কমলনগরে আশঙ্কাজনকহারে বাড়ছে ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২১, ১৮:২৭

বিশুদ্ধ পানির সংকট ও তীব্র গরমের কারণে হঠাৎ করেই লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এতে করে হাসপাতালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই আশঙ্কাজনকহারে বাড়ছে। গেল এক সপ্তাহে প্রায় ৫০০ জন নারী ও শিশু ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। পর্যাপ্ত শয্যা না থাকায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত এসব রোগীকে ফ্লোরে বিছানা পেতে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও সেবিকাদের।
কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বরাতে জানা যায়, উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা থেকে গেল ১৬ এপ্রিল থেকে ২৩ এপ্রিল দুপুর ১২ টা পর্যন্ত এক সপ্তাহে প্রায় সাড়ে ৪০০ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। শুধু বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুক্রবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ভর্তি হন ৩৩ জন ডায়রিয়া রোগী।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার চরমার্টিন, চরকালকিনি, চরবসু, চরকাদিরা, চরলরেঞ্জ, সাহেবের হাট ও চর জগবন্ধু এলাকায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি। হাসপাতালটিতে শয্যা সংকুলান না হওয়ায় রোগীরা ফ্লোরে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এতে করে একসঙ্গে এতো রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও সেবিকারা। তবে রোগীর চাপ বেড়ে গেলেও ঠিকমতো চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে বলে জানালেন হাসপাতালে কর্তব্যরত সেবিকারা।
এদিকে হাসপাতালটির আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মীর আমিনুল ইসলাম মঞ্জু জানালেন, জনবল ও শয্যা সংকটের মধ্যেও সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিতের চেষ্টা চলছে। তিনি আরো জানান, গরম বেড়ে যাওয়ায় ও ফুড পয়জোনিংয়ের কারণে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। আতঙ্কিত না হয়ে সবাইকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু তাহের পাটোয়ারী বলেন, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পর্যাপ্ত ওষুধ-স্যালাইন সরবরাহ রয়েছে। রোগীর তুলনায় অবকাঠামো ও জনবল সংকটে কিছুটা হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে ডায়রিয়া প্রাদুর্ভাব এড়াতে আপাতত বাইরের খাবার না খাওয়ার পরামর্শ দিলেন এই চিকিৎসক।
কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুজ্জামান জানান, একদিকে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের মহামারি এর মধ্যে এখন আবার ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি সামাল দেয়া চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়িয়েছে। তবে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন প্রয়োজনে সিভিল সার্জনের সাথে কথা বলে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সার্বক্ষণিক হাসপাতালে রাখার উদ্যোগ নেয়া হবে।