দণ্ডিত আসামি জেলে নয়, থাকবেন বাড়িতে: হাইকোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮ নভেম্বর ২০২০, ১২:৪৫

মতি মাতবর। ছবি: সংগৃহীত
মাদক মামলায় ৫ বছরের সাজাপ্রাপ্ত শরীয়তপুরের মতি মাতবর জেলে নয়, থাকবেন পরিবারের সাথে। তবে মানতে হবে কয়েকটি শর্ত।
তাকে কারাগারে না পাঠিয়ে বাড়িতে প্রবেশনে পাঠিয়ে সংশোধনের সুযোগ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সমাজ সেবা অধিদফতরের অধীনে দেড় বছর প্রবেশনে থাকাকালীন তাকে তিনটি শর্ত পালন করতে হবে।
আজ রবিবার (৮ নভেম্বর) বিচারপতি জাফর আহমেদের হাইকোর্টের একক বেঞ্চ এক রিভিশন মামলায় এ আদেশ দেন।
রায়ে প্রবেশনের সুযোগ চেয়ে করা আবেদন গ্রহণ করে আসামির রিভিশন খারিজ করে দিয়েছেন। যেটি বিশেষ আইনে প্রথম রায় বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
মতিকে যে শর্তগুলো মানতে হবে- ৭৫ বছরের বৃদ্ধ মায়ের যত্ন নিতে হবে। দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে ও দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়া ছেলের লেখাপড়া চালিয়ে নিতে হবে। আইন অনুসারে নির্ধারিত বয়সের আগে মেয়েকে বিয়ে দিতে পারবেন না। এসব শর্ত না মানলে তাকে জেলে যেতে হবে।
আদালতে আসামির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। তাকে সহযোগিতা করেন আইনজীবী মো. রুহুল আমীন ও অ্যাডভোকেট মো. আসাদ উদ্দিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এনামুল হক মোল্লা।
পরে আইনজীবী শিশির মনির বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে আসামি মতি মাতবরের ৫ বছরের সাজার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে দায়েরকৃত রিভিশন মামলার রায়ে আসামির সাজা বহাল রেখে প্রবেশন দেন। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রবেশন বিশেষ আইনে প্রথম রায়। যা অত্যন্ত আশাপ্রদ ও যুগান্তকারী।
মামলার বিবরণে জানা যায়, মতি মাতবর ও অপর এক আসামির কাছে ৪১১ পিস ও ৭০০ পিস ইয়াবা উদ্ধারের অভিযোগে ২০১৫ সালের ২৩ নভেম্বরে ঢাকার কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়। পুলিশ আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষে ২৪ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে চার্জশিট দাখিল করে। এই মামলায় ৮ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে যুগ্ম মহানগর হাকিম আদালত আসামিদের ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
উক্ত রায়ে সংক্ষুব্ধ হয়ে আসামিরা মহানগর দায়রা আদালতে ফৌজদারী আপিল করেন। ১১ মে ২০১৭ তারিখে আপিল শুনানি নিয়ে অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ, আদালত বিচারিক আদালতের রায় বহাল রাখেন।
পরে আসামি মতি মাতবর ১ জুলাই ২০১৭ তারিখে হাইকোর্ট বিভাগে রিভিশন মামলা করেন। রিভিশন মামলার শুনানি শেষে আদালত আসামিকে কারাগারে না পাঠিয়ে প্রবেশনে পাঠালেন। এই মামলার অপর আসামি পলাতক আছেন।