পনের বছর বয়সের এতিম মেয়েটি থাকতো ঢাকার মোহাম্মাদপুরে ফুপুর বাড়িতে। এই লকডাউনের মাঝেই তাকে ভালো বেতনের চাকরি এমনকি মিডিয়া জগতের নায়িকা বানানোর প্রলোভন দেখিয়ে ফরিদপুরে এনে রথখোলা যৌনপল্লীর একটি ঘরে তালাবদ্ধ করে আটকে রাখা হয়েছিল। 

গোপন সূত্রে খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাতে তাকে উদ্ধার করেছে র‌্যাব। এ ঘটনায় ওই ঘরের মালিক আদম কাজীকে (৫০) আটক করা হয়েছে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে র‌্যাব-৮, সিপিসি-২, ফরিদপুর ক্যাম্পের কোম্পানী অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ আবদুর রহমান এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, আদম কাজী মানবপাচারকারী চক্রের একজন সক্রিয় সদস্য। সদর উপজেলার পূর্ব গঙ্গাবর্দী গ্রামের মৃত ইমাম কাজীর ছেলে তিনি।

র‌্যাব-৮, সিপিসি-২, ফরিদপুর ক্যাম্পের গোয়েন্দা তথ্যমতে, দীর্ঘদিন ধরে মানব পাচারকারী দলের সদস্য আদম কাজী বিভিন্ন জেলা থেকে সহজ-সরল মেয়েদের ভালো বেতনের চাকরি দেয়াসহ টিকটক ভিডিও মডেল বানানোর প্রলোভন দেখিয়ে ফরিদপুর যৌনপল্লীসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে আসছে। ফরিদপুরের রথখোলায় গড়ে ওঠা বৃহত্তর এই যৌনপল্লীতে একটি দোতলা বাসা রয়েছে তার। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অপ্রাপ্তবয়স্কা মেয়েদের নানা কায়দায় এখানে এনে কাউকে অন্যত্র বিক্রি করে দেয়া হয়, কাউকে দেশের বাইরে পাচার করা হয়। কাউকে তার যৌনপল্লীর বাসায় রেখে দেহ ব্যবসা করায়।

মঙ্গলবার রাতে উদ্ধার হওয়া মেয়েটিকে দুইদিন আগে ঢাকা থেকে ফুঁসলিয়ে এনে তালাবদ্ধ ঘরে করে আটকে রাখার খবর পেয়ে কোম্পানী অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ আবদুর রহমান এবং স্কোয়াড অধিনায়ক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. খোরশেদ আলমের নেতৃত্বে সেখানে অভিযান চালানো হয়। মেয়েটিকে বিক্রির জন্য সেখানে আটকে রাখা হয়েছিল বলে র‌্যাব জানিয়েছে।

আটক আদম কাজীর বিরুদ্ধে মানবপাচার আইনে মামলা হয়েছে। তাকে কোতয়ালী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। অপরদিকে মেয়েটিকে নারী পুলিশের হেফাজতে পাঠানো হয়।