
‘শিশুদের নোবেল’খ্যাত আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরস্কার পেলেন বাংলাদেশের নড়াইলের সন্তান সাদাত রহমান। সাইবার অপরাধ থেকে শিশুদের সুরক্ষা নিয়ে কাজ করায় তিনি এ স্বীকৃতি পেয়েছেন। আজ শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) নেদারল্যান্ডসে এক ভার্চ্যুয়াল অনুষ্ঠানে সাদাতের নাম ঘোষণা করা হয়।
এ বছর ৪২টি দেশের ১৪২ শিশুর মনোনয়ন দেয়া হয়। সাদাতের সঙ্গে চূড়ান্ত তালিকায় স্থান পাওয়া অন্য দুইজন হলেন- মেক্সিকোর ইভান্না ওরতেজা সেরেট ও আয়ারল্যান্ডের সিয়েনা ক্যাস্টেলন।
১২ থেকে ১৮ বছর বয়সীরা ওই পুরস্কার পান। গত বছর সুইডেনের শিশু পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ ও ক্যামেরুনের ডিভিনা মালম যৌথভাবে এ পুরস্কার পান। এর আগে ২০১৩ সালে এই পুরস্কার পান মালালা ইউসুফজাই।
১৭ বছর বয়সী সাদাত নড়াইল আবদুল হাই সিটি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। সাদাত রহমান ও তার দল সাইবার বুলিং ও সাইবার ক্রাইম থেকে শিশু-কিশোরদের রক্ষায় নানা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। সাদাত সম্পর্কে কিডস রাইটসের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, সাদাত একজন ‘তরুণ চেঞ্জমেকার’ ও সমাজ সংস্কারক।
সাইবার বুলিংয়ের শিকার হয়ে এক কিশোরীর (১৫) আত্মহত্যার পর কাজে নামেন সাদাত। তিনি তার বন্ধুদের সহায়তায় ‘নড়াইল ভলেন্টিয়ারস’ নামের একটি সামাজিক সংগঠন শুরু করেন। এ সংগঠন বেসরকারি সংস্থা একশনএইডের ‘ইয়ুথ ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ–২০১৯’–এ বিজয়ী হয়ে তহবিল পায়। এ তহবিলের মাধ্যমে তারা ‘সাইবার টিনস’ মোবাইল অ্যাপ তৈরি করেন। এ অ্যাপের মাধ্যমে কিশোর–কিশোরীরা জানতে পারেন কীভাবে ইন্টারনেট দুনিয়ায় সুরক্ষিত থাকা যায়।
প্রায় ১ হাজার ৮০০ কিশোর–কিশোরী এই অ্যাপ ব্যবহার করছে। এ অ্যাপের মাধ্যেম ৬০টির বেশি অভিযোগের মীমাংসা হয়েছে এবং ৮ জন সাইবার অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিত হয়েছে।
উল্লেখ্য, ‘কিডস-রাইটস’ নামের একটি সংগঠন ২০০৫ সাল থেকে এ পুরস্কার দিচ্ছে। ইতালির রোমে অনুষ্ঠিত নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ীদের এক শীর্ষ সম্মেলন থেকেই এটি চালু হয়। শিশুদের অধিকার উন্নয়ন ও নিরাপত্তায় অসাধারণ অবদানের জন্য প্রতি বছর আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরস্কার দেয়া হয়।