সোহরাওয়ার্দীতে পরিচালকের কক্ষ ঘেরাও চিকিৎসকদের

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২৩:০৬

হোটেলে কোয়ারেন্টিন সুবিধা বাতিল করায় রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কভিড ইউনিটে দায়িত্ব পালনকারী চিকিৎসকরা নিরাপদ আবাসন নিশ্চিতের দাবিতে পরিচালকের কার্যালয় ঘেরাও করেন।
হাসপাতালের পরিচালক উত্তম কুমার বড়ুয়াকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটামও দেয় তারা। দাবি আদায় না হলে কভিড ইউনিটে দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকার হুমকিও দেন চিকিৎসকরা।
হোটেলে কোয়ারেন্টিন সুবিধা বাতিল করায় শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া, উপ-পরিচালক ডা. মামুন মোর্শেদ ও মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ও কভিড ইউনিটের সমন্বয়ক অধ্যাপক ডা. শাহাদাৎ হোসেন রিপনের কক্ষ ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন চিকিৎসকরা।
কভিড ইউনিটে কাজ করা একাধিক ডাক্তার জানান, ইতিমধ্যেই চিকিৎসকদের পরিবারের একাধিক স্বজন আক্রান্ত হয়েছেন। মারাও গেছেন তিনজন চিকিৎসকের আত্মীয়। এতদিন আবাসিক হোটেলের সুবিধা থাকলেও হঠাৎ করেই চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের সেই সুবিধা বন্ধ করে দেয়া হয়।
চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের আবাসিক হোটেলের বিল পরিশোধ না করার সিদ্ধান্ত নেয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। এ অবস্থায় চিকিৎসকরা জানান হাসপাতাল থেকে কোয়ারেন্টিনে না গিয়ে সরাসরি বাসায় গেলে পরিবারের সদস্যরা ঝুঁকিতে থাকবেন।
পরে হাসপাতাল পরিচালক উত্তম কুমার বড়ুয়ার কক্ষ ঘেরাও করা হলে তিনি বিষয়টি স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশিদ আলমকে ফোন করে জানান। কিন্তু মহাপরিচালকও তাৎক্ষণিকভাবে কোনও সমাধান দিতে পারেননি। আর বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থার আশ্বাস দিলে আন্দোলনরত চিকিৎসকরা পরিচালকের কক্ষ ত্যাগ করেন।
নতুন করোনাভাইরাস অত্যন্ত ছোঁয়াচে বলে রোগীদের চিকিৎসায় নিয়োজিত স্বাস্থ্যকর্মীদের ঝুঁকি থাকে সবচেয়ে বেশি। কাজ শেষে বাড়ি ফিরলে তাদের মাধ্যমে পরিবারেও এ ভাইরাস ছড়ানোর ঝুঁকি থাকে।
সে কারণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল অনুযায়ী, হাসপাতালে কভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসায় নিয়োজিতদের একটি নির্দিষ্ট সময় কাজ করার পর নির্দিষ্ট সময় কোয়ারেন্টিনে থাকার কথা। তাই দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর পর গত ১২ এপ্রিল রাজধানীর ছয়টি সরকারি হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীদের থাকার জন্য ১৯টি হোটেল নির্ধারণ করে দিয়েছিল সরকার।
কিন্তু গত ২৯ জুলাই স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেয়, স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য নির্ধারিত আবাসিক হোটেলের বিল আর পরিশোধ করা হবে না। চিকিৎসকদের জন্য বরাদ্দ হোটেলের সুবিধাও বাতিল করা হয়।
তবে ঢাকায় দায়িত্ব পালনকারী চিকিৎসকরা দৈনিক দুই হাজার টাকা, নার্সরা ১ হাজার ২০০ টাকা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীরা ৮০০ টাকা করে ভাতা পাবেন বলে জানানো হয় ওই পরিপত্রে।