
নোয়াখালী জেলা পরিষদ প্রধান নির্বাহী ড. মাহে আলম ও প্রকৌশলী আব্দুর রহমানের অনিয়ম আর দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ রয়েছে, লক্ষীপুর কমল নগরের বাসিন্দা ড. মাহে আলম বছরের পর বছর ধরে জেলা পরিষদের নির্বাহী পদে বহাল তবিয়তে রয়েছেন। একবার জেলা পরিষদ কার্যালয় থেকে সাভার লোক প্রশাসন কেন্দ্রে বদলি হলেও, উপর মহলে তদবির করে নোয়াখালীতে স্বপদে পুনরায় চলে আসেন। এছাড়া, নিয়োগ বানিজ্য, প্রকল্প পাশ, জায়গা বন্দোবস্ত, মসজিদ, মাদরাসা ও এতিমখানার অনুদান, ঠিকাদারদের কাজের বিল পাশ করতে কমিশনের নামে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, তার অনিয়মের ফিরিস্তির মধ্যে মসজিদ, মাদরাসা, শ্মশান, অযুখানা, এতিমখানার অনুদানের চেক নিতে লাখে ৭ থেকে ১০ হাজার টাকা দিতে হয়। বিভিন্ন প্রকল্প পাশ করাতে দালালের মাধ্যমে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা দিতে হয়। টাকা পেলে অনেকের ব্যক্তিগত ঘরের পথ, পুকুর ঘাট, টয়লেটও নিমার্ণ করে দেন জেলা পরিষদের অর্থে।
এদিকে, জেলা পরিষদের টাকা সরকারি ব্যাংকে না রেখে ২% সুবিধা নেয়ার জন্য সুবর্ণচর ও সেনবাগে বেসরকারি ওয়ান ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংকে টাকা এফডিআর করে রাখেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
অন্যদিকে, বেগমগঞ্জের চৌরাস্তা ও সোনাইমুড়িতে ২টি মার্কেটের কাজ ব্যক্তিগতভাবে লাভবান না হওয়ায় এখনো কাজ শুরু করেননি। সূত্র জানায়, প্রকল্প স্থান পরিদর্শন না করেও মাসে ৮/১০ হাজার টাকা ভ্রমণ ভাতা উত্তোলন করছেন এই প্রধান নির্বাহী।
এর আগে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে উচ্চমান সহকারী, হিসাবরক্ষকসহ ৩জন লোককে তার পছন্দ মাফিক নিয়োগ দিতে চেষ্টা করেন। তবে, ঘটনা প্রকাশ্যে এলে স্থানীয়রা কার্যালয় ঘেরাও করে। পরে তোপের মুখে তাদের নিয়োগ বাতিল করতে বাধ্য হন তিনি।
স্থানীয়রা জানান, মসজিদ, মাদরাসা, এতিমখানা, মন্দির ছোট প্রকল্পের ৭/১০ পারসেন্ট টাকা নগদে না পেলে ফাইল টেবিলে পড়ে থাকে। জেলা পরিষদের কাজকর্মে সংশ্লিষ্টরা হয়রানির কারনে চেকের জন্য আর আসেনা। লোকজন এ নিয়ে নির্বাহীর কাছে অভিযোগ দিলে নানা অজুহাতে পার করে দেন।
এদিকে, নির্বাহী ও প্রকৌশলীর অনিয়ম, হয়রানি, দুর্নীতির বিষয়ে জেলা পরিষদের সভায় জোরালোভাবে আলোচিত হলে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস পাওয়া যায়। তবে বাস্তবে এখন পর্যন্ত এর কোন ফল পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, অভিযোগ রয়েছে জেলা পরিষদের হিসাবরক্ষক তারেক নির্বাহীর আসকারায় রাতে কার্যালয়ে বসতেন আর ডাকবাংলায় মাদক সেবন করতেন। একপর্যায়ে জেলা পরিষদের ১কোটি টাকা দপ্তরের সিন্ডিকেটের মাধ্যমে আত্মসাৎ করে বর্তমানে জেলে আছেন।
তবে প্রধান নির্বাহী ড. মাহে আলম এ সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি জানান, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী জেলা পরিষদ সকল কার্য সম্পাদন করা হচ্ছে।