
নওগাঁর ধামইরহাটে ১০ লাখ টাকা যৌতুক না দেয়ায় গৃহবধূ শারমিন আক্তারকে শ্বশুর বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে স্বামী ও বাড়ির লোকজন।
ঝামেলা মিটিয়ে স্বামীর সংসারে যেতে চান স্ত্রী। কিন্তু যৌতুকলোভী স্বামী- শ্বশুর বাড়ির লোকদের কারণে ঘটনাটি মিমাংসা না হওয়ায় নিরুপায় হয়ে মামলা দিয়েছেন ভুক্তভোগী গৃহবধূ।
পাষণ্ড স্বামী এখন জেল হাজতে থাকায় শ্বশুর ও ননদের হুমকি মাথায় নিয়ে হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন গৃহবধূ শারমিন আক্তার।
অভিযোগ সূত্রে ও ভুক্তভোগী গৃহবধূ জানান, ২০১৯ সালে পরিবারিকভাবে আগ্রাদ্বিগুন ইউনিয়নের শাহাজাহান আলীর মার্স্টাস পাস মেয়ে মোছা. শারমিন আক্তারের সাথে বিয়ে হয় পার্শ্ববতী রামচন্দ্রপুর গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে আগ্রাদ্বিগুন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুল মমিনের সাথে। বিয়ের ৩ মাস পর যৌতুকলোভী স্বামী আব্দুল মমিনকে মোটর সাইকেল না দিতে পারলে গৃহবধূর ওপর শুরু হয় অমানুষিক নির্যাতন।
গরীব বাবা মা মেয়ের সংসারের কথা ভেবে দেড় লাখ টাকায় ১টি মোটরসাইকেল কিনে দেয়। মাস খানেক পর আবারও স্ত্রী সারমিনের নিকট ১০ লাখ টাকা দাবি করে স্বামী আব্দুল মমিন।
যৌতুকের এত বড় অংকের টাকা না দিতে পারায় চলতি বছরের ২৯ মার্চ শশুর বাড়ীর লোকজন মারপিট করলে পরদিন বাবা শাহাজাহান আলী মেয়েকে নিজের বাড়ীতে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে এ ঘটনাটি কোন প্রকার মিমাংসা না হওয়ায় থানায় মামলা করলে স্কুল শিক্ষক আব্দুল মমিন ও শ্বশুর গ্রেফতার হন। স্বামী হাজতে থাকলেও শশুর জামিনে এসে মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকি দেন শ্বশুর আব্দুস সাত্তার ও ননদ রওশন আরা।
স্ত্রী শারমিন জানান, আমার বাবা গরীর হিসেবে ৪ ভরি সোনা ও দেড় লাখ টাকা এনজিও থেকে ঋণ করে দিয়েছে আমার সুখের জন্য। কিন্তু কপাল খারাপের জন্য এমন স্বামী পেয়েছি। কথায় কথায় আমার স্বামী বলে অন্যত্র বিয়ে করলে নাকি ২৫ লাখ টাকা পাবে। আর সে কারণেই আমাকে তাড়াতে দিনের পর দিন এই নির্যাতন।
এ বিষয়ে আগ্রাদ্বিগুন বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বেনজির আহমেদ জানান, যৌতুক ও নারী নির্যাতনের মামলা হওয়ায় সহকারী শিক্ষক আব্দুল মমিনকে ম্যানেজিং কমিটি সাময়িক বরখাস্ত করেছে।
তবে অভিযুক্ত শ্বশুর আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘আমাকে যখন জেল খাটতে হয়েছে, এখন সেই বেটা বউকে নিয়ে সংসার করা যাবে কি না ভাবতে হবে। আর আমরা কোনো টাকা পয়সা চাইনি বা হুমকিও কাউকে দেইনি।
এ বিষয়ে ধামইরহাট থানার ওসি মো. আবদুল মমিন জানান, ঘটনার বিষয়ে ধামইরহাট থানায় চলতি বছরের ২৫ এপ্রিল একটি মামলা হয়েছিল। সেই প্রেক্ষিতে ১ নং আসামী এখনও হাজতে আছে। বাদীকে হুমকি দেয়ার বিষয়ে নতুন ভাবে অভিযোগ করে একটি জি.ডি দায়ের করেছে শারমিন আক্তার। বিষয়টি খতিয়ে দেখে অইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।