অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের জানাজা ও দাফন আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১০:৫৮

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের জানাজা ও দাফন আজ।
শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের মরদেহ আজ সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি প্রাঙণে নেয়া হবে। সেখানে জানাজা শেষে মরদেহ মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থনে দাফন করা হবে।
এর আগে, গতকাল রবিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএসএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা সাতটা ২৫ মিনিটে মারা যান তিনি।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের ছেলে সুমন মাহমুদ মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করেন। এদিকে, অ্যাটর্নি জেনারেলের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ সেপ্টেম্বর জ্বর নিয়ে সিএমএইচে ভর্তি হন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। সেখানে নমুনা পরীক্ষায় তার শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এর মধ্যে গত শুক্রবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ভোরে হার্ট অ্যাটাক হলে তাকে দ্রুত আইউসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। রোববার (২০ সেপ্টেম্বর) তার পরিবার জানিয়েছিল, করোনামুক্ত হওয়ার পর তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। কিন্তু করোনাভাইরাস ও হৃদরোগের ধাক্কা নিতে পারেনি প্রবীণ এই আইনজীবী।
১৯৭৫ সাল থেকে হাইকোর্টে আইন পেশায় যুক্ত মাহবুবে আলম। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিতে সভাপতির পদেও দায়িত্ব পালন করেছেন । ২০০৯ সালের ১৩ জানুয়ারি বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্বে নিযুক্ত হন তিনি। ২০১৪ সালের ১৩ জানুয়ারি অ্যাটর্নি জেনারেল পদে পাঁচ বছর পূর্ণ হয় তার। এরপর আরেক দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে তাকে এই পদে বহাল রাখা হয়। আমৃত্যু তিনি এই দায়িত্ব পালন করেছেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে এত দীর্ঘ মেয়াদে আর কোনো অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্ব পালনের রেকর্ড নেই।
১৯৪৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মৌছামান্দ্রা গ্রামে জন্ম মাহবুবে আলমের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক ও লোকপ্রশাসনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেওয়ার পর একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রিও নেন তিনি। ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে অ্যাডভোকেট হিসেবে নিবন্ধিত হন মাহবুবে আলম। পরে ১৯৭৫ সাল থেকে হাইকোর্টে কর্মরত তিনি। পরে ১৯৮০ সালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে প্র্যাকটিসের অনুমতি পান। এর মধ্যে নয়া দিল্লির ইনস্টিটিউট অব কনস্টিটিউশনাল অ্যান্ড পার্লামেন্টারি স্টাডিজ থেকে সংবিধান ও সংসদীয় আইন বিষয়ে ডিপ্লোমা ডিগ্রি নেন।
কর্মজীবনে দক্ষতা ও সাফল্যে মাহবুবে আলম ‘সিনিয়র অ্যাডভোকেট’ হিসেবে স্বীকৃতি পান ১৯৯৮ সালে। ওই বছরের ১৫ নভেম্বর থেকে ২০০১ সালের ৪ অক্টোবর পর্যন্ত অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৯৩-৯৪ মেয়াদে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও ২০০৫-০৬ মেয়াদে সংগঠনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন মাহবুবে আলম।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলা; সংবিধানের পঞ্চম, সপ্তম ও ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলা; বিশেষ করে কাদের মোল্লা, দেলোয়ার হোসেন সাঈদী, মো. কামারুজ্জামান, আলী আহসান মুজাহিদী, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মতো মানবতাবিরোধী অপরাধীদের মামলা; পিলখানা হত্যাকাণ্ড মামলার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন মামলা রাষ্ট্রপক্ষে পরিচালনা করেছেন মাহবুবে আলম।