
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ থেকে এক কয়েদি নিখোঁজের ঘটনায় প্রধান কারারক্ষীসহ ৬ রক্ষীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
একই সঙ্গে আরও ৬ কারারক্ষীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে।পাশাপাশি ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করেছে কারা কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, নিখোঁজ হওয়া ওই কয়েদির নাম আবু বকর সিদ্দিক। বাড়ি সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার আবাদ চন্ডীপুরে। তিনি যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদি।
এ ঘটনায় কারাগারের জেলার মো. বাহারুল ইসলাম বাদী হয়ে শুক্রবার (৭ আগস্ট) বিকেলে গাজীপুর মেট্রোপলিটনের কোনাবাড়ি থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
কারাসূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় লকআপ করতে গিয়ে ওই কয়েদিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত ওই কয়েদিকে কারাগারের ভেতরে কোথাও পাওয়া যায়নি। পরে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কারা কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়।
ধারণা করা হচ্ছে, কারাগারের ১৮ ফুট উচ্চতার সীমানা প্রচীর টপকে ওই কয়েদি পালিয়ে গেছেন।
কারাসূত্র জানায়, কয়েদি নিখোঁজের ঘটনায় কারাগারের প্রধান কারারক্ষী, সহকারী প্রধান কারারক্ষী ও চার কারারক্ষীকে সাময়িক বরখাস্ত এবং আরও ৬ কারারক্ষীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় অতিরিক্ত আইজি প্রিজনস কর্নেল আবরার হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কারা সূত্র জানায়, আবু বকর সিদ্দিক ২০১১ সালে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ফাঁসির আসামি হিসেবে কাশিমপুর কারাগারে আসেন। ২০১২ সালের ২৭ জুলাই তার সাজা সংশোধন করে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন আদালত।
এআইজি প্রিজনস মনজুর হোসেন জানান, তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটিকে ৩ কর্মদিবস সময় দেয়া হয়েছে। কমিটি শনিবার থেকেই কাজ শুরু করবে। ইতিমধ্যে গাজীপুরের পুলিশ সুপার এবং একই সঙ্গে পলাতক বন্দির নিজ জেলা সাতক্ষীরার পুলিশ সুপারকেও বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। পলাতক বন্দির অনুসন্ধান চলছে।
এদিকে কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, কারাগারটি বড় হওয়ায় কারাগারের কোথাও আবু বকর সিদ্দিক লুকিয়ে থাকতে পারেন বলে প্রথমে ধারণা করা হয়। কিন্তু শুক্রবার বিকেলেও তাকে কারাগারে খুঁজে না পেয়ে কোনাবাড়ি থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
এর আগে ২০১৫ সালের ১৩ মে সন্ধ্যায়ও ওই কয়েদি আত্মগোপন করেছিলেন। তখন তিনি সেল এলাকায় সেফটি ট্যাংকির ভেতরে লুকিয়ে ছিলেন। পরদিন তাকে একটি ট্যাংকির ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল।