
সালথা এসিল্যান্ডের কার্যালয় ভাঙচুর করে অগ্নিসংযোগ করা হয়। ছবি: সংগৃহীত
ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় লকডাউন কার্যকর করা নিয়ে পুলিশের সাথে স্থানীয়দের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছে।
গতকাল সোমবার (৫ এপ্রিল) রাতে স্থানীয় একটি বাজারে উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) পরিদর্শনকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত যুবকের নাম জুবায়ের (২২)। তিনি রামকান্তপুর ইউনিয়নের মৃত আশরাফ আলীর ছেলে।
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলীমুজ্জামান একজন নিহত হওয়ার খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে আছে। পুলিশ লাশটি উদ্ধার করতে পারেনি। লাশটি পরিবারের কাছে আছে বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে।
জানা গেছে, করোনা মোকাবিলায় বিধিনিষেধ কার্যকর করতে ফরিদপুরের সালথায় লোকজনকে পেটানো হয়েছে- এমন অভিযোগে গতকাল রাতে থানা ও উপজেলা কমপ্লেক্স ঘেরাও করেন স্থানীয় লোকজন। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী কমিশনারের (ভূমি-এসি ল্যান্ড) গাড়িতে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে স্থানীয়দের সাথে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কয়েক দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় একজন নিহত হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশা বলেন, রাত ৮টা থেকে সাড়ে ৮টার দিকে সালথা থানার এসিল্যান্ড ফোকরা বাজারে গিয়েছিলেন ও সেখানে তিনি একটি মুদি দোকান বন্ধ করতে বলেন। এটা নিয়ে তাদের মধ্যে বাক-বিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে স্থানীয় লোকজন এসিল্যান্ড ও তার সাথে থাকা লোকজনদের ধাওয়া করে। এসিল্যান্ড পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ সেখানে গেলে স্থানীয়দের সাথে সংঘর্ষ হয়।
তিনি বলেন, এ সংঘর্ষে একজন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে পুলিশ সদস্যরা আহত পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করার জন্য গেলে এলাকার লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে পুলিশের ওপর চড়াও হয়। এক পর্যায়ে এখানকার কয়েক হাজার মানুষ সালথা থানা, উপজেলা পরিষদের অফিস ঘেরাও করে। অফিসের ইটপাটকেল ছোড়ে, উপজেলা নির্বাহী অফিসে ঢুকে ভাংচুর করে, দুইটি গাড়িতে আগুন দিয়ে দেয়, সালথা থানার পিছনের দিকে অগ্নিসংযোগ করে।
তিনি আরো বলেন, এক পর্যায়ে সালথা থানার প্রধান ফটক ভেঙে প্রবেশ করার চেষ্টা করলে পুলিশ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঠেকাতে, জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ও আত্মরক্ষার্থে গুলি চালায়। এতে জোবায়ের মোল্লা নামে স্থানীয় একজন নিহত হয় ও রাতেই তার পরিবার তাকে দাফন করে।
এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানায় পুলিশ।
পুলিশের ভাষ্য, গতকাল রাত ১১টা পর্যন্ত সালথায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চলে। সংঘর্ষের ঘটনায় ৭ পুলিশ সদস্যসহ ১০ জন আহত হয়েছেন। পুলিশ ও আনসার সদস্যরা শটগানের ৫৮৮টি গুলি ও ৩২টি কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।