প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যাদের প্রতি বিশ্বাস ছিল ভালোবাসা ছিল তারাই জাতির পিতাকে হত্যা করে বিশ্বাসঘাতকতা করলো।

১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, যিনি আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন, একটি জাতি হিসেবে আত্মমর্যাদার সুযোগ করে দিয়েছিলেন, এদেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করছিলেন খুনিরা তাকেই হত্যা করলো।

পাশাপাশি তিনি তার প্রতি বারবার আস্থা রেখে ভোট দিয়ে দেশের সেবা করার সুযোগ দেওয়ায় জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।

জাতির পিতা ৪৫তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আজ রবিবার (২৩ আগস্ট) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদ্‌যাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি আয়োজিত এই আলোচনা সভায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর জিয়াউর রহমান যেমন খুনিদের পুরস্কৃত করেছিলেন, তার স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াও ক্ষমতায় এসে একই ঘটনা ঘটিয়েছেন। জিয়া যেমন জাতির পিতা হত্যার সাথে জড়িত, জাতীয় চার নেতাকে হত্যার সাথে জড়িত, একের পর এক ক্যু করে সেনাসদস্যদের হত্যা করেছে, মুক্তিযোদ্ধা অফিসারদের হত্যা করেছে... খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে ঠিক একই কাজ করেছে।

তিনি আরো বলেন, জিয়াউর রহমান যেমন সেই আবদুল আলিম থেকে শুরু করে মাওলানা মান্নান থেকে শুরু করে শাহ আজিজ থেকে শুরু করে তাদেরকে মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী ও উপদেষ্টা বানিয়েছিল, একইভাবে আমরা দেখেছি খালেদা জিয়া সেই নিজামী থেকে শুরু করে যারা যারা একেবারে সরাসরি বুদ্ধিজীবী হত্যার সাথে জড়িত ছিল, তাদেরকে মন্ত্রী বানিয়েছিল, খুনি রশীদ ও হুদা- তাদের ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে ভোট চুরি করে পার্লামেন্টে এনে বিরোধী দলের নেতার আসনে বসায়।

বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের মানুষের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ যে, তারা বারবার আমার ওপর আস্থা রেখেছেন। আমাদেরকে ভোট দিয়েছেন, তাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীতে আমাদের একটাই লক্ষ্য থাকবে, যাতে দেশের একটি মানুষও গৃহহীন না থাকে। প্রতিটি মানুষকে অন্তত আমরা একটা মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দেবো।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ঘটনা তুলে ধরতে গিয়ে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি দেশের দায়িত্ব নিয়ে তিনি যেভাবে দেশকে পরিচালনা করছিলেন, তখন প্রয়োজন ছিল দেশের সব মানুষের একাত্ম হয়ে তার পাশে দাঁড়ানো ও সহযোগিতা করা। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য যে, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার প্রক্রিয়া শুরুর ক্ষেত্রে দেখা গেছে- আমাদের দলের অভ্যন্তরে নানা খেলা শুরু হয়। যারা মুক্তিযুদ্ধের সময় দালালি করতে চেয়েছিল, তারা সমালোচনা মুখর হয়।

তিনি আরো বলেন, সমালোচনার প্রয়োজন আছে। কিন্তু এমনভাবে তাদের লেখনী ও কার্যকলাপ ছিল, (দৃশ্যত) পরিকল্পিতভাবে সারাদেশে অপবাদ ছড়ানো হয়েছিল। তাদের উদ্দেশ্য ছিল জাতির পিতার জনপ্রিয়তা নস্যাৎ করা। কিন্তু তারা যখন সেটা পারেনি, তখন হত্যার পথ বেছে নেয়।

করোনাভাইরাস মহামারি নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাস সারা বিশ্বকে বলতে গেলে স্থবির করে দিয়েছে। এর প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে। এই প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেও আমরা দেশকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছি।