‘নারী হিসেবে’ জামিন চাইলেন সাবরিনা, হাইকোর্টের খারিজ

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২০, ২০:০৯

জেকেজি হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা আরিফ। ফাইল ছবি
নভেল করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) নমুনা পরীক্ষা না করে ভুয়া রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগে জেকেজি হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরীর জামিন আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আজ মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) বিচারপতি রেজাউল হক ও বিচারপতি মো. আতাউল গনির সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে ডা. সাবরিনার পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনসুরুল হক চৌধুরী; সঙ্গে ছিলেন মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম রিপন। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দীন খালিদ।
সাবরীনার আইনজীবী মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম রিপন বলেন, ‘আমরা শুনানিতে বলেছি ডা. সাবরিনা একজন সরকারি কর্মকর্তা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে রয়েছেন। জেকেজি হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান বলা হলেও তার স্বামী ছিল মূলত এটার মালিকানায়। ডা. সাবরিনার কোনো মালিকানা ছিলো না। নারী বিবেচনায় আমরা জামিন চেয়েছি।’
অপরদিকে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দীন খালিদ বলেন, নভেল করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) নমুনা পরীক্ষা না করে ভুয়া রিপোর্ট দেওয়ার সুস্পস্ট অভিযোগ রয়েছে জেকেজি হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরীনা চৌধুরীর বিরুদ্ধে। একজন সরকারি কর্মচারী হয়েও মানুষের জীবন নিয়ে ডা. সাবরিনা প্রতারণা করেছেন। তাকে জামিন দেওয়া হলে প্রতারণাকে উৎসাহিত করা হবে। শুনানি শেষে আদালত জামিন উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করেছেন।
নভেল করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) নমুনা পরীক্ষা না করে ভুয়া রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগে গত ২৩ জুন সাবরিনার স্বামী আরিফ চৌধুরীসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। এরপর ১২ জুলাই সাবরিনাকে তেজগাঁও বিভাগীয় উপপুলিশ (ডিসি) কার্যালয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে করোনার ভুয়া রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগে তেজগাঁও থানায় করা মামলায় গ্রেফতার দেখায় পুলিশ।
ডা. সাবরিনার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা ও ইসির করা মামলাসহ কয়েকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সেসব মামলায় তাদের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনি কারাগারে আটক রয়েছেন।
করোনা পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগে জেকেজি হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা চৌধুরীসহ আটজনের বিরুদ্ধে গত ৫ আগস্ট অভিযোগপত্র দেয় তদন্ত কর্মকর্তা। পরের দিন ৬ আগস্ট এ মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়। এরপর এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়।
এ মামলায় ডা. সাবরীনা ও আরিফ চৌধুরী ছাড়া অপর ছয় আসামিরা হলেন- শফিকুল ইসলাম রোমিও, জেবুন্নেসা, আবু সাঈদ চৌধুরী, হুমায়ূন কবির হিমু, তানজিলা পাটোয়ারী ও বিপ্লব দাস।
অভিযোগপত্রে ডা. সাবরীনা ও আরিফ চৌধুরীকে এই অসাধুচক্রের ‘মূলহোতা’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বাকিরা প্রতারণা ও জালিয়াতি করতে তাদের সহযোগিতা করেন বলে বলা হয়েছে।