দুই মিনিটেই সিনহাকে হত্যা
ঘটনাস্থলে ওসি প্রদীপসহ তিন আসামি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২১ আগস্ট ২০২০, ২২:৪৭

দীর্ঘ সময় কক্সবাজারের টেকনাফ থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন ওসি প্রদীপ। বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ লিয়াকত ও এসআই নন্দদুলালও এই মেরিন ড্রাইভে পাকড়াও করেছেন বহু আসামি।
যেখানে আসামি ধরতে দাপিয়ে বেরিয়েছেন, সেখানেই এবার আসামির কাঠগড়ায়, ওসি প্রদীপ, ইন্সপেক্টর লিয়াকত এবং এসআই নন্দদুলাল। ঘটনার তিন সপ্তাহ পর মূল অভিযুক্ত এই তিন আসামিকে নিয়ে, সিনহা হত্যার স্পটে গেলো র্যাবের তদন্ত দল। কি কারণে গুলি করা হয়েছে সেই উত্তর খোঁজাই প্রধান কাজ বলছে তদন্ত দল।
শুক্রবার (২১ আগস্ট) দুপুরে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যার মূল আসামি হিসেবে সেই মেরিন ড্রাইভে গেলেন তিনজন।
অভিযুক্তদের কাছ থেকে শামলাপুর চেকপোস্টে সে রাতের ঘটনার পুংখানুপুংখ বর্ণনা জানতে চায় র্যাবের তদন্ত দল। রিমান্ডে নেয়ার চার দিন এবং ঘটনার ২১ দিনের মাথায় নেয়া এ উদ্যোগ তদন্তে খুবই সহায়ক ভূমিকা রাখবে আশা র্যাবের।
কিছুদিন আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটিও ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যায়। তবে মূল অভিযুক্তদের নিয়ে স্পট পরিদর্শনের পর র্যাব জানায়, ঠিক কি কারণে মেজর সিনহাকে গুলি করা হয়েছিলো, সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হতে পারেননি তারা।
তবে মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি গভীরভাবে অ্যানালাইসিস করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল তোফায়েল মোস্তফা সরোয়ার।
তিনি বলেছেন, মেজর সিনহাকে গুলিবর্ষণের পুরো ঘটনাটি ঘটেছে এক থেকে দুই মিনিটের মধ্যে। এই দুই মিনিটের প্রতিটি সেকেন্ডের ঘটনাপ্রবাহ আমরা বিচার-বিশ্লেষণ করছি। প্রতিটি সেকেন্ডই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়। এই ঘটনার অনেক তথ্য-উপাত্ত আমরা সংগ্রহ করেছি।
কী তথ্য পেয়েছেন গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে চাইলে মোস্তফা সরোয়ার বলেন, ‘এটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ মামলা। তদন্ত কর্মকর্তা তার তদন্তকাজের অংশ হিসেবে আসামিদের নিয়ে ঘটনাস্থলে এসেছেন। এটি তদন্তকাজেরই অংশ। এই মুহূর্তে কিছু বলা সমীচীন হবে না। এতে তদন্তকাজ ব্যাহত হতে পারে। তদন্তকাজটি এমনভাবে সম্পন্ন করা হবে, যাতে এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কোনও দোষী ব্যক্তি রক্ষা না পায় এবং নিরীহ লোক কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হন। ঘটনাটি যে দুই মিনিটের মধ্যে ঘটেছে, এর প্রত্যেকটি সেকেন্ড আমরা গভীরভাবে অ্যানালাইসিস করছি।’
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ, র্যাবের গোয়েন্দা শাখার পরিচালক সারোয়ার বিন কাশেম, র্যাব-১৫ অধিনায়ক আজিম আহমেদ এবং মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র্যাবের সিনিয়র এএসপি খায়রুল ইসলাম প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত ৩১ জুলাই রাত ১০টার দিকে টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এপিবিএন চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন (অব.) সেনা কর্মকর্তা সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনায় নিহতের বোন শাহরিয়ার শারমিন ফেরদৌস বাদী হয়ে গত ৫ আগস্ট টেকনাফের সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশ সদস্যকে আসামি করে আদালতে মামলা করেন। মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে র্যাবকে।