Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

মুখ খুললেন বদির প্রথম স্ত্রী দাবিদার সুফিয়া

Icon

কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৯ ডিসেম্বর ২০২০, ১৩:৫৫

মুখ খুললেন বদির প্রথম স্ত্রী দাবিদার সুফিয়া

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের বিতর্কিত সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদিকে পিতা দাবি করে আদালতে মো. ইসহাক (২৬) নামের এক যুবকের মামলা দায়েরের পর বদির বিষয়ে মুখ খুললেন ইসহাকের মা ও বদির প্রথম স্ত্রী দাবিদার সুফিয়া খাতুন।

সুফিয়ার দাবি, তিনিই সাবেক এমপি বদির প্রথম স্ত্রী। ১৯৯২ সালে ৫ এপ্রিল নিরাপত্তার কারণে বদিদের বাড়িতে আশ্রয়ে থাকা অবস্থায় গোপনে তাকে বিয়ে করেন আবদুর রহমান বদি। পরে বিষয়টি স্বজনদের মাঝে জানাজানি হলে গর্ভের ৬ মাসের সন্তানসহ স্থানীয় নির্মাণ মিস্ত্রি (রাজমিস্ত্রী) নুরুল ইসলামের সাথে তাকে জোরপূর্বক বিয়ে দেয়া হয়।

একই সাথে এ বিষয়ে মুখ খুললে সন্তানসহ সুফিয়াকে হত্যার হুমকি দেন স্বামী বদি ও তার শ্বশুর এজহার মিয়া (প্রকাশ) এজহার কোম্পানি।

এর আগে (১৩ ডিসেম্বর) বদিকে পিতা দাবি করে আদালতের দ্বারস্থ হন ওই যুবক। পাশাপাশি পিতৃপরিচয় নির্ধারণের জন্য ডিএনএ টেস্ট করার আবেদনও করেন ইসহাক। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে বদির বিরুদ্ধে সমন জারি করেন।

বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯২ সালের প্রথম দিকে তৎকালীন টেকনাফ ইউনিয়নের অলিয়াবাদে বসবাসরত সুফিয়াদের বাড়িতে বেশ কয়েকবার ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ওইসময় সুফিয়ার পিতা ছিলেন সৌদি আরবে। পুরুষশূন্য বাড়িতে মায়ের সাথে থাকতেন যুবতী সুফিয়া। বেপরোয়া ডাকাতির কারণে নিরাপত্তাহীনতায় ছিলেন তারা।

বিষয়টি ওই সময় তৎকালীন টেকনাফ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাবেক সাংসদ বদির বাবা এজহার মিয়াকে জানালে তিনি তার বাড়িতে আশ্রয় দেয়ার আশ্বাস দিয়ে সুফিয়াদের ঘরবাড়ি বিক্রি করে দিতে নির্দেশ দেন। তারাও চেয়ারম্যানের কথামতো বাড়িঘর বিক্রি করে দেন।

পরে বদিদের বাড়িতে বিচার কার্যক্রম চলতো এমন একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে তাদের আশ্রয় দেন বদির পিতা এজহার মিয়া।

সুফিয়া জানান, সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদিদের কাছে আশ্রয়ে থাকার সুবাদে বদির সাথে তার প্রতিদিন দেখা হতো, কথা হতো। একপর্যায়ে বদি একদিন তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। তিনি রাজি হয়ে যান।

পরে ১৯৯২ সালে ৫ এপ্রিল ইসলামিক রীতিনীতি অনুসারে বদির সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ে পড়ান আবদুর রহমান বদিদের পারিবারিক আবাসিক হোটেল নিরিবিলিতে তৎসময়ে কর্মরত মৌলভী আবদুস সালাম। বিয়ের সাক্ষী ছিলেন হোটেলের দারোয়ান এখলাছ।

কিন্তু বিয়ের কয়েকমাস পর বিয়ের বিষয়টি জেনে যান বদির পিতা এজহার মিয়া। তখন তার গর্ভের সন্তান ইসহাকের বয়স প্রায় ৬ মাস।

তিনি আরো জানান, ওই সময় প্রথমে গর্ভপাতের চেষ্টা করেন বদি। তাতে তিনি রাজি না হলে গর্ভের সন্তানসহ হত্যার হুমকি দিয়ে একজন রাজমিস্ত্রীর সাথে তার বিয়ে দেন সাবেক স্বামী আবদুর রহমান বদি ও বদির পিতা এজহার কোম্পানি।

তবে তখনো এসবের কিছুই জানতেন না বদির পিতার কথায় সুফিয়াকে বিয়ে করতে রাজি হওয়া সেদিনের সহজ সরল রাজমিস্ত্রী নুরুল ইসলাম।

সুফিয়া এখন তার ছেলে ইসহাকের পিতৃপরিচয় চায়। তার কোনো দাবি-দাওয়া নেই জানিয়ে ইসহাককে ছেলে হিসাবে মেনে নেয়ার জন্য সাবেক স্বামী বদির প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।

সুফিয়ার বর্তমান স্বামী নুরুল ইসলামের দাবি সাবেক এমপি বদি তার সাথে প্রতারণা করেছেন। তিনি বলেন, বদির পিতা এজহার মিয়া একদিন তাকে ডেকে বললেন, তোর জন্য একটা মেয়ে ঠিক করেছি। তখন অভিভাবক হিসেবে আমিও আর না করিনি। এসময় বদিও উপস্থিত ছিলেন। তিনিও সুফিয়াকে বিয়ে করতে তাকে অনুরোধ করেন এবং সবসময় পাশে থাকার প্রতিজ্ঞা করেন।

তবে বিয়ের দুইমাস পর জানতে পারি স্ত্রী সুফিয়া গর্ভবতী। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুফিয়া আমাকে সব খুলে বলেন। পরে বেশ কয়েকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেন সুফিয়া।

নুরুল ইসলাম বলেন, এমন একটা বাস্তবতা সামনে আসবে আমি কখনো কল্পনা করিনি। এই বাস্তবতা লুকিয়ে রাখতে কখনো কক্সবাজারে কখনো চট্টগ্রামে পরিবার নিয়ে পালিয়ে বেড়িয়েছি। আমিও সন্তান ইসহাকের স্বীকৃতি চাই। এসময় তিনি সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদিকে একজন প্রতারক বলে মন্তব্য করেন।

এ বিষয়ে জানতে আবদুর রহমান বদির ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার রিং দেয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫