খোঁজ মিলছে না নওয়াপাড়া নদীবন্দরের সীমানা পিলারের

গোলাম মোস্তফা মুন্না
প্রকাশ: ২৫ মে ২০২১, ২০:৪৩

যশোর মানচিত্র
যশোরের নওয়াপাড়া নৌবন্দরের অধিকাংশ সীমানা পিলারের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি, ব্যবসায়ী ও দখলবাজদের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে লাইসেন্সপ্রাপ্ত ঘাটের জমি নিয়ে জটিলতা বেড়েই চলেছে। ঘটছে অপ্রীতিকর ঘটনাও।
অবশ্য বন্দর কর্তৃপক্ষকে বলছেন, সীমানা ঠিক করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। শিগগিরই সীমানা নির্ধারণ করে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।
যশোরের অভয়নগর উপজেলার প্রাণকেন্দ্রনওয়াপাড়া। স্থল-নৌপথের অসাধারণ মেলবন্ধনের কারণে ছোট্ট এ উপজেলা শহরটি এখন প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার লেনদেনের একটি শিল্প কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। ব্যবসা বাণিজ্যের ব্যাপক প্রসারে ২০০৪ সালের মে মাসে নওয়াপাড়াকে নদীবন্দর ঘোষণা করে গেজেট পাস করে সরকার। গেজেটে তিনটি দিক উল্লেখ করে মহাকাল শ্মশানঘাট থেকে ভাটপাড়া ফেরিঘাট পর্যন্ত নওয়াপাড়া নদীবন্দরের সীমানা তফসিল ঘোষণা করা হয়।
যেখানে উল্লেখ করা হয়, বন্দরের জমি উত্তর ও দক্ষিণ সীমানার মধ্যে প্রবাহিত ভৈরব নদীর উভয় পাড়ে সাধারণ ভরাকাটাল জোয়ারে প্লাবিত সর্বোচ্চ জলসীমা হতে স্থলভাগের দিকে ৫০ গজ পর্যন্ত বিস্তিত। সে অনুযায়ী নওয়াপাড়া নদী বন্দরের সীমানায় অসংখ্য সীমানা পিলার স্থাপন করে বন্দর এলাকা চিহ্নিত করে বিআইডব্লিউটিএ; কিন্তু কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি, ব্যবসায়ী ও দখলবাজদের কারণে ভৈরব নদের স্থলভাগের সীমানার প্রায় অর্ধেকটা দখল হয়ে গেছে। সেইসঙ্গে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে স্থলভাগে স্থাপিত সীমানা পিলারগুলো।
আর সীমানা পিলার না থাকায় বন্দর কর্তৃপক্ষের লাইসেন্স প্রদানকৃত ঘাটের জায়গা নিয়ে জটিলতা বেড়েই চলেছে। একের পর এক ঘটছে অপ্রীতিকর ঘটনা। সম্প্রতি বিআইডব্লিউটিএ-এর লাইসেন্সকৃত একটি ঘাটের জায়গা নিয়ে নওয়াপাড়ায় দুই গ্রুপ মুখোমুখি অবস্থানে চলে যায়। তাদের মধ্যে যে কোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করেছেন স্থানীয়রা। বুধবার বিতর্কিত ওই স্থানে একটি পক্ষ দেয়াল তুলতে গেলে ঘটনা আরও জটিল আকার ধারণ করে। এ সময় উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয় বলেও স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে।
ঘটনা জেনে নওয়াপাড়া নদীবন্দরের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সীমানা জটিলতা নিরসন হওয়ার আগে ওই স্থানে দেয়াল না তুলতে মৌখিকভাবে নিষেধ করেছেন বলে নওয়াপাড়া নদী বন্দরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
নওয়াপাড়া নদীবন্দরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম বলেন, সীমানা পিলার না থাকায় নানা ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সীমানা পিলার ও সীমানা নির্ধারণের বিষয়ে চিঠি লিখেছি। নতুনভাবে জরিপ চালিয়ে মেপে সীমানা নির্ধাণ করলে জটিলতার অবসান হবে। একইসঙ্গে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।