মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের ৯৫তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৯২৫ সালের এ দিনে (২৩ জুলাই) গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার দরদরিয়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।
তাজউদ্দীন আহমদের বাবার নাম মৌলভী মুহাম্মদ ইয়াসিন খান এবং মায়ের নাম মেহেরুন্নেসা খানম। তারা ছিলেন চার ভাই ও ছয় বোন।
১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্ত ফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে তরুণ তাজউদ্দীন সেই সময়ের পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রভাবশালী ফকির আবদুল মান্নানকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে এমএলএ নির্বাচিত হন। ১৯৬৪ সালে তিনি আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পরে ১৯৬৬ সালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন।
১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গ্রেফতার হওয়ার পর তার অবর্তমানে ১০ এপ্রিল গঠিত মুজিব নগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাজউদ্দীন আহমদ শক্ত হাতে বাঙালির স্বাধীনতার আন্দোলন পরিচালনা করেন। স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করার পর তাজউদ্দীন আহমদকে গৃহবন্দি করা হয় এবং পরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। বন্দি অবস্থায় ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাভ্যন্তরে অপর তিন জাতীয় নেতা- সৈয়দ নজরুল ইসলাম, এম মনসুর আলী ও এএইচএম কামরুজ্জামানের সঙ্গে তাজউদ্দীন আহমদকেও হত্যা করা হয়।
১৯৭৫ সালে পট পরিবর্তনের পর এবং আওয়ামী লীগের দুর্দিনে তার সহধর্মিণী সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন দলের হাল ধরেন এবং দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য নির্বাচিত হন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্ব পালন করেন।
এ রাজনৈতিক দম্পতির রয়েছে ৪ সন্তান। একমাত্র ছেলে তানজিম আহমদ সোহেল তাজ কাপাসিয়া আসন থেকে পরপর দু’বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ও তিনি স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। তার ছেড়ে দেয়া আসনে তার মেজো বোন সিমিন হোসেন রিমি পরপর দু’বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এমপি মুহম্মদ শহীদুল্লাহ জানান, মহান এই নেতার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে জন্মস্থান কাপাসিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা, দোয়া ও কোরআনখানি ইত্যাদি।
এসব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে যুক্ত হবেন স্থানীয় সংসদ সদস্য বঙ্গতাজ কন্যা সিমিন হোসেন রিমি।