Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

সুবর্ণচরে বেড়িবাঁধ সংস্কার না হওয়ায় আতঙ্কে কৃষক

Icon

সুবর্ণচর (নোয়াখালী) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩ মে ২০২১, ১৩:৩৫

সুবর্ণচরে বেড়িবাঁধ সংস্কার না হওয়ায় আতঙ্কে কৃষক

সুবর্ণচরে বেড়িবাঁধ সংস্কার না হওয়ায় আতঙ্কে কৃষক। ছবি : সুবর্ণচর প্রতিনিধি

নোয়াখালীর কৃষি জনপদ নামে খ্যাত উপকূলীয় উপজেলা সুবর্ণচরে বেড়িবাঁধ ভেঙে গত কয়েক বছর যাবৎ বারবার ভুলুয়া নদীর লোনা জোয়ারে প্লাবিত হয়েছে ফসলের মাঠ। বেড়িবাঁধ সংস্কার না হওয়ায় প্রতিবছর রবি মৌসুম ও আমন মৌসুমে জোয়ারের পানিতে নষ্ট হয়ে যায় শত শত একরের উৎপাদিত ফসল। সামনে বর্ষা মৌসুম তাই লোনা জোায়ারের আতঙ্ক এ অঞ্চলের কৃষকের চোখেমুখে।

রামগতি ও সুবর্ণচর উপজেলার পাশে বয়ে গেছে মেঘনার শাখা নদী ভুলুয়া। ভুলুয়া নদীর পূর্ব পাশে সুবর্ণচর উপজেলার চরজুবিলী ইউনিয়নের পশ্চিম সীমানায় নদীর পাড় হয়ে উত্তর-দক্ষিণে রয়েছে বেড়িবাঁধ। ঘুর্ণিঝড় বুলবুলের সময় প্রবল জোয়ারে সুবর্ণচর সীমানায় জুবিলী ইউনিয়নের মধ্যম ব্যাগ্যা গ্রামে বেড়িবাঁধের প্রায় ৮০০ মিটার ভেঙে যায়।

পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রতি বছর লোনা জোয়ারে প্লাবিত হওয়ার পর কৃষকদের দাবির মুখে সংস্কারের কথা বললেও আজও সংস্কার হয়নি ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ। 

সরেজমিনে দেখা যায়, বেড়িবাঁধের উত্তর-দক্ষিণে প্রায় ৭/৮ মিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। জোয়ারের সময় প্লাবিত হচ্ছে ফসলের মাঠ। জোয়ার প্লাবিত এলাকা ঘুরে দেখা যায়, চলতি রবি মৌসুমে মধ্যম ব্যাগ্যা গ্রামের শতশত একর মাঠের ফসল লোনা জোয়ারের পানিতে ডুবে গেছে। নষ্ট হয়ে গেছে পানের বরজ। লোনা পানিতে ভেসে গেছে পুকুরে মাছ। বসত বাড়িতে উঠছে পানি। ফসল ঘরে তুলতে না পারায় প্রায় পরিবারের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ। কারণ বেশিরভাগ কৃষক বিভিন্ন সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে কৃষিকাজ করেছে। বেড়িবাঁধ সংস্কার না করায় কয়েক বছর ধরে এভাবেই চলছে এ অঞ্চলের কৃষক।

জাহানারা বেগম জানান, গত কয়েক বছরের ন্যায় এবারো রবি ফসল ঘরে তুলতে পারিনি। স্থানীয় একটি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে সয়াবিন, মরিচ, ঢেড়স ও ডাল চাষ করেছিলাম। হঠাৎ দুই সপ্তাহ পূর্বে ভরা-কাটালে জোয়ারের পানি ঢুকে ক্ষেতের সব ফসল নষ্ট করে দিয়েছে। ঋণের টাকা কিভাবে শোধ করবো ও কিভাবে সংসার চলবে জানি না। সামনে আসছে বর্ষা মৌসুম, আমরা আমন চাষও করতে পারবো না। 

আক্ষেপ করে বলেন আমাদের দেখার কেউ নেই। বেড়িবাঁধ সংস্কার না করলে আমাদের না খেয়ে মরতে হবে। 

মধ্যম ব্যাগ্যা গ্রামের মো. মনজুর আলম বলেন, বেড়িবাঁধ সংস্কার করার জন্য আমরা বার বার কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেছি, শুধু আশ্বাস মিলে, বেড়িবাঁধ সংস্কার হয় না। প্রতি বছরের মতো এবারো উপজেলা কৃষি অফিস ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরির্দশন করেছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করেছে যদিও অনেক কৃষকের নাম তালিকায় আসেনি। সামনে বর্ষা মৌসুম কৃষকের ক্ষতি পূরণের চেয়ে বেড়িবাঁধ খুবই জরুরি। 

এ বিষয়ে নোয়াখালী পানি উন্নয়ন র্বোডের প্রকৌশলী মো. নাসির উদ্দিন বলেন, বেড়িবাঁধের ভেঙে যাওয়া অংশ সংস্কার করার জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। তবে ঠিকাদার এখনই কাজ করতে রাজি হচ্ছে না। 

এই প্রকৌশলীর দাবি ব্লক না দিলে বেড়িবাঁধ দিয়ে লাভ হবে না; আগামী বর্ষা মৌসুমে আবারো ভেঙে যেতে পারে।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশীদ বলেন, লোনা জোয়ার প্লাবিত এলাকা আমি পরির্দশন করেছি। লোনা জোয়ার ঢুকে কৃষকদের প্রায় ১০০ হেক্টর ফসল নষ্ট হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা নিরূপণ করা হয়েছে। বেড়িবাঁধ সংস্কার করার বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নোয়াখালী প্রকৌশলীর সাথে কথা হয়েছে। তিনি বেড়িবাঁধ সংস্কার করার আশ্বাস দিয়েছেন।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫