জামালপুরে তৃতীয় দফা বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার শঙ্কা

জামালপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ জুলাই ২০২০, ১২:০৮

জামালপুরে তৃতীয় দফায় বন্যা শুরু হয়েছে। যমুনা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি নতুন করে বাড়তে থাকায় চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছে এ জেলার মানুষ। তৃতীয় দফার বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
এদিকে জেলা প্রশাসনের হিসাব অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জেলার ৯ লাখ ৮৭ হাজার ৫৪১ জন মানুষ। বানভাসীদের দূর্ভোগ কমাতে জেলা প্রশাসন থেকে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখার কথা বললেও প্রয়োজনের তুলনায় তা অপ্রতুল।
জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, সোমবার (২০ জুলাই) সকালে যমুনার পানি বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ৮৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এছাড়া ব্রহ্মপুত্র নদের পানি জামালপুর ফেরীঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
ব্রহ্মপুত্র নদের পানিও বিপদসীমা অতিক্রম করায় নতুন নতুন এলাকা বন্যা কবলিত হচ্ছে। যমুনার পানি বাড়ায় তৃতীয় দফা বন্যা শুরু হওয়ায় মানুষের
দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। জামালপুর পৌরসভার নাওভাঙ্গা চর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছে সেখানকার বাসিন্দারা। বাড়ি ঘর পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সেখানকার শতাধিক বাসিন্দা তাদের গবাদি পশু নিয়ে জামালপুর শহর রক্ষা বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে।
নাওভাঙ্গা চর এলাকার বাসিন্দা আবুল হাশেম জানান, অনেকদিন যাবত তারা শহর রক্ষা বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। কয়েকবার পানি কমলে বাড়ির ফেরার প্রস্তুতি নেন তারা। কিন্তু আবার পানি বেড়ে যায়। তাই তারা বাড়ি ফিরতে পারে না। এই জায়গায় খুব কষ্টে দিন পার করছেন তারা।
নাওভাঙ্গা চর এলাকার ষাটোর্ধ বাসিন্দা আব্দুল মান্নান জানান, বন্যার পানি থাকায় কোনো কাজ করতে পারছে না তারা। খুবই অভাব ও কষ্টে দিন কাটছে তাদের। তাই তারা সরকারি সহায়তার দাবি জানান।
জামালপুর জেলা ত্রান ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. নায়েব আলী জানান, বন্যায় এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৪০৮. ৫৭০ মেট্রিক টন ভিজিএফ চাল, ৬১০ মেট্রিক টন জিআর চাল, ২১ লাখ ৫০ হাজার টাকা জিআর ক্যাশ, ৫ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, ২ লাখ টাকার গো-খাদ্য, ২ লাখ টাকার শিশুখাদ্য বরাদ্দ আসে। পর্যায়ক্রমে এসব বিতরন করা হচ্ছে।
ত্রাণের যোগ্য সকল বানভাসীকে ত্রাণ দেয়া হবে বলেও তিনি জানান।
জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু সাঈদ জানিয়েছেন, কুড়িগ্রাম ও উজানে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় তৃতীয় দফা বন্যা শুরু হয়েছে। এই বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন তিনি।