Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

বাংলাদেশে করোনার রূপান্তর সবচেয়ে বেশি

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৮:৫৮

বাংলাদেশে করোনার রূপান্তর সবচেয়ে বেশি

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের রূপ পরিবর্তনের হার সবচেয়ে বেশি। বিশ্বে করোনার রূপান্তরের হার ৭ দশমিক ২৩ শতাংশ, সেখানে বাংলাদেশে রূপান্তরের হার ১২ দশমিক ৬০ শতাংশ।

গবেষকেরা বলেন, করোনাভাইরাসে মোট ২৮টি প্রোটিন থাকে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে স্পাইক প্রোটিন, যার মাধ্যমে বাহককে আক্রমণ করে। 

করোনার নমুনা বিশ্লেষণ করে তারা দেখেছেন, স্পাইক প্রোটিনে ৬১৪তম অবস্থানে অ্যাসপার্টিক এসিডের পরিবর্তন হয়ে গ্লাইসিন হয়েছে। এতে ‘জি৬১৪’ নম্বর ভ্যারিয়েন্টটি শতভাগ ক্ষেত্রে আধিপত্য বিস্তার করেছে। এই আধিপত্যের কারণে দেশে করোনা সংক্রমণ বেশি হচ্ছে।

বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আফতাব আলী শেখ দেশের আট বিভাগ থেকে সর্বমোট ২৬৩টি জিনোম সিকোয়েন্সিং ডাটা বিশ্লেষণ করে গতকাল রবিবার (৬ সেপ্টেম্বর) এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য প্রকাশ করেন।

এ সময় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানসহ বিসিএসআইআর জিনোমিক রিসার্চ ল্যাবরেটরির গবেষকরা উপস্থিত ছিলেন।

বিসিএসআইআরের জিনোমিক রিসার্চ ল্যাবরেটরি কভিড-১৯ জিনোম সিকোয়েন্সিং প্রতিবেদন অবহিতকরণ সভায় অধ্যাপক ড. আফতাব জানান, বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণও মিউটেশনের জিনগত বৈশিষ্ট্য, নন-সিনোনিমাস মিউটেশন ও জেনোমিক ফাইলোজেনি পর্যবেক্ষণ করে দেশে পাঁচ ধরনের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। যা বিশ্বের অন্য কোথাও পাওয়া যায়নি। 

তিনি বলেন, দেশের আট বিভাগ থেকে সর্বমোট ২৬৩টি জিনোম সিকোয়েন্সিং ডাটা বিশ্লেষণ করা হয়। যা গত মে মাসের ৭ তারিখ থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত এসব ডাটা সংগ্রহ করা হয়।

গবেষণার উদ্দেশ্য ছিল ভাইরাসের সংক্রমণ, মিউটেশনের হার, জিনগত বৈচিত্র, নন-সিনোনিমাস মিউটেশন ও জিনোমিক ফাইলোজেনি পর্যবেক্ষণ করা। গবেষণার ফলাফলকে কভিড-১৯ মহামারি রোধে কার্যকর ভূমিকা পালনে ব্যবহার করা। সংগৃহীত নমুনায় শতভাগ ক্ষেত্রে আধিপত্যকারী ভ্যারিয়েন্ট জি-৬১৪ এর উপস্থিতি পাওয়া গেছে। ২৬৩টি সার্স কোভ ২ জিনোম বিশ্লেষণে ৭৩৭ পয়েন্টে মিউটেশন পাওয়া গেছে, যার মধ্যে ৩৫৮ নন-সিনোনিমাস অ্যামিনো এসিড প্রতিস্থাপন ঘটায়। 

প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে বার্ষিক মিউটেশনের হার ২৪ দশমিক ৬৪ নিউক্লিওটাইড। স্পাইক প্রোটিনের জিনে ১০৩টি নিউক্লিওটাইড মিউটেশনের মধ্যে ৫৩টি নন-সিনোনিমাস অ্যামিনো এসিড প্রতিস্থাপন ঘটে যার মধ্যে পাঁচটি স্বতন্ত্র যা বিশ্বে আর কোথাও নেই। সংগৃহীত নমুনায় শতভাগ ক্ষেত্রে চারটি মিউটেশন পুনরাবৃত্তি লক্ষণীয়। 

গবেষণার ফলাফল প্রিন্ট আকারে প্রকাশিত হয়েছে। কয়েকটি রিসার্চ পেপার শিগগিরই আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হবে। 

চীনা প্রতিষ্ঠান সিনোভাক রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান মর্ডানা, দ্য ইউনির্ভাসিটি ও অক্সফোর্ডসহ কভিড-১৯ ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করা ৫০টি প্রতিষ্ঠানে প্রতিবেদন প্রেরণ করা হয়েছে। যা বাংলাদেশের কভিড-১৯ উপযোগী ভ্যাকসিন উৎপাদনে সহায়তা করবে এবং বিসিএসআইআর তার অংশীদার হওয়ার গৌরব অর্জন করবে বলে দাবি করেছে 

অনুষ্ঠানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান বলেন, ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স এখন খুব গুরুত্বপূর্ণ, টিকা বা ভ্যাকসিন তৈরির জন্য। কিন্তু টিকা বা ভ্যাকসিন এসে গেলেও আমরা এই সিকোয়েন্সিং বন্ধ করব না। আমরা এটা চালিয়ে যাব। কারণ জিনোম সিকোয়েন্স করে আমরা আরো নতুন নতুন রোগের সন্ধানও পেতে পারি।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫