শরীয়তপুরে ছেলে ও তার বউ বৃদ্ধ মা পিটিয়ে পা ভেঙে ফেলেছে।
শরীয়তপুরে জমি লিখে না দেওয়ায় ছেলে ও তার বউ মিলে বৃদ্ধ মা-বাবাকে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে ফেলেছে। বর্তমানে ওই বৃদ্ধ দম্পতি জেলার সদর হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার বিলাশপুর ইউনিয়নের সারেংকান্দি গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বৃদ্ধ দম্পতির নাম একাব্বর মাল (৬০) ও ফুলমতি বেগম (৫০)।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,
একাব্বর-ফুলমতি দম্পতির চার মেয়ে,
দুই ছেলে। বড় ছেলে শরীফ মাল তিন বছর আগে বিয়ে করে আলাদা সংসার বাধেন। গত কয়েকদিন ধরে শরীফ তার নামে জমি লিখে দিতে মা-বাবার উপর চাপ দেন। তবে তার বাবা-মা সেটি করতে অস্বীকৃতি জানায়। এতে প্রায় শরীফ তারা মা-বাবাকে মারধর করত।
ঘটনার দিন ফুলমতির সাথে শরীফের স্ত্রীর কথা কাটাকাটি হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শরীফ তারা মা-বাবাকে পিটিয়ে পা ভেঙে দেয়। শরীফের লাঠির আঘাতে ফুলমতি বেগমের মাথা ফেটে যায়। পরে এলাকাবাসী তাদের উদ্ধার করে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মুনীর আহমেদ খান বলেন,
সার্জারি ওয়ার্ডে ওই দম্পতির চিকিৎসা চলছে। ভারী ও শক্ত কোনো কিছুর আঘাতে তাঁদের পায়ে ফ্যাকসার (ভেঙে গেছে) হয়েছে। প্লাস্টার করা হয়েছে,
সেরে উঠতে কয়েক দিন সময় লাগবে।
সদর হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে একাব্বর মাল বলেন,
‘নিজের সন্তান বাবা-মাকে মারধর করতে পারে?
এভাবে মেরে পা ভেঙে দেবে ভাবতে পারিনি। আমার চাচাতো ভাই মজিদ মাল কারসাজি করে আমাদের জমি নিজের নামে রেকর্ড করে নিয়েছে। এখন আমার ছেলেকে হাত করে বাকি সম্পদ হাতিয়ে নেওয়ার যড়যন্ত্র করছে। এ বিচার আমি কার কাছে চাইব?’
আব্বাস ও ফুলমতি দম্পতির মেয়ে সাবিনা আক্তার বলেন,
‘তিন বছর ধরে ভাই আমাদের জ্বালাতন করেন। তাঁর সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন ভাবি ও আমাদের এক চাচাতো চাচা। তাঁরা আমাদের সব সম্পত্তি গ্রাস করতে মা-বাবাকে মারধর করেন। বাবা-মায়ের পা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এখন আমাদের মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে আমি গত মঙ্গলবার (২০
জুলাই) থানায় অভিযোগ করেছি।’
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন,
মা-বাবকে মারধর করার একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। অভিযুক্তদের ধরতে ওই গ্রামে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। তবে তারা গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছে।