
আজ ৮ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) ‘আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস’। করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও এদিন সীমিত পরিসরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস।
ইউনেস্কোর উদ্যোগে ১৯৬৬ সালের ৮ সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মতো দিবসটি পালন করা হয়।
এ বছরে ইউনেস্কো কর্তৃক প্রতিপাদ্য হলো: ‘কভিড-১৯ সংকট: সাক্ষরতা শিক্ষায় পরিবর্তনশীল শিখন-শেখানো কৌশল ও শিক্ষাবিদদের ভূমিকা’।
স্বাধীন বাংলাদেশে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস উদযাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় সরকার প্রতিবছর আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে পালন করে আসছে।
এ বছরও কভিড-১৯ মহামারির কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সংক্ষপ্তভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কার্যালয় থেকে জানানো হয়, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোতে (বিএনএফই) আজ বেলা ১১টায় স্বল্পপরিসরে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া এ উপলক্ষে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ব্যানার, পোস্টার সাটানো হবে।
আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস পালনের তথ্য ও কর্মসূচি জানানোর জন্য গত রবিবার রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেছেন, দেশে বর্তমানে সাক্ষরতার হার ৭৪.৭০ শতাংশ। এক বছরের ব্যবধানে দেশে সাক্ষরতার হার দশমিক ৮ শতাংশ পয়েন্ট বেড়ে ৭৪.৭০ শতাংশ হয়েছে। গতবছর দেশে সাক্ষরতার হার ছিল ৭৩.৯০ শতাংশ। সরকারের নিরলস প্রচেষ্টায় দেশে বর্তমানে সাক্ষরতার হার বেড়েছে। আর ২০০৫ সালে তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় সাক্ষরতার হার ছিল ৫৩.৫০ শতাংশ।
তিনি বলেন, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর আওতায় বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ নিরক্ষরকে সাক্ষরতা জ্ঞান প্রদান করা হয়। সাক্ষরতা বিস্তারে এ বিশাল অর্জনের জন্য বাংলাদেশ সরকার ইউনেস্কো কর্তৃক স্বীকৃতিস্বরূপ ‘আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা পুরস্কার ১৯৯৮’ লাভ করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের পক্ষ থেকে এ পুরস্কার গ্রহণ করেন। ‘সবার জন্য শিক্ষা’ ও ‘সহস্রাব্ধ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাসমূহ’ সাফল্যজনকভাবে অর্জনের জন্য ২০১৪ সালে ইউনেস্কো মহাসচিব ইরিনা বোকোভা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘শান্তি বৃক্ষ’ পদক প্রদান করেন।
এছাড়া মৌলিক সাক্ষরতা প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের ২৫০টি উপজেলার ১৫ থেকে ৪৫ বছর বয়সী ৪৫ লাখ নিরক্ষরকে সাক্ষরজ্ঞান দেয়া হচ্ছে বলে জানান জাকির হোসেন।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রথম পর্যায়ে ১৩৪টি উপজেলায় শিখন কেন্দ্রের মাধ্যমে ২৩ লাখ ৫৯ হাজার ৪৪১ জন নিরক্ষরকে সাক্ষরতা প্রদান করা হয়েছে। মুজিববর্ষ উপলক্ষে আরো ২১ লাখ নিরক্ষরকে সাক্ষরতা প্রদান করার কার্যক্রম চলমান আছে।
দারিদ্র্য, অনগ্রসরতা, শিশুশ্রম, ভৌগলিক প্রতিবন্ধকতার কারণে এখনো অনেক শিশু বিদ্যালয়ের বাইরে রয়েছে জানিয়ে গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বলেন, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যবস্থায় এসব শিশুর প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য একটি প্রকল্পের (পিইডিপি-৪) আওতায় ৮-১৪ বছর বয়সী বিদ্যালয় বহির্ভূত ১০ লাখ শিশুকে উপানুষ্ঠানিক প্রাথমিক শিক্ষা দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। -বাসস