
ছবি: ডিএমপি নিউজ
গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে অজ্ঞান পার্টি চক্রের ৫৯ সদস্যকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ।
এরা প্রত্যেকে অজ্ঞান পার্টির পেশাদারী সক্রিয় সদস্য। এসময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরণের চেতনা-নাশক ওষুধ, স্প্রে, গুল, মলম, পাগলা মলম, ফোল্ডার চাকু উদ্ধার করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার হতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গোয়েন্দা ওয়ারী বিভাগ ১৬ জন, সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ ১০ জন, গোয়েন্দা মতিঝিল বিভাগ নয়জন, গোয়েন্দা রমনা বিভাগ আটজন, গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ আটজন ও গোয়েন্দা তেজগাঁও বিভাগ আটজন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে।
আজ বৃহস্পতিবার (৩০ জুলাই) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মো. আবদুল বাতেন।
তিনি বলেন, বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগীর মামলার প্রেক্ষিতে সেইসাথে এই ঈদকে ঘিরে অজ্ঞান পার্টি সক্রিয় হয়ে ওঠায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়। ঈদকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বেপারিরা ঢাকায় গরু আনতে শুরু করেছে এবং হাটও দিন দিন জমে উঠছে।
তিনি আরো বলেন, গত কিছুদিন ধরেই এই সন্দেহভাজন অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা গরু ব্যবসায়ী ও গরু বিক্রেতাদের টার্গেট করে তাদের খাবারের সাথে চেতনা-নাশক মিশিয়ে টাকা পয়সা লুটপাট করে আসছিল। তারা চারজন পাঁচজনের একটি গ্রুপ হয়ে হামলা চালিয়ে থাকে। একেকটি গ্রুপের হামলা চালানোর ধরণ একেক রকম, কেউ খাবারে চেতনা নাশক খাইয়ে কিংবা চোখে মুখে মলম বা স্প্রে ছিটিয়ে লুটপাট করে।
আটকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে এবং ঈদের শেষ দিন পর্যন্ত এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও আব্দুল বাতেন জানান।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা জানায়, পবিত্র ঈদকে সামনে রেখে তারা ঢাকা শহরের বিভিন্ন মার্কেট/শপিংমল, পশুর হাট, বাসস্ট্যান্ড, সদরঘাট ও রেলস্টেশন এলাকায় আগত ব্যক্তিদের টার্গেট করে সখ্যতা স্থাপন করে। এরপর তাদের অপর সদস্যরা টার্গেটকৃত ব্যক্তি ও তাদের সদস্যকে ট্যাবলেট মিশ্রিত খাদ্যদ্রব্যের আমন্ত্রণ জানায়। টার্গেটকৃত ব্যক্তি রাজী হলে ট্যাবলেট মিশ্রিত খাদ্যদ্রব্য তাকে খাওয়ায় ও নিজেদের সদস্যরা সাধারণ খাবার খায়। এরপর টার্গেটকৃত ব্যক্তি অচেতন হলে তারা তার মূল্যবান দ্রব্যাদি নিয়ে দ্রুত চলে যায়। এক্ষেত্রে অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা খাদ্যদ্রব্য হিসেবে চা, কফি, জুস, ডাবের পানি, পান, ক্রিম জাতীয় বিস্কিট ইত্যাদি ব্যবহার করে।
এমন অবস্থায় প্রত্যেককে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বাতেন বলেন, নিজেদের সাবধানতার কথা ভেবে হলেও অপরিচিত মানুষদের থেকে ও রাস্তা থেকে কিছু খাওয়ার ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। মানুষ সচেতন হলে এ ধরণের ঘটনা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।