পাহাড়তলীতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৮ ডিসেম্বর ২০২০, ১০:৪৫
-5fe962e09f99b.jpg)
ছবি: স্টার মেইল
অবশেষে দীর্ঘ দুই যুগ পর চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলী এলাকায় জোড় ডেবার প্রায় ২১.৪৮ একরের জলাশয়ের আশপাশজুড়ে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান শুরু করেছে রেলওয়ে।
তবে এ অভিযানে জলাশয়ের চারপাশ জুড়ে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হলেও অক্ষত থাকবে ডেবার পশ্চিম পাশে থাকা অবস্থিত মসজদটি। এমনটাই জানালন রেলওয়ের কর্মকর্তারা।
গতকাল রবিবার (২৭ ডিসেম্বর) সকাল থেকে শুরু হওয়া এ উচ্ছেদ অভিযান চলবে আজ সোমবারও (২৮ ডিসেম্বর)। এতে উচ্ছেদ করা হবে ডোবাটির আশপাশ জুড়ে গড়ে ওঠা এক হাজারের বেশি অবৈধ স্থাপনা।
রেলওয়ের জরিপ অনুযায়ী, পাহাড়তলী বাজার সংলগ্ন ওই বস্তিতে রয়েছে অনন্ত ১২’শর ঘর। এদের মধ্যে উচ্ছেদের প্রথম দিনে গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে প্রায় পাঁচ শতাধিক ঝুঁপড়ি ঘর, টিনশেড দোকান ও সেমিপাকা ঘর।
রেলওয়ের চট্টগ্রাম বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা মাহবুব উল করিমের নেতৃত্বে শুরু হওয়া টানা দুইদিনের এ উচ্ছেদ অভিযানে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীসহ (আরএনবি) রেলওয়ের কর্মকতারা উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে রেলওয়ের জমি জরিপ শাখার কর্মকর্তা আবদুস সালাম বলেন, ডোবাটির আশপাশ জুড়ে গড়ে ওঠা স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করা হলেও ধর্মীয় স্থাপনাগুলো বাদ দিয়ে এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে হঠাৎ শুরু হওয়া রেলওয়ের এ উচ্ছেদ অভিযানে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সেখানে বসবাসরত প্রায় দুই হাজারের বেশি পরিবার। উচ্ছেদের আগে তাদের কিছুই জানানো হয়নি বলে দাবি করেছেন তারা। বস্তির বাসিন্দা সুমন হোসেন (৫০) বলেন, ৪০ বছর ধরে এখানে থাকছি। উচ্ছেদের আগে কিছু বলে নাই। গতকাল রাতে কেয়ারটেকার এসে জানায় গেছে জিনিসপত্র সরাই (সরিয়ে) ফেলতে। সকালে আর কোনো সময় পায় নাই।
তবে উচ্ছেদের নোটিশের ব্যপারে ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা মাহবুবুল করিম সিভয়েসকে জানান, এখানে ইজারা দেয়া হয়েছে জলাশয়টি (জোড় ডেবাটি)। আমরা সেটি উচ্ছেদ করছি না। তার চারপাশজুড়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করছি। নোটিশ সেক্ষেত্রে দেয়া হয় যখন জমি ইজারায় থাকে। তবুও উচ্ছেদের বিষয়টি আগেই বাসিন্দাদের বলা হয়েছে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, ব্রিটিশ শাসনামলে নগরীর পাহাড়তলী এলকায় এই জলাধারটি তৈরি করে রেলওয়ে। যা পাহাড়তলী ‘হর্স-স্যু-ট্যাংক’ বা ‘জোড় ডেবা’ নামে পরিচিত। ২১.৪৮ একরের এই সুবিশাল জলধারটি মাছ চাষের জন্য ১৯৯৬ সালে ইজারা নেন স্থানীয় ব্যবসায়ী আবদুল হাই। দীঘির পাড় তখন থেকেই বেদখল হতে শুরু করে। এরপর ২০০২ সালে আবদুল হাই আরো পাঁচ বছরের জন্য দীঘির ইজারা পান। অবৈধ বস্তিঘর তখন আবারো বাড়ে।
পরে ঘটনাক্রমে দীঘির ইজারা পান আবদুল হাইয়ের ভাতিজা আবদুল লতিফ। যার সাথে পূর্ব রেলের একটি মামলা চলছে বলেও জানান রেলওয়ে কর্মকর্তারা।