
ফেনী নদী থেকে ভারত ২০১০ সাল থেকে কোনো প্রকার অনুমতি ছাড়াই আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন লঙ্ঘন করে নদীর ৩৪ স্থানে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন পাম্প মেশিন বসিয়ে পানি উত্তোলন করে যাচ্ছে। নদী থেকে অবৈধ পাম্প অপসারণ এবং সম্প্রতি সম্পন্ন হওয়া চুক্তি মেনে পানি উত্তোলনের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
জানা যায়, খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গার সীমান্তবর্তী ভগবান টিলা থেকে ফেনী নদীর উৎপত্তি। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের আন্তর্জাতিক সীমা রেখা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে নদীটি। সম্প্রতি নয়াদিল্লি সফরে গত ৫ অক্টোবর ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সাব্রুম শহরের বাসিন্দাদের জন্য পানি সরবরাহের জন্য সমঝোতা স্মারক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ নদী থেকে ১ দশমিক ৮২ কিউসেক পানি উত্তোলনের কারণে খোদ নদীটিই বিপর্যয়ের মুখে পড়ার আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন রামগড়-মাটিরাঙা এবং ফেনী জেলার ফরহাদনগর-ফাযিলপুর ইউনিয়নের বাসিন্দারা। এমনিতে পানি চুরি করার কারণে এক দশকে ফেনী নদীর পানি শুকিয়ে অসংখ্য চর জেগে উঠেছে। শুকনো মৌসুমে নদীর করুন পরিণতি হয়। যে দিকে চোখ যায় শুধুই বালুচরই চোখে পড়ে। ফেনীর রামগড়ের মহামুনি এলাকার কৃষকরা অভিযোগ করেন, ফেনী নদী বাংলাদেশের নদী হওয়ার পরও ভারতের বিএসএফ সদস্যরা বাংলাদেশীদের নদীতে নামতে দেয় না। কিন্তু তারা বছরের পর বছর নদী থেকে পানি তুলে নিয়ে যাচ্ছে। আগামী শীত মৌসুমে যখন নদীতে পানি থাকবে না তখন ধানসহ শাক সবজি চাষ করতে পারব না আমরা। পানির অভাবে সেচ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
রামগড়ের মহামুনি সীমান্তে দেখা যায়, আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন লঙ্ঘন করে নোম্যান্স ল্যান্ডের ১৫০ গজের ভেতরে পাম্প হাউস স্থাপন করে ফেনী নদী থেকে পানি উত্তোলন করা হচ্ছে। একইভাবে বাংলাদেশের খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা, রামগড়, চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির ৩৪ টি পয়েন্টে পাম্প মেশিন বসিয়ে পানি তুলছে বলে অভিযোগ ভারতের বিরুদ্ধে।
রামগড় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বিশ^ প্রদীপ কার্বারি বলেন, ভারত যেন অনুমোদিত চুক্তির বাইরে পানি উত্তোলন করতে না পারে সেদিকে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নজর রাখতে হবে।