যে কর্মকর্তাদের গাফিলতির কারণে প্রকল্প পরিকল্পনায় গলদ থেকে যাচ্ছে বা যাদের কারণে প্রকল্পের ব্যয় বাড়ছে, তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে এ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক সভায় অংশ নেন।

একনেক সভায় সংশোধনের জন্য উপস্থাপিত ‘পল্লী সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পটির মেয়াদ তিন বছর এবং ব্যয় ২ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা বৃদ্ধির প্রস্তাব আসায় প্রধানমন্ত্রী ওই নির্দেশনা দেন।

সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, প্রকল্পটির ব্যয় কেন বাড়ছে তা বিশ্লেষণে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মূল প্রকল্পে ডিজাইন ছিল না। কাদের গাফিলতির জন্য প্রকল্পের ডিজাইনটা ইনকারেক্ট হল, আমাদের সময়-অর্থ দুটোই অপচয় হলো, তাদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নিন’।

তিনি বলেন, বাস্তবায়ন করতে গিয়ে যখন কোনো প্রকল্প সংশোধনের প্রস্তাব আসে, তখন সেখানে দুই-একটি নতুন বিষয় যুক্ত হতে দেখা যায়। সেসব যুক্ত করতে গিয়েই যে প্রকল্পের সময় ও ব্যয় বেড়ে যায়, প্রধানমন্ত্রী তা তুলে ধরেন বৈঠকে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাহলে প্রকল্প যখন তৈরি করা হয়, তখন কি এই সকল বিষয় দেখেন নাই? আপনারা কি তাহলে প্রকল্পের সাইটে যান নাই, তাহলে নতুন সেতু কোথা থেকে পাচ্ছেন’?

মান্নান বলেন, তিনি (প্রধানমন্ত্রী) অর্ডার দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে চিহ্নিত করতে। যাদের কারণে প্রকল্পের সময়-ব্যয় বাড়ল, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন। কোনো ব্যক্তির স্বার্থে বাড়ির পাশে ব্রিজ নির্মাণ করা যাবে না, জনগণের প্রয়োজনে ব্রিজ নির্মাণ করতে হবে। সেতু নির্মাণ করার সময় দেখতে হবে যেন নদীর প্রবাহ বাধাগ্রস্ত না হয়। সুতরাং এই প্রকল্পে যারা আছেন, এলজিইডির, তারা সাবধানতা অবলম্বন করবেন।

প্রকল্পের ঠিকাদার নিয়োগের বিষয়েও প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন জানিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, অনেক ছোট ছোট ঠিকাদার আছেন, তাদের কীভাবে যুক্ত করা যায়, সেই বিষয়ে সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আপনারা আইন লঙ্ঘন না করে আইনের প্রতি সম্মান রেখে অন্যান্য ঠিকাদাররা যাতে আসতে পারে, যাতে করে ঠিকাদারি কাজে বৃহদাকারে অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে, আপনারা সেই দিকে নজর দেবেন’।