সংগীতশিল্পী ফেরদৌস ওয়াহিদের ভাতিজি মুশফিকা ও মোবাশ্বেরাকে নিরাপত্তা দিতে গুলশান থানা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

আজ মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

একইসাথে তাদের বাবা মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের গুলশান-২ এর ৯৫ নম্বর সড়কের বাসার মালিকানা সংক্রান্ত নথিপত্র হলফনামা আকারে ৯ নভেম্বরের মধ্যে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

পাশাপাশি ওই বাড়িতে বিনা বাধায় আত্মীয়-স্বজনের প্রবেশ নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। আগামী ৯ নভেম্বর এই মামলায় পরবর্তী আদেশ দেবেন আদালত।

এর আগে গত ২৬ অক্টোবর ওই দুই বোনকে তাদের বাবার বাসায় অনতিবিলম্বে প্রবেশ নিশ্চিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। ছুটির দিনে কোর্ট বসিয়ে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন। ওই রাতে গুলশান থানার পুলিশ তাদেরকে বাবার বাসায় তুলে দেন।

আদালত ওই দিন গুলশান থানার ওসিসহ ১ নভেম্বর দুই মেয়ে ও ওই বাড়িতে থাকা আঞ্জু কাপুরকে নিয়ে ৩ নভেম্বর হাইকোর্টে হাজির হতে বলেন। 

পরে আজ সকালে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসানত, দুই বোন মুশফিকা মোস্তফা ও মোবাশশেরা মোস্তফা এবং তাদের সৎমা অঞ্জু কাপুর আদালতে উপস্থিত হন। তারপর আদালত এ আদেশ দেন।

আদালতে আজ দুই বোনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। অঞ্জু কাপুরের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মাসুদ আর সোবহান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহজাবিন রাব্বানী দীপা।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমিন উদ্দিন মানিক জানান, গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের বাড়িটি প্রায় ১০ কাঠা জমির ওপর। গৃহকর্তার মৃত্যুর পর এর মালিকানা নিয়ে বিরোধের কারণে তার দুই মেয়ে অবস্থান নিয়েছেন বাড়ির সামনে। ওই দুই বোনের দাবি, বাড়ির দখল তাদের বাবার দ্বিতীয় স্ত্রী আঞ্জু কাপুরের হাতে। তিনি কিছুতেই ওই বাড়িতে তাদের ঢুকতে দিচ্ছেন না। ১০ অক্টোবর মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের মৃত্যু হয়। মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদ পাইলট ছিলেন। তার ভাই-বোনদের মধ্যে সংগীতশিল্পী ফেরদৌস ওয়াহিদ ছাড়া আর কেউ বাংলাদেশে নেই। দুইদিন ধরে বাড়ির সামনে অবস্থান নেন মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের দুই মেয়ে মুশফিকা ও মোবাশ্বেরা। তারা বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।

মুশফিকা গণমাধ্যমকে বলেছেন, ১৯৮৪ সালে তার বাবা-মা গুলশানের ওই বাসায় সংসার শুরু করেছিলেন। দুই বোনের জন্মও এই বাড়িতে। ২০০৫ সালে তাদের মা–বাবার বিচ্ছেদ হয়। পরে আঞ্জু কাপুর নামের এক ভারতীয় নারীকে বিয়ে করেন তাদের বাবা। আঞ্জু কাপুর এখন এই বাড়ির ভোগদখল করছেন।