হত্যা মামলার আসামির পলায়ন, ৫ পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০২০, ১৮:২১

সুনামগঞ্জে আদালতে হাজিরা দিতে আসা খুনের মামলার আসামি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পাঁচ পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ঘটনা খতিয়ে দেখা জন্য তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
পালিয়ে যাওয়া আসামির নাম ইকবাল হোসেন (৩৫)। সে দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের উস্তেংগের গ্রামের রমজান আলীর ছেলে। ২০১৭ সালের ১৩ জুন স্ত্রী মনোয়ারা বেগমকে হত্যার দায়ে তার বিরুদ্ধে খুনের মামলা হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে পুলিশের পক্ষ থেকে পাঁচ পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহারে বিষয়টি জানানো হয়েছে। পাশাপাশি কীভাবে আসামি পালিয়েছে, এতে কারও অবহেলা ছিলো কি না তা খতিয়ে দেখতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হায়াতুন নবীকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তদন্ত কমিটির বাকি দুই সদস্য হলেন, ডিআইও (ডিস্ট্রিক্ট ইন্টেলিজেন্ট অফিসার) ওয়ান আনোয়ার হোসেন মৃধা ও শহর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মাসুদ আহমেদ।
পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট একাধিক দায়িত্বশীলরা জানান, গত ২০১৭ সালের জুন মাসের স্ত্রী হত্যা মামলায় জেল হাজতে ছিলো ইকবাল হোসেন। ২০১৭ সালে ১৩ জুন স্ত্রীকে হত্যার পর পালিয়ে গেলে ২৫ দিন পর মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে সিলেট শহরে কোতয়ালি থানা এলাকায় থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
বুধবার (৯ডিসেম্বর) জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজিরা ছিলো তার। সুনামগঞ্জ শহরতলির হালুয়ারগাঁওয়ের জেলা কারাগার থেকে আদালতে হাজির করার জন্য নিয়ে আসে কোর্ট পুলিশ। দুপুরে আদালত শেষে কোর্ট হাজতে নেয়া হয়। কোর্ট হাজতে থাকাকালীন অবস্থায় পুলিশের চোঁখ ফাকি দিয়ে পালিয়ে যায়। এই বিষয়টি পুলিশের প্রথমে নজরে না আসলেও সন্ধ্যার পর অন্য আসামিদের ফিরিয়ে দেয়ার জন্য জেলা কারাগারে নেয়ার সময় গাড়িতে আসামি সংখ্যা একজন কম হলে বিষয়টি ধরা পড়ে। সন্ধ্যার পর অন্য আসামিদের ফিরিয়ে দেয়া হলেও ইকবাল হোসেনকে ফেরৎ দেয়া হয়নি। বিষয়টি পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসককে জানান জেলা সুপার।
পলাতক ইকবালকে ধরতে সুনামগঞ্জ জেলায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে পুলিশ। বিভিন্ন স্থানে চলছে খোঁজ-তল্লাশি।
এ ব্যাপারে জেল সুপার নূরশেদ আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, আমরা প্রতিদিন আসামিদের কোর্ট পুলিশের জিম্মায় দেই। পুলিশ আসামিদের কাভার্ড ভ্যানে করে কোর্ট নিয়ে যায়। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, একজন আসামি মিসিং। আমি জেলা প্রশাসককে বিষয়টি জানিয়েছি।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান জানান, আসামি গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তদন্ত কমিটিকে দ্রুত রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। তদন্তে যারা দোষী সাব্যস্ত হবেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি জানান, হাজিরা দেবার আগে পরে কোন এক সময় এই আসামি পালিয়ে গেছে।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ জানান, পুলিশ সুপার ও জেল সুপার আদালতে হাজিরা দেবার সময় আসামি পলায়নের খবর তাকে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তিনি এই বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন।