাসপাতাল হোম ডেলিভারির মতো বাসায় গিয়ে করোনার নমুনা সংগ্রহ করে দ্রুততার সঙ্গে রিপোর্ট সরবরাহ করছিল। প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে আমরা গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়েছি। এরপর কেঁচো খুঁড়তে সাপ নয়, এনাকোন্ডা বের করে আনতে সক্ষম হই। দুদিন ধরে রিজেন্টের বিরুদ্ধে আমরা ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করছি। তাদের বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ, তারা নমুনা নিয়ে টেস্টের সঠিক রিপোর্ট পাঠায় না। প্রায় সাড়ে চার হাজার নমুনার টেস্ট না করেই কম্পিউটার অপারেটর মনগড়া রিপোর্ট দিয়ে সরবরাহ করেছে। ফলে বুঝে না বুঝে অনেকেই ভুয়া পজিটিভ হয়ে কোয়ারেন্টিনে চলে গেছেন। তারা প্রথমবার টেস্টে সাড়ে তিন থেকে চার হাজার টাকা নিতেন পরবর্তী টেস্টের জন্য আবার এক থেকে দেড় হাজার টাকা আদায় করতেন।

সরকারের সঙ্গে বিনামূল্যে চিকিৎসার চুক্তি স্বাক্ষরের নামে আসলে হঠকারিতা করেছে প্রতিষ্ঠানটি। তারা রোগীদের মোটা অঙ্কের বিল দিতে বাধ্য করেছে। পাঁচ সদস্যের একটি পরিবার গত ২০ দিনে দুই লাখ ৭০ হাজার টাকা রিজেন্টের কর্মচারী পলাশকে দিয়েছে বলে জানতে পেরেছি। রিজেন্ট হাসপাতাল ১০ হাজার টেস্ট করেছে। এর মধ্যে সাড়ে চার হাজার টেস্টের কাগজ আমাদের হাতে রয়েছে, যা সরকারের কোনো সংস্থা এ ধরনের রিপোর্ট তৈরি করেনি বলে জানতে পেরেছি। রিজেন্টের কম্পিউটার অপারেটর আমাদের বলেছে, চেয়ারম্যান নিজে ব্যক্তিগতভাবে এসব করিয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটি তিন মাসে প্রায় আড়াই থেকে তিন কোটি টাকা নিয়েছে। সেসব টাকা কোথায় গেছে তা খতিয়ে দেখা হবে। প্রয়োজনে তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করা হবে।

রিজেন্টের চেয়ারম্যান সাহেদের বিষয়ে তিনি বলেন, বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে তার নানা অপকর্মের কথা জানতে পেরেছি। বিভিন্ন সময় তিনি প্রতারণার দায়ে আটক হয়েছিলেন, জেলও খেটেছেন। মিথ্যাকে কেন্দ্র করেই তার উত্থান। ভুয়া পরিচয় দিয়ে নানাভাবে প্রতারণা করেছেন মানুষের সঙ্গে। সে একটা এমএলএম কোম্পানি খুলে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল, যার জন্য জেলও খেটেছে। আমরা জানতে পারছি তার আরো অনেক নামে-বেনামে প্রতিষ্ঠান রয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে লাইসেন্সও নেয়া হয়নি। উল্লেখ করতে চাই, প্রতিদিন নানা জায়গা থেকে অসংখ্য ফোন রিসিভ করছি, তারা সাহেদের অপকর্ম-অরাজকতার বিষয়ে জানাচ্ছে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫