
যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের তিন বন্দি কিশোরকে পিটিয়ে হত্যা এবং ১৫ জন আহতের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় আরো ৮ বন্দি কিশোরকে আসামি করা হয়েছে। গত শনিবার মামলার ৫ সাক্ষীর আদালতে দেয়া ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে ওই ৮ কিশোরের নাম আসে। ফলে পুলিশ এই হত্যা মামলায় ৫ আসামির সাথে আরো ৮ জনের নাম যোগ করেছে। এই নিয়ে আসামির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩ জনে। কিশোর ৮ বন্দির মধ্যে ৭ জনকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়েছে। এর আগে কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়কসহ ৫ কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর রোকিবুজ্জামান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নতুন যুক্ত ৮ কিশোর আসামি হলো- গাইবান্ধা সদর উপজেলার জোদ্দকুড়ি সিং (বানপাড়া) আমজাদ আলীর ছেলে খলিলুর রহমান তুহিন, নাটোরের সিংড়া উপজেলার জোড় মল্লিক গ্রামের মোক্তার হোসেনের ছেলে হুমাইদ হোসেন, পাবনার বেড়া উপজেলার সান্যালপাড়া গ্রামের কুদ্দুস মোল্লার ছেলে ইমরান হোসেন, একই গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে মনোয়ার হোসেন, রাজশাহীর মতিহার থানায় কাজলা গ্রামের তজিবরের ছেলে পলাশ ওরফে শিমুল, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার চাপুভেলা কোপা গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে রিফাত আহেমদ রিফাত, নাটোর উপজেলার কামারদিয়া গ্রামের কামাল জোয়ার্দারের ছেলে মোহাম্মদ আলী এবং চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার আনিস।
এদিকে কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে গত ১৩ আগস্টের ঘটনাটির সরেজমিন তদন্ত শুরু করেছে সমাজসেবা মন্ত্রণালয় গঠিত দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি। কমিটির প্রধান মন্ত্রণালয়ে পরিচালক (প্রতিষ্ঠান) যুগ্ম সচিব সৈয়দ নুরুল বসির এবং সদস্য উপরিচালক (প্রতিষ্ঠান-২) এমএম মাহমুদুল্লাহ রবিবার যশোর জেনারেল হাসপাতালে আসেন এবং সেখানে ভর্তি আহত বন্দি কিশোরদের সাথে কথা বলেন। এরপর তারা পুলেরহাটের শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে যান। সেখানকার স্টাফ ও অপর বন্দিদের সাথে কথা বলেছেন। এছাড়া বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতি আছে কি না বা অতীতে হয়েছে কি না, তারও তদন্ত করছে এই উচ্চ পর্যায়ের কমিটি। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন সমাজসেবা অধিদফতরের উপপরিচালক অসিত কুমার সাহা। এই দুই কর্মকর্তা রবিবার রাত পর্যন্ত উন্নয়ন কেন্দ্রে তদন্তের কাজ করেছেন। এদিকে রবিবার আটক আরো ৭ বন্দি কিশোরকে আদালতে হাজির করে পুলিশ।
পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, ৭ বন্দি কিশোরকে আদালতে দেখতে চাওয়ায় তাদের হাজির করা হয়। এদের মধ্যে অনেকে জানিয়েছে, ঘটনার দিন ‘পিসি স্যার লাঠি নিয়ে আসে। আর আনসার সদস্য ও এডি স্যাররা বন্দিদের পেটায়। পরে তারা আহত হলে আমাদের যার যার ডরমেটরিতে যেতে বলে। আমরা সেই হুকুম পালন করেছি। আমার কাউকে মারিনি।’