পকেটে ইয়াবা দিয়ে হয়রানি: ৫ পুলিশ সদস্য বরখাস্ত

প্রতিনিধি, টাঙ্গাইল
প্রকাশ: ২৯ নভেম্বর ২০১৯, ১২:৩৯

পকেটে ইয়াবা ঢুকিয়ে হয়রানির অভিযোগে আটক টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) রিয়াজুল ইসলামসহ চার কনস্টেবলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পুলিশের ওই পাঁচ সদস্য ও দুই সোর্সকে আসামি করে সখিপুর থানায় মাদক আইনে মামলা হয়েছে।
সখিপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আইনুল হক বাদী হয়ে শুক্রবার সকালে সাতজনের নামে মাদক আইনে মামলা করেন। এছাড়া জনতার হাতে গ্রেপ্তারকৃত তিন পুলিশ সদস্য ও এক সোর্সকে পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে পুলিশ সূত্র জানিয়েছেন।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর সখিপুরের হাতিবান্দা ইউনিয়নের হতেয়া ভাতকুড়াচালা গ্রামের ফরহাদ মিয়ার ছেলে বজলুর রহমান তাদের বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ওই সময় বাঁশতৈল ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) রিয়াজুল ইসলামের নেতৃত্বে চার কনস্টেবল ও দুই সোর্স সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে বজলুর পকেটে ইয়াবা ঢুকিয়ে দেয় এবং আটক করে ফাঁড়িতে নিয়ে আসার জন্য রওনা হন। ওই সময় একই এলাকার ইউনুস মিয়ার ছেলে ফরিদ মিয়া ঘটনাটি দেখতে পেয়ে দৌড়ে রাজাবাড়ি আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে এসে স্থানীয় লোকজনকে জানান। পরে স্থানীয় জনতা পুলিশ সদস্যদের সিএনজি চালিত অটোরিকশাটি বেরিকেড দিয়ে থামান। ওই সময় পুলিশ ও জনতার মধ্যে তর্কাতর্কির ঘটনা ঘটে।
জনতা পুলিশ সদস্যদের আটক করে রাজাবাড়ি আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়ে যায় এবং সেখানে তাদের মারপিট করে একটি কক্ষে আটকে রাখে। ওই সময় পুলিশের দুই কনস্টেবল ও এক সোর্স পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। খবর পেয়ে এলাকার শত শত জনতা ঘটনাস্থলে ভিড় জমায়। এই খবর জানতে পেয়ে মির্জাপুর সার্কেল, মির্জাপুর থানা, বাঁশতৈল ফাঁড়ি ও সখিপুর থানা পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে রাত ৯টার দিকে তাদের উদ্ধার করে সখিপুর থানায় নিয়ে যান।
গ্রেপ্তারকৃত পুলিশ সদস্যরা হলেন- মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার গুলরা গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়ির সহকারি উপপরিদর্শক (এএসআই) রিয়াজুল ইসলাম, কনস্টেবল ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার মোজাটি গ্রামের আক্তারুজ্জামানের ছেলে মো. রাসেলুজ্জামান, কিশোরগঞ্জের কটিয়াদি উপজেলার ঢুলদিয়া গ্রামের জীবন সাহার ছেলে গোপাল সাহা, আব্দুল হালিম ও তোজাম্মেল হক। এছাড়া পুলিশের সোর্স মির্জাপুর উপজেলার বাঁশতৈল নয়াপাড়া গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে হাসান মিয়া ও সখিপুরের রাজাবাড়ী গ্রামের আল আমীন।
মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সায়েদুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সখিপুর থানার উপ পরিদর্শক মো. ওমর ফারুক জানান, এক এএসআই ও চার কনস্টেবল এবং দুই সোর্সের বিরুদ্ধে সখিপুর থানায় মাদক আইনে মামলা হয়েছে। মামলা নম্বর ১৬। তাছাড়া জনতার হাতে আটক পুলিশের তিন সদস্য ও এক সোর্সকে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে নেয়া হয়েছে।
সখিপুর থানার ওসি আমীর হোসেন জানান, এ বিষয়ে পুলিশের পাঁচ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা হয়েছে। পলাতক দুই পুলিশ কনস্টেবল ও এক সোর্সকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।