
হারিয়ে যাওয়ার ভয়ে ৫০ বছর বয়সী সন্তানের পায়ে শেকল পরিয়ে রেখেছেন তার মা। গত বিশ বছর ধরে এভাবেই চলছে নেত্রকোনা কেন্দুয়ার মানসিক ভারসাম্যহীন আব্দুল মতিনের (৫০)।
মতি কেন্দুয়া উপজেলার পাইকুরা ইউনিয়নের দেওপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজ এর পুত্র। স্ত্রী সন্তানেরা মতির কোনো খোঁজ না নেয়াতে বর্তমানে সে অসহায় বৃদ্ধা মা ও তার বোন, ভাগ্নীর সাথে উপজেলার দীঘলকুর্শা গ্রামে ভগ্নিপতি মৃত আব্দুল হাই মিয়ার বাড়িতে গাছের সাথে শেকলবন্দি অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
স্থানীয়রা জানান, মতি এক সময় রাজমিস্ত্রীর কাজ করতো। কিন্তু হঠাৎ করেই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন তিনি। এরপর কিছুদিন নিখোঁজ থাকে অনেক কষ্টে তাকে খুঁজে বের করে তার পরিবার-পরিজনেরা। খুজেঁ পাওয়ার পর সন্তান হারানোর ভয়ে এখন পায়ে শেকল দিয়ে মতিকে গাছের সাথে তালা লাগিয়ে রাখে তা বৃদ্ধা মা। মানসিক ভারসাম্যহীন মতি মাঝে মাঝে স্বাভাবিক মানুষের মতোই আচরণ করে। আবার হঠাৎ ঘর-বাড়ি ভাংচুর করে। তবে বেশিরভাগ সময় মতি মানসিক ভারসাম্যহীন থাকায় তাকে গাছের সঙ্গে শেকল দিয়ে তালাবন্দি অবস্থায় বা এদিক সেদিক ঘোরাঘুরি করে অতিবাহিত করেছেন তার জীবনের বিশটি বছর।
এদিকে, মতি মিয়ার বৃদ্ধা মা জুহেলা খাতুন জানান, এমন এক সময় ছিলো আমার মতি রাজমিস্ত্রীর কাজ করে দৈনিক সাত শত টাকা কামাইত। আর এখন বিশ বছর ধইরা আমার ছেলে এমন পাগল রইছে। এখন আমি অর্থের অভাবে আমার এই পাগল ছেলেটারে ভালো কোনো চিকিৎসা করাতে পারছিনা। তার স্ত্রী সন্তানেরাও তার কাছ থেকে দূরে চলে গেছে। যদি কোন জায়গা থেকে সাহায্য সহযোগিতা পাওয়া যাইতো তাহলে আমার ছেলেরে চিকিৎসা করলে ভালো হইয়া যাইত।