Logo
×

Follow Us

বাংলাদেশ

দমাতে পারেনি অক্ষমতা

Icon

জিয়াউস সাদাত

প্রকাশ: ২৫ মে ২০২১, ১৬:৫২

দমাতে পারেনি অক্ষমতা

কৌশিক বাগচি

জন্মের পর সব কিছু ঠিকই ছিল। আর দশ শিশুর মতো দৌড়-ঝাঁপ এবং খেলাধুলাও করেছেন; কিন্তু মাত্র ৬ বছর বয়সে এক দুর্ঘটনা বদলে দেয় জীবনের সবকিছু। সেই দুর্ঘটনায় শরীরের এক পাশ হয়ে যায় অকেজো। এরপর শুরু হয় নানা সংগ্রাম। চিকিৎসার পর শারীরিকভাবে কিছুটা সুস্থ হলেও ডান হাত ও পা অনেকটা অকেজো থেকে যায়। তবে মনোবল হারাননি। নানা প্রতিকূলতাকে পাশ কাটিয়ে শারীরিক প্রতিবন্ধিতাকে জয় করেছেন তিনি। নিজেই হয়েছেন স্বাবলম্বী। শূন্য থেকে শুরু করে এখন তিনি পেয়েছেন শ্রেষ্ঠ সফল মাছচাষির স্বীকৃতি। তিনি হলেন খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার কৌশিক বাগচি। 

শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী কৌশিক বাগচি ডান পা টেনে টেনে হাঁটেন। আর ডান হাতে ভারী ও শক্ত কিছু ধরতে কষ্ট হয় তার। এ অবস্থায় ছোট থেকে নিজেকে স্বাবলম্বী করে তোলার চেষ্টা করেন তিনি। ১৯৯৭ সালে লেখাপড়া চলাকালীন ৬১ শতক জমি লিজ নিয়ে শুরু করেন মাছ চাষ। ধীরে ধীরে গড়ে তোলেন ৭টি মাছের ঘের। এখন তিনি একজন সফল মাছচাষি। চিংড়ি চাষে অভাবনীয় সফলতা তার। এখন তার মাস গেলে আয় হয় প্রায় দেড় লাখ টাকা। এ ছাড়া মাছ চাষের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১২ সালে পেয়েছেন সফল মাছ চাষির পুরস্কার। এখন আর পিছু ফিরে তাকাতে হয় না তার। বরং তিনি অন্যদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছেন। অনেকেই তার কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে মাছ চাষ করছেন।

ডুমুরিয়ার মাছচাষি কৌশিক বাগচি বলেন, ৬ বছর বয়সে আমার একটি দুর্ঘটনা ঘটে। তখন শরীরের এক পাশ প্যারালাইজড হয়ে যায়। দীর্ঘ চিকিৎসার পর কিছুটা সুস্থ হই। আমি লেখাপড়া চালিয়ে যাই। ভাবতে থাকি আমার এই অবস্থায় কেউ আমাকে চাকরি দিবে না। সে কারণে ছোট থেকেই আমি মাছ চাষের স্বপ্ন দেখি। মাছ চাষে সফল হব- এমনটা ভেবেই লেখাপড়া চলাকালে ১৯৯৭ সালে আমি মাছ চাষ শুরু করি। ৬১ শতক জমি লিজ নিয়ে মাছ চাষ শুরু করি। এখন আমার ঘেরের জমির পরিমাণ ১৬ বিঘার মতো। যেখানে ৭টি মাছের ঘের রয়েছে। যার মধ্যে গলদা ঘের ৫টি এবং সেমিইন্টেন্সি বাগদা ঘের ২টি। এর অধিকাংশই আমার নিজের জমি। সামান্য জমি লিজ নেওয়া আছে।

ডুমুরিয়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, কৌশিক বাগচি শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী একজন মাছ চাষি। তিনি একজন শিক্ষিত ব্যক্তি। পড়াশোনা করেও চাকরিতে যেতে পারেননি। তাকে মাছ চাষে আগ্রহী করে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে মাছ চাষে নানা প্রকার কলাকৌশল সম্পর্কে জানাই। তিনি চিংড়ি চাষে আগ্রহী এবং উদ্যোক্তা বলা যায়। গত দুই বছর তিনি চিংড়ি চাষে অভাবনীয় সফলতা লাভ করেন। আমরা গত বছর পুরস্কারের জন্য মৎস্য অধিদপ্তরে তার নাম পাঠিয়েছিলাম। তবে করোনার কারণে হয়নি। এ বছরও তার নাম পাঠানো হয়েছে। এ বছর তিনি মাছ চাষে পুরস্কার পাবেন বলে আশা করছি।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫