মাদক নিরাময় কেন্দ্রের কর্মীদের মারধরে রোগীর মৃত্যু
আটক ৫

বরিশাল প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১১:৫৪

বরিশাল নগরীতে চিকিৎসার জন্য মাদক নিরাময় কেন্দ্রে নেয়ার সময় মো. সুমন খান (৩৫) নামে এক মানসিক রোগীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় ড্রিমলাইফ মাদকাসক্তি ও মানসিক রোগ চিকিৎসা কেন্দ্রের পরিচালকসহ পাঁচজনকে আটক করেছে র্যাব। তাছাড়া গতকাল বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) রাতে এই ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে।
এর আগে গতকাল সন্ধ্যার দিকে বরিশাল নগরীর ২৫ নম্বর ওয়ার্ডস্থ রূপাতলী বাংলাদেশ বেতার বরিশাল (রেডিও সেন্টার) এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। সুমন একই এলাকার বাসিন্দা মো. সাত্তার খানের পুত্র।
স্থানীয় ও নিহতের পরিবারের অভিযোগ, চিকিৎসা কেন্দ্রটিতে চিকিৎসার নামে রোগীদের শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়। এমনকি কেন্দ্রটিতে প্রকৃত চিকিৎসক আছেন কিনা তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তারা।
জানা গেছে, সুমন দীর্ঘদিন যাবত মানসিক রোগে ভুগছিলেন। চিকিৎসার জন্য একই এলাকার ড্রিমলাইফ মাদকাসক্তি ও মানসিক রোগ চিকিৎসা কেন্দ্রে যোগাযোগ করা হয় পরিবারের পক্ষ থেকে। এর প্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানটি থেকে গতকাল বিকেলে পাঁচজন কর্মী সুমনকে নিতে যান। এসময় সুমনের সাথে প্রতিষ্ঠানটির কর্মীদের ধস্তাধস্তি হয়। এ কারণেই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ স্বজনদের।
সরেজমিনে নগরীর শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের মর্গে গিয়ে মৃতের মুখমণ্ডল, ডান হাত ও বাঁ পায়ে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে।
মৃতের ভাতিজা মো. শিবলী খান জানান, বুধবার বিকেল ৫টার দিকে চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে কয়েকজন কর্মী বাসায় যান সুমনকে সেখানে নিয়ে যাবার জন্য। সে সময় সুমন তাদের সাথে না যেতে চাইলে পরিবারের সকলের সামনে তাকে লাঠি দিয়ে মুখ, হাত ও পায়ে আঘাত করা হয়। এসময় পাটের বস্তা দিয়ে সুমনের মুখ চেপে ধরেন একজন। এতে শ্বাসরোধ হয়ে সুমন মারা যান।
ঘটনার পরপরই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক বাপ্পি সিকদার, কর্মী উজ্জ্বল সমাদ্দার, মো. রায়হান, বায়জিদ হোসেন ও আবুল কালাম নামের পাঁচকর্মীকে আটক করে র্যাব-৮ এর সদস্যরা।
এ প্রসঙ্গে বরিশাল মহানগরীর কোতয়ালী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফিরোজ আল মামুন বলেন, মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। তাছাড়া এই ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই নোমান খান বাদী হয়ে কোতয়ালী মডেল থানায় রাতেই একটি মামলা দায়ের করেছেন।
মামলায় পাঁচজনকে নামধারী আসামি করা ছাড়াও বেশ কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। নামধারী আসামিরা র্যাব-৮ কর্তৃক আটক হয়েছে বলেও জানিয়েছেন কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশের ওই কর্মকর্তা।
এদিকে স্থানীয়রা জানান, ওই চিকিৎসা কেন্দ্রটিতে কোনো চিকিৎসক নেই। এছাড়া সেখানকার কর্মীদের হাতে নির্যাতনের এই ঘটনা এটাই প্রথম নয় বলেও জানান তারা।